সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবিতে টানা চতুর্থ দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা। এই উত্তাল পরিস্থিতিতে সরকার আজ মঙ্গলবার দুপুরে আন্দোলনরত কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে। একইসঙ্গে অধ্যাদেশটি পর্যালোচনার জন্য ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহেরকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হবে। কমিটিতে সরকারের সাতজন গুরুত্বপূর্ণ সচিব এবং আন্দোলনরত কর্মচারীদের পক্ষ থেকে তিনজন প্রতিনিধি রাখা হবে।

সকালে সচিবালয়ে এক জরুরি বৈঠক করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ, যেখানে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকেই অধ্যাদেশটি পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সূত্র জানায়, সরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যেই আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতার পথ খুঁজে বের করতে চাচ্ছে।

এদিকে, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ আজ দুপুর আড়াইটায় আন্দোলনরত কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বৈঠকে আরও সাতজন সচিবের উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি মো.

নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘ভূমি সচিবের ডাকে আমরা বৈঠকে যাচ্ছি। ফলাফল দেখে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করব। আন্দোলন অব্যাহত থাকবে কি না সেটা তখন জানাবো।’’

অন্যদিকে সংযুক্ত পরিষদের আরেক অংশের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর বলেন, ‘‘যদি আলোচনায় কোনো ইতিবাচক অগ্রগতি হয়, তাহলে আমরা আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে পারি।’’

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সচিবালয়ের সব সংগঠন একত্রিত হয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। ‘অধ্যাদেশ বাতিল করো’, ‘সরকারি কর্মচারীদের অপমান চলবে না’ স্লোগানে মুখর ছিল সচিবালয় এলাকা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সচিবালয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।

সচিবালয়ে প্রবেশে সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও, দুপুর ১টা পর্যন্ত সাংবাদিকরাও ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। যদিও সাংবাদিক প্রবেশে আনুষ্ঠানিক কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না।

ঢাকা/এএএম//

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মন ত র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখান করে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশন (বাহা) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অনুষদের যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন অনুষদটির শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিয়ে চলমান যৌক্তিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অনুষদের শিক্ষার্থীদের কতিপয় বিপথগামী বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই অনুষদের শিক্ষার্থীরা বিকেলে অনুষদীয় চত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা করেন।

এর আগে, বেলা ১১টার দিকে বাকৃবি শিক্ষক কমপ্লেক্সে বাহা’র নেতৃবৃন্দ ও অনুষদের ডিনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অনুষদের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ক্লাস-পরীক্ষাসহ অনুষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্ন ঘটার অভিযোগ তুলে মতামত দেন।

আরো পড়ুন:

গোবিপ্রবিতে ২ বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, প্রক্টর-প্রাধ্যক্ষসহ আহত ১৫

ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে বিদায়

আলোচনা সভা শেষে বাহা ও ওই অনুষদ একটি যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন। যেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের এহেন কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন ও শান্তি-শৃঙ্খলা পরিপন্থি। এই কার্যক্রমে অনুষদের সব শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নেই। অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্রফেশনকে নিশ্চিহ্ন ও হেয় করতে একটি বিশেষ মহলের প্ররোচনায় কতিপয় বিপথগামী শিক্ষার্থী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপচেষ্টায় লিপ্ত।

বিবৃতিতে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানানো হয় এবং প্রফেশনের বিরাজমান সমস্যাগুলো সমাধানে আশু পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্বান্ত গৃহীত হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা এই বিবৃতির তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আজকের সমাবেশে পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা সর্বসম্মতভাবে বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল হাসবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশনকে বয়কটের ঘোষণা দিচ্ছে। আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে।

এ বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী শিবলী বলেন, “আমরা পশুপালন অনুষদের বিভিন্ন লেভেলের কয়েক’শ গত ১ সপ্তাহ ধরে আমাদের যৌক্তিক দাবি কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে যাচ্ছি। যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করলে যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপদগামী বলে সম্বোধন করছেন, তাদের আমরা এ অনুষদ চত্বর থেকে লালকার্ড দেখাই। কোনো বিবৃতি বা হুমকি দিয়ে এই যৌক্তিক আন্দোলনকে থামানো যাবে না।”

আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী হিমেল বলেন, “বাকৃবিতে চলমান যৌক্তিক কম্বাইন্ড ডিগ্রি আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বাহা’র মহাসচিব ক্যাম্পাসে উপস্থিত হন। আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণ করা হলেও, তার পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর সাড়া পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে এক বিবৃতিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিপথগামী বলা হয়। এছাড়া আমাদের সম্মিলিত আন্দোলনকে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর আন্দোলন হিসেবে দেখানোর অপচেষ্টা করা হয়, যা মিথ্যা, অপমানজনক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখান করে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা শিক্ষার্থীদের