চট্টগ্রাম নগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম সংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের মিছিলে হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এ সমাবেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীরা।

এর আগে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাসের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম নগরের প্রেসক্লাবের সামনে কর্মসূচি ঘোষণা করে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। কর্মসূচি শুরুর পরপর সেখানে মিছিল নিয়ে আসে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’। এ সময় ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যে’র লোকজন ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এরপর ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিতে দিতে সরে যাওয়ার সময় বাগ্‌বিতণ্ডার পর আবার হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ১২ জন আহত হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন, জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের অনুসারীরা এ হামলা চালিয়েছে। এ সমাবেশে তাঁরা ‘নব্য ফ্যাসিবাদ, ধ্বংস হোক নিপাত যাক’, ‘৭১–এর শত্রু যারা, বাংলাদেশের শত্রু তারা’, ‘২৪–এর শত্রু যারা, বাংলাদেশের শত্রু তারা’ ইত্যাদি স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান নেন।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী শাখার সংগঠক আহমেদ মুগ্ধ বলেন, ‘গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে জামায়াত ও শিবিরের হামলা তাদের স্বৈরাচারী চরিত্রকে উন্মোচন করেছে। তারা আবারও প্রমাণ করেছে ছাত্রলীগ আর শিবির আলাদা কিছু নয়।’

গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, ‘জামায়াত ও শিবির মূলত তাদের সন্ত্রাসী চরিত্রকে উন্মোচন করেছে। সারা দেশের মানুষকে এদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে প্রতিহত করার জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানাই।’

বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠন ঈশা দের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (ইউপিডিএফ সমর্থিত) সাংগঠনিক সম্পাদক সুদর্শন চাকমা, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক মাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক ছ ত র জ ট র শত র

এছাড়াও পড়ুন:

রাঙামাটিতে টানা বর্ষণে বেড়েছে পাহাড়ধসের ঝুঁকি, ফাঁকা আশ্রয়কেন্দ্র

বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি স্থল গভীর নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে বেড়েছে পাহাড় ধসের ঝুঁকি। এরই মধ্যে শুক্রবার (৩০ মে) সকালে রাঙামাটি শহরের যুব উন্নয়ন এলাকার একটি ঘরের ওপর ধসে পড়েছে পাহাড়ের মাটি। অধিকতর ধস এড়াতে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে স্থানটি।

শুধু যুব উন্নয়ন এলাকাই নয়; ছোট ছোট ধস হয়েছে লোকনাথ মন্দির সংলগ্ন ও মোনাদাম এলাকায়। মাটি রক্ষার জন্য দেওয়া বস্তা ধসে ঢুকে গেছে ঘরের ভেতর।

রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে উপজেলা পরিষদের সামনে আর্মি ক্যাম্পের সৌন্দর্য বর্ধনকারী কৃষ্ণচূড়া গাছটি উপড়ে পড়েছে। এতে যান চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের দ্রুত পদক্ষেপের কারণে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

আরো পড়ুন:

আর কতদিন থাকবে বৃষ্টি?

রাতে শুরু হওয়া বৃষ্টি বিকেলেও অব্যাহত, জলাবদ্ধতা নেই চট্টগ্রামে

এদিকে, ধস প্রবণ এলাকা থেকে সরেননি বাসিন্দারা। ফলে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পড়ে আছে ফাঁকা। শুধুমাত্র লোকনাথ মন্দির আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ১৪ পরিবারের ৬২ জন। রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে আসলেও দুপুর পর্যন্ত খাবার না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন তারা।

লোকনাথ মন্দির আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করা মনোয়ারা বেগম বলেন, “রাতে বাসা থেকে খেয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আসি। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলো এখানো খাবার দেয়নি। বাচ্চাদের নিয়ে আছি। সারা রাত অনেক বৃষ্টি হয়েছে। আমাদের বাড়ির আশপাশের কিছু মাটি সরে গেছে। বাসায় যেতে ভয় পাচ্ছি।”

একই আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করা আইয়ুব খানও খাবার না পাওয়ার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “রাতে এখানে আসি। বিভিন্ন লোকজন খোঁজ নিচ্ছে, তবে কেউ খাবার দেয়নি। জেলা প্রশাসন থেকে সব ব্যবস্থা করবে বলা হলেও কিছুই পাচ্ছি না।”

রাঙামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিফাত আসমা বলেন, “রাঙামাটি সদরে ২৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হলেও শুধু লোকনাথ মন্দির আশ্রয় কেন্দ্রে ১৪ পরিবারের ৬২ জন মানুষ অবস্থান করছেন। তালিকা অনুযায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানকারীদের দুপুর ও রাতের খাবারের পাশাপাশি শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, গেল ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত) রাঙামাটি জেলায় ১৪০ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।

ঢাকা/শংকর/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ