ছাত্রশিবিরের উদ্দেশ্যে বামপন্থিদের উস্কানিমূলক স্লোগানের প্রতিবাদ ও ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অপতৎপরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা।

বুধবার (২৯ মে) এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তারা।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক ও সহাবস্থানের রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঢাবিতে সব ছাত্র সংগঠন তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম বাধাহীনভাবে পরিচালনা করতে পারছে। এর মধ্যে ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীসহ সবার দীর্ঘদিনের দাবি—ডাকসু নির্বাচনের প্রক্রিয়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

আরো পড়ুন:

ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের দুয়োধ্বনির শিকার বামপন্থীরা 

ঢাবিতে প্রকাশ্যে এল ইসলামী ছাত্রীসংস্থা

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, গত দুইদিন ধরে আমরা দেখতে পাচ্ছি, তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক মামলা থেকে ঢাবি শাখা ছাত্রশিবিরের প্রথম সভাপতি এটিএম আজহারের বেকসুর খালাস পাওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী সংগঠনগুলো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে সবার যেকোনো বিষয়ে বিক্ষোভ করার কিংবা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তব্য প্রদানের অধিকার রয়েছে। ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখা এই গণতান্ত্রিক নীতির প্রতি সবসময় শ্রদ্ধাশীল।

যৌথ বিবৃতিতে ঢাবি শাখার সভাপতি এসএম ফরহাদ ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দীন খান বলেন, বামপন্থিদের এই বিক্ষোভ থেকে ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে পুরোনো, পতিত ফ্যাসিবাদের স্লোগান প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। অতীতে স্বৈরাচারী হাসিনার আমলে যেসব স্লোগান ও রেটরিক ব্যবহার করে ছাত্রশিবিরকে অমানবিকীকরণ করে হত্যার বৈধতা উৎপাদন করা হয়েছিল, তারই পুনরাবৃত্তি করা হচ্ছে।

বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত বামপন্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে ‘বাঁশের লাঠি মিছিল হবে, শিবির তোমার মৃত্যু হবে’—এমন সন্ত্রাসী স্লোগানও দিতে দেখা গিয়েছে। এই স্লোগানের মধ্য দিয়ে বামপন্থিদের মধ্যে থাকা ছাত্রশিবিরকে হত্যার সুপ্ত হীন জিঘাংসা প্রতিফলিত হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, নতুন বাংলাদেশে ক্যাম্পাসে এ হত্যা ও সন্ত্রাসের রাজনীতির পুনরাবৃত্তির অপচেষ্টাকে শিক্ষার্থীরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে। গত মঙ্গলবার ও বুধবার রাতে বামপন্থিদের মশাল মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া এলাকায় গেলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে দুয়োধ্বনি দিয়ে তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই প্রতিবাদ এবং যেকোনো যৌক্তিক প্রতিরোধকে ‘শিবির’ ট্যাগ দিয়ে শিক্ষার্থীদের হত্যাযোগ্য করার এই ফ্যাসিবাদী ধারা সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

শিবির নেতারা বলেন, আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বামপন্থীদের এই বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিভিন্ন ধরনের উসকানি দেওয়া হচ্ছে। দুঃখজনক বিষয় হলো, বামপন্থিদের এই মিছিলে দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামের অন্যতম সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের ঢাবি শাখার কয়েকজন নেতাকর্মীকে অংশ নিতে দেখা গেছে, যারা উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা বলতে চাই, বামপন্থীদের চলমান বিক্ষোভ থেকে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক ও সহাবস্থানের পরিবেশ নষ্ট করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই সংগঠনগুলোর গ্রহণযোগ্যতা ও সমর্থন না থাকায় তারা সবসময় ডাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অনীহা প্রকাশ করে এসেছে। আমরা চলমান উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি—আসন্ন ডাকসু নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করছি। ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চলমান অগ্রগতি থামিয়ে দিতে এই ধরনের অপচেষ্টাকে শিক্ষার্থীরা ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করছে।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ব মপন থ দ র গণত ন ত র ক থ দ র এই র র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

তিন সংগঠনের বিবৃতি: ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের’ ব্যানারে রাজশাহী-চট্টগ্রামে ছাত্রশিবির হামলা করেছে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের মশালমিছিল ও সমাবেশে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের’ ব্যানারে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে তিন সংগঠন।

পৃথক স্থানে হওয়া এসব হামলার ঘটনায় আজ বুধবার উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। বিবৃতিতে সংগঠনগুলোর নেতারা হামলার নিন্দা, যুদ্ধাপরাধী ও তাদের দল-গোষ্ঠীর বিচার দাবি করেছেন।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাসের প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের মশালমিছিলে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে’ ছাত্রশিবিরের নেতা–কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। আজ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের মিছিলে হামলায় অন্তত ১২ জন আহত হন। এ সময় ছাত্র জোটের ব্যানার কেড়ে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। সেখানেও ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যর’ ব্যানারে এই হামলা চালানো হয়। এতে ছাত্রশিবিরের কর্মী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতা–কর্মীদের দেখা গেছে।

আজ দেওয়া বিবৃতিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট বলেছে, ছাত্রজোটের মশালমিছিল হামলার ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের খালাসের রায়ে দেশের মানুষ হতাশ ও বিক্ষুব্ধ হয়েছেও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। বলা হয়, শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তা চাইলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেটা প্রত্যাখ্যান করে। বিবৃতিতে বাম জোট বলে, অন্তর্বর্তী সরকার শুরু থেকেই স্বাধীনতাবিরোধী উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মদদ ও উসকানি দিয়ে আসছে।

ছাত্র জোটের ওপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। এই হামলাকে শিক্ষাঙ্গনে অগণতান্ত্রিক শক্তির পুনর্বাসন, সহিংস রাজনীতির বিস্তার ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চেতনার প্রকাশ বলে মনে করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

ছাত্রজোটের ওপর হামলাকে মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, অবিলম্বে ধর্মান্ধ ও যুদ্ধাপরাধী চেতনার পুনর্বাসন বন্ধ করতে হবে।

আরও পড়ুনচট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’র হামলা, আহত ১২২ ঘণ্টা আগেগণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচির ব্যানার কেড়ে নিয়ে পোড়ানো হয়। আজ বিকেলে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে: গয়েশ্বর
  • আফ্রিকাকে আমি সবসময় ধারণ করেছি বুকের ভিতরে
  • নৃশংস ও নিন্দনীয়
  • ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের পরিবেশ বিনষ্ট করছে বামপন্থিরা: ঢাবি শিবির
  • যত দিন হাসিনা ভারতে থাকবে, তত দিন সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না: সারজিস
  • বামপন্থীরা ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু ও সহাবস্থানের পরিবেশ নষ্ট করার অপচেষ্টা করছে: ঢাবি ছাত্রশিবির
  • পশুর হাটে চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধীর দুই নেতা গ্রেপ্তার
  • তিন সংগঠনের বিবৃতি: ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের’ ব্যানারে রাজশাহী-চট্টগ্রামে ছাত্রশিবির হামলা করেছে
  • নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে জনগণই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে: খন্দকার মোশাররফ