বৃষ্টিপাতে হোটেলে আটকা পড়েছেন কুয়াকাটায় আগত পর্যটক
Published: 29th, May 2025 GMT
বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে পটুয়াখালী কুয়াকাটায় মুষলধারে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। অনবরত বৃষ্টির কারণে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা হোটেলে আটকা পড়েছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ভারী বৃষ্টিপাত এবং ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে সৈকতে বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে সমুদ্র তটে। এ কারণে অনেকটা পর্যটক শূন্য রয়েছে কুয়াকাটা সৈকত। খাবার হোটেলসহ অধিকাংশ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রয়েছে। তাই পর্যটকরা হোটেলে অবস্থান করছেন।
বুধবার সকাল ৯ টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত কুয়াকাটা কলাপাড়ায় ১১৪.
এদিকে অনেক খাবার হোটেল বন্ধ ও বারবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে অনেক পর্যটকই বিরক্ত।
ঢাকার মিরপুর থেকে থেকে আসা পর্যটক মোসলেম উদ্দীন বলেন, ‘‘আমরা চার বন্ধু কুয়াকাটায় বেড়াতে এসেছি। বৃষ্টির কারণে বারবার বিদ্যুৎ যাচ্ছে। এছাড়া গতকাল রাতে যে হোটেলে খাবার খেয়েছি সকাল থেকে সে হোটেল বন্ধ। অন্য হোটেলে গিয়ে নাস্তা সারতে হয়েছে। আবার সৈকতের আবহাওয়া বিক্ষুব্ধ। এ অবস্থায় আমাদের ট্যুরের পরিকল্পনাও ভেস্তে গেছে। বৈরী আবহাওয়ায় দিনের বেলায় কিছুটা চলাচল করতে পারলেও রাতে তা মোটেই সম্ভব নয়।’’
পিরোজপুর থেকে আসা পর্যটক ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘‘কুয়াকাটায় সমুদ্রের ঢেউয়ে সাঁতার কাটতে এবং সন্ধ্যা পরবর্তী সময়ে বিচে বসে ফিস ফ্রাই খাওয়ার জন্য এসেছি। কিন্তু অতিবৃষ্টির কারণে হোটেল থেকে বের হতেই পারছিনা। আমাদের ট্যুরে আসার আনন্দটাই মাটি হয়ে গেছে।’’
হোটেল ফ্রেন্ড পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ সুমন বলেন, ‘‘বর্তমানে কুয়াকাটায় পর্যটকের তেমন বেশি চাপ নাই। আর যারা রয়েছেন এই মুহূর্তে তারা অতিবৃষ্টির কারণে হোটেলে অবস্থান করছেন।’’
টুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের পুলিশ পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ‘‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে কুয়াকাটায় পর্যটকদের উপস্থিতি কিছুটা কম এবং যারাও রয়েছেন তারাও হোটেলে অবস্থান নিয়ে আছেন। তবে আমাদের টিম মাঠে কাজ করছে।’’
ঢাকা/ইমরান/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে।
যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।
বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে।
রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”
তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।
শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’
ঢাকা/শহিদুল/এস