ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলায় আটক দুজনের মুক্তি দাবিতে আড়াই ঘণ্টা থানা ঘেরাও
Published: 29th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় আটক দুই ব্যক্তির মুক্তি দাবিতে চট্টগ্রামে কয়েক ঘণ্টা থানা ঘেরাও করেছে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’। বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে নগরের কোতোয়ালি থানার সামনে অবস্থান নেন তাঁরা। রাত ১১টা পর্যন্ত তাঁরা সেখানে অবস্থান করেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে চলে যান তাঁরা।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাসের প্রতিবাদে বুধবার বিকেলে কর্মসূচি ঘোষণা করে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। কর্মসূচি শুরুর পরপর সেখানে মিছিল নিয়ে আসে শাহবাগবিরোধী ঐক্য। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। এ সময় শাহবাগবিরোধী ঐক্যের লোকজন ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালান। এতে ১২ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। তাঁরা হলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নগর সভাপতি রিপা মজুমদার, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত বিশ্বাস ও অর্থ সম্পাদক সুদীপ্ত গুহ।
এ হামলার সময় ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। এ ঘটনার জেরে এশার নামাজের পর কর্মসূচি ঘোষণা করে শাহবাগবিরোধী ঐক্য। তবে ব্যানারে তাঁদের নাম ইংরেজিতে ‘অ্যান্টি-শাহবাগ মুভমেন্ট’ লেখা ছিল। ব্যানারে তাঁদের দাবি ছিল, ‘বাংলাদেশের ভূমিসন্তান আমজনতার বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, সাম্রাজ্যবাদের মদদপুষ্ট গোষ্ঠী লাল সন্ত্রাসী বাম-সেকুলার-শাহবাগীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এশার নামাজের পর মিছিল নিয়ে ৭০-৮০ জন নগরের আন্দরকিল্লা মোড় থেকে লালদীঘি মোড় হয়ে কোতোয়ালি থানার দিকে যান। সেখানে তাঁরা আটক দুজনের মুক্তিসহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেন। মিছিলের একটি অংশ সরে গেলেও আরেকটি অংশ সেখানে রাত ১১টা পর্যন্ত অবস্থান করে। এ সময় থানার গেট লাগিয়ে দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে মিছিলে থাকা জুলাই ঐক্য চট্টগ্রামের প্রধান সমন্বয়কারী আবরার হাসান বলেন, ‘আমরা মিছিল নিয়ে থানা প্রাঙ্গণে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর কয়েকজন সমন্বয়ক থানার ভেতরে যান কথা বলতে। আমরা তখনই সবাইকে সরে যেতে বলি। তবে একটি অংশ সেখানে ছিল। পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা হওয়ার পর সেখান থেকে চলে আসি আমরা।’
আটক দুজনের পরিচয় জানতে চাইলে আবরার হাসান জানান, তাঁদের একজন বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ওবায়দুর রহমান। আরেকজন মো.
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। রাত সোয়া ১১টার দিকে থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা (ডিউটি অফিসার) মো. বাহার প্রথম আলোকে বলেন, ৫-১০ মিনিট আগে আন্দোলনকারীরা থানা প্রাঙ্গণ থেকে সরে গেছেন।
এদিকে হামলার পর প্রেসক্লাবে চত্বরে নেতা-কর্মীরা জড়ো হলে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতা–কর্মীদের দেখা যায়। তবে সেখানে শিবিরের কেউ ছিলেন না বলে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি মো. তানজীর হোসেন ও সেক্রেটারি মুমিনুল হক।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত অবস থ ন র কর ম শ হব গ আটক দ
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু সুরক্ষায় ধূমপান নিষিদ্ধ করতে চলেছে ফ্রান্স
শিশুদের সুরক্ষার জন্য খোলা জায়গায় ধূমপান নিষিদ্ধ করতে চলেছে ইউরোপের দেশ ফ্রান্স। নতুন এই পদক্ষেপের অধীনে দেশটিতে সমুদ্র সৈকত, স্কুলের আশপাশ ও পার্কসহ খোলা জায়গায় ধূমপান নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ফ্রান্স সরকার ঘোষণা করেছে, আগামী ১ জুলাই থেকে পার্ক, সমুদ্র সৈকত, স্কুলের আশপাশ, বাসস্টপ, খেলাধুলার মাঠসহ সব ধরনের খোলা জায়গায় ধূমপান নিষিদ্ধ করা হবে—যেসব স্থানে শিশুদের যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ক্যাথরিন ভাত্রাঁ এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, “যেখানে শিশু আছে, সেখানে তামাকের কোনও স্থান নেই। ধূমপানের স্বাধীনতা শেষ হওয়া উচিত, যেখানে শিশুরা মুক্তভাবে নিশ্বাস নেওয়ার অধিকার রাখে।”
যেসব স্থানে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে তার মধ্যে সমুদ্র সৈকত, পার্ক ও জনউদ্যান, স্কুলের বাইরের অংশ, বাসস্টপ ও খেলাধুলার মাঠ ও ভেন্যুও রয়েছে। তবে ক্যাফে ও তেরাস বা বারের বাইরের বসার জায়গা—এই নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে।
কার্যকর হতে যাওয়া এই নিয়ম ভাঙলে ১৩৫ ইউরো (প্রায় ১৫৩ ডলার) জরিমানা দিতে হবে। এছাড়া এই নিয়ম কার্যকর করতে সাধারণ পুলিশ বাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, তবে মন্ত্রী আশা করছেন, মানুষ নিজেরাও নিয়ম মেনে চলবে।
অবশ্য এই নিষেধাজ্ঞা ইলেকট্রনিক সিগারেটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তবে মন্ত্রী জানান, তিনি ই-সিগারেটে থাকা নিকোটিনের মাত্রা সীমিত করার জন্যও কাজ করছেন।
বিবিসি বলছে, ফ্রান্সে ধূমপানবিরোধী প্রচার নতুন নয়। ২০০৮ সাল থেকে দেশটিতে রেস্তোরাঁ, নাইটক্লাবসহ অভ্যন্তরীণ জায়গায় ধূমপান নিষিদ্ধ। তবে বহুদিন ধরেই সৈকত ও পার্কে ধূমপান নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা থাকলেও আইনগত আদেশ না থাকায় তা বাস্তবায়ন হয়নি।
তবে ইতোমধ্যেই দেড় হাজারেরও বেশি পৌরসভা স্বেচ্ছায় এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে। এমনকি ফ্রান্সের শত শত সৈকতও ধূমপানমুক্ত হয়েছে গত কয়েক বছরে।