চট্টগ্রামের রাউজানে চাঁদার টাকা না পেয়ে ডিশ ব্যবসায়ীর বাড়িতে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ফয়েজের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম গহিরা গ্রামে আবদুল হালিমের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, অল্প কিছু টাকা দিয়ে ফয়েজকে ম্যানেজ করে আসছিলাম। কিন্তু গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ৫ লাখ টাকা না দিলে ব্যবসা বন্ধ করার হুমকি দেন। প্রায়ই তাঁর লোকজন টাকার জন্য চাপ দেন। বাড়িতে এসে ঝামেলা করেন।

তিনি জানান, এ ঘটনায় ২১ মে যুবদল নেতা ফয়েজকে প্রধান আসামি করে মো.

রাশেদ, মো. জসিম, মো. রাশেদ-২ ও মো. মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে রাউজান থানায় মামলা করেন তাঁর স্ত্রী সুমি আকতার। মামলার জেরে আগে দু’বার এবং সর্বশেষ শনিবার রাতে ফয়েজ লোকজন নিয়ে বাড়ি লক্ষ্য করে গোলাগুলির মাধ্যমে আতঙ্ক তৈরি করেন।

আবদুল হালিমের প্রতিবেশী রবি আকতার জানান, রাতে কয়েকজন এসে গুলি ছুড়ে চলে যায়। শব্দ পেয়ে রাস্তায় বের হলে তাদের আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যায়িত করে গালাগাল করে ফয়েজ ও তাঁর লোকজন।

অভিযোগের বিষয়ে মো. ফয়েজ বলেন, ‘চাঁদাবাজির অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আবদুল হালিম আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর আলমগীর আলীর সহযোগী। তিনি মাদক কারবারে জড়িত। আওয়ামী লীগের দোসরকে এলাকা থেকে চলে যাওয়ার জন্য আমরা চাপ দিয়েছি।’

আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে আবদুল হালিম বলেন, ‘আমি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। বিএনপি করার কারণে বিগত আওয়ামী লীগের আমলে আমার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা হয়েছে। চাঁদা না দেওয়ায় যুবদল নেতা ফয়েজ এখন আমাকেই আওয়ামী লীগের দোসর বানাচ্ছেন। পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। ভয়ে আমরা ১৭ দিন ঘরে থেকে বের হতে পারছি না।’

রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, বাড়ি লক্ষ্য করে গুলির ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। তবে যুবদল নেতা ফয়েজের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। তদন্ত শেষে আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেব।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য বদল ন ত ব যবস য় আবদ ল হ ল ম য বদল ন ত আওয় ম ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

খানাখন্দে ভরা সড়কে বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি৷

সড়কে খানাখন্দ। কোথাও পিচঢালাই আছে, কোথাও নেই। বৃষ্টিতে পানি-কাদায় একাকার। দিন দিন এসব খানাখন্দ বড় আকার ধারণ করছে। তাতে প্রতিদিন উল্টে পড়ছে যানবাহন। আহত হচ্ছেন যাত্রীরা। কাদাপানি ছিটকে কাপড়চোপড় নষ্ট হচ্ছে। এমন দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছে মানুষ।

এ চিত্র ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার অংশের। স্থানীয় ব্যক্তিরা সড়কটি সংস্কারে বারবার দাবি জানালেও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কয়েকদিনের টানা বর্ষণে মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে সড়কটি।

সরেজমিন দেখা যায়, ফরিদপুর সদরের বাখুন্ডা, নগরকান্দা উপজেলার মহিলা রোড, তালমা ও পুখুরিয়া এলাকার সড়কের বেশি নাজুক অবস্থা। গাড়ি চালানোর কোনো উপায় নেই। রাস্তা গর্তে ভরা।  গর্তে চাকা পড়ে প্রায়ই বিকল হয় যানবাহন। এর পরও বিকল্প না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই চলছে বাস, ট্রাক, লরি, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত যানবাহনসহ থ্রি-হুইলার।

শনিবার ঢাকা থেকে রোগী নিয়ে ফরিদপুরে এসেছিলেন অ্যাম্বুলেন্স চালক কাশেম বেপারী। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ভাঙ্গা থেকে ফরিদপুর আসতে দেড় ঘণ্টা সময় লেগে গেছে। রাস্তা এমনই বেহাল যে, ঝাঁকুনিতে রোগী আরও অসুস্থ পড়ে। বড় বড় গর্ত বৃষ্টির কারণে চোখে পড়ে না। রাতের বেলা গাড়ি চালাতে ভয় লাগে।

একই দিন নগরকান্দার মহিলা রোড এলাকায় দেখা যায় মালবাহী একটি লরি বিকল হয়ে পড়ে আছে। লরিটির সামনের দুটি চাকা পুরোপুরি নষ্ট। গাড়িটি বগুড়া থেকে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল।

চালক আকবর হোসনে বলেন,  রাস্তার জঘন্য অবস্থা। গাড়ি চালানোর কোনো কায়দা নেই। গর্তে পড়ে ঝাঁকুনি খেয়ে গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে। মিস্ত্রি আসবে, তারপর গাড়ি ঠিক করা হবে। এতে  ৩০ হাজার টাকা লেগে যাবে। দুপুরে আরও একটি অটোরিকশা উল্টে কয়েকজন যাত্রী আহত হন।

স্থানীয় বাসিন্দা  ফয়েজুল বারী জানান, এই এলাকায় প্রতিদিন অটোরিকশা উল্টে যাচ্ছে। তিনি দ্রুত রাস্তা সংস্কারসহ চার লেনের দাবি জানান।

সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার সড়কটির সংস্কারের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯ কোটি টাকা। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সংস্কারকাজ শুরু করা হয়নি। বাখুন্ডা এলাকায় ইট-বালু দিয়ে গর্ত ভরাট করতে দেখা যায় সড়ক বিভাগকে।

সড়কটি সংস্কারের পাশাপাশি দ্রুত চার লেনে করার দাবিতে সরব হয়ে উঠেছে জেলার সর্বস্তরের মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে সপক্ষে প্রচারণা। ‘ফরিদপুর-ভাঙ্গা মহাসড়ক চার লেন দ্রুত বাস্তবায়ন’ নামে একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির পক্ষ থেকে মানববন্ধন, সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ১৩ জুলাই রোববার বেলা ১১টায় ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ ফরিদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ সাইফুল্লাহ সরদার বলেন, দুটি প্যাকেজের আওতায় সড়ক মেরামতের জন্য ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তবে জরুরি ভিত্তিতে সড়কের খানাখন্দ ভরাটের কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ৩২ কিলোমিটারের এই মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ