যে শাহবাগ থেকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের দাবি জানানো হয়েছিল, সেখানে দলটির নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে সংবর্ধনা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফাঁসির সাজা পাওয়া আজহার আপিল বিভাগ থেকে খালাস পেয়ে বলেছেন, গলায় রশির পরিবর্তে ফুলের মালা পাচ্ছি। 
আগের দিন সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পর গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন এটিএম আজহার মুক্তি পান। ২০১৪ সালে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর প্রায় ১০ বছর ফাঁসির আসামির কনডেম সেলে ছিলেন। ৫ আগস্টের পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল মুক্তি পেয়ে শাহবাগ মোড়ে সংবর্ধনা মঞ্চে যান তিনি।
এ কারণে অফিস শুরুর সময়ে শাহবাগে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কর্মদিবসে শাহবাগ মোড় বন্ধ হওয়ায় আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট এবং জনদুর্ভোগ হয়। সংবর্ধনা শেষে শাহবাগ থেকে হাজারো নেতাকর্মী, গাড়িবহরসহ মগবাজারে জামায়াত কার্যালয়ে যান দলটির সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল। এতে ওইসব সড়কেও যান চলাচল বিঘ্নিত হয়ে ভোগান্তি হয়। 
শাহবাগে আজহারের সংবর্ধনা মঞ্চে ছিলেন জামায়াতের আমির ডা.

শফিকুর রহমান, নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রমুখ। তারা এটিএম আজহারকে ফুল দিয়ে বরণ করেন। 
২০১১ সালের ২২ আগস্ট গ্রেপ্তারের পর প্রায় ১৪ বছর কারাগারে থাকা এটিএম আজহার বলেন, অতীতে আদালতকে ব্যবহার করা হয়েছে। এখন আদালত জনগণের আশার প্রতীক হয়ে উঠেছে। যাদের কারণে মুক্তি পেয়েছি, সেই ৫ আগস্টের মহাবিপ্লবী নায়কদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। ছাত্রসমাজই রাজপথে রক্ত ঢেলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়েছে। 
তিনি বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অতীতে দণ্ডিত জামায়াত এবং বিএনপি নেতাদের জুডিশিয়াল কিলিং করা হয়েছে। যারাই এসব হত্যায় যেখানে যে পর্যায়ে জড়িত, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। 
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতের নেতৃত্বে নয়, ১৮ কোটি মানুষের সম্মিলিত চেষ্টায় স্বৈরাচার পতন হয়েছে। জাতির প্রয়োজনে এক থাকতে হবে। 
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পুত্র মাসুদ সাঈদী, মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে নাজিবুর রহমান মোমেন, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ছেলে আলী আহমাদ মাবরুর, আবদুল কাদের মোল্লার ছেলে হাসান জামিলও সংবর্ধনা মঞ্চে ছিলেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র রহম ন শ হব গ অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান দিয়ে উড়োজাহাজে গ্রেপ্তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পতন চেয়ে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাজ্যে ৪১ বছর বয়সী এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত রোববার লন্ডনের লুটন বিমানবন্দর থেকে গ্লাসগোগামী একটি ফ্লাইটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি লন্ডনের কাছে বেডফোর্ডশায়ারের লুটন শহরের বাসিন্দা।

অভয় নায়েক ইজিজেট ফ্লাইটে হামলা ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার মতো আচরণ করেছেন। তিনি উড়োজাহাজে বোমা ফাটানোর হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি মাঝ আকাশে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্লোগান দিয়ে চিৎকার করেছিলেন, যা যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।

ওই ঘটনার একটি ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, অভয় নায়েক স্লোগান দিচ্ছেন, ‘আমেরিকার পতন হোক’, ‘ট্রাম্পের পতন হোক’। এরপরই তিনি ‘আল্লাহু আকবর’ (যার অর্থ ‘আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ’) বলে স্লোগান দেন। পরে দুজন ব্যক্তি তাঁকে কাবু করে উড়োজাহাজের মেঝেতে ফেলে দেন।

ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি কোন ধর্মের অনুসারী, সে ব্যাপারে তাৎক্ষিণক কিছু জানা যায়নি।

ওই ব্যক্তির এমন আচরণের পর পাইলটরা বাধ্য হয়ে গ্লাসগোতে জরুরি অবতরণ করেন। সেখানেই স্কটিশ পুলিশ এসে অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করে।

স্কটল্যান্ডের পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘গত রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে গ্লাসগোতে পৌঁছানো ইজিজেটের একটি ফ্লাইটে এক ব্যক্তি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন এমন খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, ঘটনাটি এককভাবে ওই ব্যক্তির, অন্য কেউ জড়িত নন। যেসব ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়েছে, সেগুলো সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন।’

উড়োজাহাজ অবতরণের পরই অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।

ইজিজেট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বেপরোয়া আচরণের কারণে একজন যাত্রীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে তদন্তে সহযোগিতা করছি।’

পাইসলি শেরিফ আদালতে হাজিরার সময় অভয় নায়েক কোনো বক্তব্য দেননি। তাঁকে বিচারিক হেফাজতে পাঠানো হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে তাঁকে আবার আদালতে হাজির করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ