Samakal:
2025-06-01@14:22:26 GMT

১০০ কম্পিউটার চালু হচ্ছে না 

Published: 31st, May 2025 GMT

১০০ কম্পিউটার চালু হচ্ছে না 

১২তম প্রজন্মের ২০০ কম্পিউটার দেওয়ার কথা। একেকটির দাম লাখ টাকা। এর বদলে দিয়েছে ষষ্ঠ প্রজন্মের। এর মধ্যে প্রায় ১০০টি চালু হচ্ছে না। এ সব কম্পিউটার নিয়ে বিপাকে পড়েছে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

দরপত্র অনুযায়ী, ডেস্কটপ হবে এইচপি ব্র্যান্ডের। কোরআই থ্রি প্রসেসর। ৪ জিবি (গিগাবাইট) র‌্যাম। এক হাজার জিবি হার্ডডিস্ক ড্রাইভ। ৪৫০ ওয়াট পাওয়ার সাপ্লাই। মনিটর ২১.

৫ ইঞ্চি এফএইচডি ও এলইডি। কিন্তু সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পুরোনো ও নিম্নমানের ২০০টি কম্পিউটার সরবরাহ করেছে। ফলে অর্ধেক কম্পিউটার এখনও চালু করতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, কোনো ব্র্যান্ডের কম্পিউটার দেওয়া হয়নি। ১২তম প্রজন্মের বদলে ষষ্ঠ প্রজন্মের যন্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে। দরপত্রে যেসব শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে, তার কোনোটি মানেননি ঠিকাদার। এতে সরকারের ২ কোটি টাকা গচ্চা গেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, ক্যান্টিন ও স্টোরের কয়েকটি কক্ষে বিকল কম্পিউটারগুলো তালাবদ্ধ করে ফেলে রাখা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফেরত নেওয়ার কথা বললেও তা নেয়নি।

স্টোরকিপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘২০০ কম্পিউটারের অর্ধেক অচল। চালু করা যায়নি। টুয়েলভ জেনারেশনের ক্ষেত্রে যদি সিক্সথ জেনারেশন দেয়, তাহলে কি হবে?’ এগুলো তারা প্রকল্প পরিচালককে ফেরত দিয়েছেন।

ছয় হাজারের বদলে ১২০০ জিপিডি: পানি শোধন যন্ত্র কেনায় নীতিমালা মানা হয়নি। ছয় হাজার জিপিডি (গ্যালন পার ডে) সক্ষমতার পরিবর্তে ১ হাজার ২০০ জিপিডির যন্ত্র সরবরাহ করেছে ঠিকাদার। যন্ত্রটি এখন পর্যন্ত স্থাপন করা হয়নি। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ টাকার বেশি।

ডুপ্লিকেটের বদলে ফটোকপি: উচ্চ রেজুলেশনের কয়েকটি ডিজিটাল ডুপ্লিকেট যন্ত্র কেনার জন্য দরপত্র দেওয়া হয়। এর বদলে সরবরাহ করা হয়েছে নিম্নমানের ফটোকপি যন্ত্র। এতে সরকারের ৪ লাখ টাকা অপচয় হয়েছে। এ তিনটি সরঞ্জাম সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকার এশিয়া ট্রেডিং করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির মালিক সজিব আল হাসান। নিম্নমানের সরঞ্জাম সরবরাহের বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা ও নম্বরে যোগাযোগ করলেও কেউ সাড়া দেয়নি।

তড়িঘড়ি বিল প্রদান: ২০২৩ সালের ৭ মে ১৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নিউরোসার্জারি বিভাগের ১৯টি যন্ত্র কেনার জন্য দরপত্র ডাকা হয়। তৎকালীন মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশে কাজ পায় ঢাকার প্রতিষ্ঠান এম/এস এসপি ট্রেডিং হাউস। ওই বছরের ৩০ জুনের মধ্যে সব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করার কথা। কয়েকবার সময় বাড়িয়ে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ৬টি যন্ত্র সরবরাহ করে। পরে বাকিগুলো সরবরাহ করে। এর মধ্যে রয়েছে ২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার ইমেজ গাইডেড নিউরো নেভিগেশন সিস্টেম ফর ক্রানিয়াল অ্যান্ড স্পাইনাল সার্জারি। ৪১ লাখ টাকার ইলেক্ট্রিক ড্রিল সিস্টেম উইথ ক্রানিটিমি অ্যান্ড মাইক্রো ডিভাইডার হ্যান্ড পিচ ক্রানিয়াল। স্পাইনাল অ্যান্ড পিটুইটারি সেট, থ্রিডি ভিজ্যুয়ালাইজেশন মাইক্রোস্কোপ সিস্টেম ফর মাইক্রো নিউরোসার্জারি সেট কেনা হয়েছে ৩ কোটি ৪২ লাখ টাকায়। মিনিমালি ইনভেসিভ স্পাইন সার্জারি ৮৫ লাখ ৯১ হাজার টাকা। প্রিকিটেনিয়াস ভরসো লাম্বার পেডিকল স্ক্রু ডোনেশন অ্যান্ড ইন্টার বডি ফাংশন সেট ৩০ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। এসিডিএফ স্পাইন সার্জারি ইনস্ট্রুমেন্ট সেট ৪৮ লাখ ৭১ হাজার টাকা।

মেডিকেলের একাধিক সূত্র জানায়, যন্ত্রপাতি কেনার পর নিয়ম অনুযায়ী এক সদস্যের সার্ভে কমিটি সেটি প্রথমে বুঝে নেবে। অথচ স্টোরের স্টক লেজারে না তুলে সার্ভে প্রতিবেদন আসার আগে তড়িঘড়ি ৭ কোটি ৫ লাখ টাকা বিল প্রদান করা হয় ওই বছরের ১৮ ডিসেম্বর। এর ৩ মাস পর সার্ভে প্রতিবেদন আসে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে। এটি দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের টেকনিক্যাল ম্যানেজার (ট্রেনিং) নিমিউ অ্যান্ড টিসির কর্মকর্তা সার্ভে কমিটির সদস্য এম এন নাশিদ রহমান।

এক ভবন থেকে ৫ কোটি টাকা লোপাট: ২০১২ সালে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। শেষ হয় ২০২৩ সালে। ৬১৪ কোটি টাকার মধ্যে ৪৮৫ কোট ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে কলেজের একাডেমিক, হাসপাতালসহ কয়েকটি ভবন নির্মাণ করা হয়। আর যন্ত্রপাতি ও ফার্নিচার কেনায় ব্যয় হয় ১২৯ কোটি টাকা। একাডেমিক ভবনের প্রথম ৪ তলা নির্মাণে ৩০ কোটি ও পরে বর্ধিত ২ তলা নির্মাণে আরও ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

একটি সূত্র জানায়, একাডেমিক ভবনের বেজমেন্ট, টাইলস লাগানোসহ অন্যান্য কাজে সাড়ে ৫ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। এতে কুষ্টিয়া গণপূর্ত বিভাগের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদ মো. কবিরসহ একাধিক উপবিভাগীয় প্রকৌশলী, উপসহকারী প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের যোগসাজশ ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য: এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ডা. সরোয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যেসব নিম্নমানের কম্পিউটার দিয়েছে, সেগুলো ফেরত নেবে বলে জানিয়েছে। ২০০ কম্পিউটারের অর্ধেক খারাপ পাওয়া গেছে। আমরা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করছি। এ ছাড়া পিউরিফায়ার ও ডুপ্লিকেট মেশিনের বিষয়েও কথা হচ্ছে।’ যন্ত্রপাতি বছর ধরে পড়ে আছে কেন? জানতে চাইলে বলেন, ‘পরিচালকের দপ্তর বুঝে না নেওয়ায় আমরা যন্ত্রপাতি নিয়ে সমস্যায় আছি। বুঝে দেওয়ার জন্য বারবার চিঠি দিলেও তারা সাড়া দিচ্ছেন না। এখন এসব যন্ত্রপাতি অচল হয়ে গেলে কে দায় নেবে?’

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক দিন ধরে যন্ত্রপাতিগুলো পড়ে আছে। এগুলো বুঝে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আশা করছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’ নিম্নমানের যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, ‘নিম্নমানের কম্পিউটারসহ অন্যান্য কিছু সারঞ্জাম আমরা নিইনি।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসপি ট্রেডিং হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাফিজুর রহমান পুলক বলেন, ‘আমরা শুধু নিউরো বিভাগের ১৯টি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছি। সরকারের ক্রয় নীতিমালা শতভাগ মেনেছি। সেগুলো আমরা বুঝিয়েও দিয়েছি। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি।’

তবে অনিয়মের অভিযোগে এরই মধ্যে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন কুষ্টিয়া কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। অনুসন্ধানে ভবন নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ে অনিয়মের সত্যতা মিলেছে বলে জানান উপপরিচালক মাঈনুল হাসান রওশনী। তিনি বলেন, ‘অনুসন্ধান চলছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রজন ম র সরক র র দরপত র র চ লক স প ইন র বদল

এছাড়াও পড়ুন:

শনিবার থেকে নতুন টাকা পাবেন গ্রাহকরা  

নতুন টাকা কিছু ব্যাংকে আজ সরবরাহ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংকের শাখায় সোমবার (২ জুন) থেকে গ্রাহকরা নতুন টাকা পাবেন। তবে সীমিত পরিসরে নতুন টাকা বিনিময় হবে। প্রাথমিকভাবে প্রায় ২০০ কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

রবিবার (১ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সরাসরি গ্রাহক হচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। তাই আজ কয়েকটি ব্যাংকে সীমিত পরিমাণে নতুন নোট সরবরাহ করা হয়েছে। এসব নোট সোমবার বা তার পরদিন থেকেই গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে শুরু করবে।”

আরো পড়ুন:

নতুন টাকা বিনিময় শুরু, আসল-নকল চিনবেন যেভাবে

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিষেধ, তাই লভ্যাংশ দেবে না ১০ ব্যাংক

প্রথম ধাপে ২০, ৫০ এবং ১০০০ টাকার নতুন নোট ছাড়া হচ্ছে। ধাপে ধাপে আরো নতুন নোট ছাপানো হবে এবং সরবরাহের পরিমাণ বাড়ানো হবে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, খুব শিগগিরই আরো চার ধরনের নতুন নোট বাজারে ছাড়া হবে। এসব নোটের অধিকাংশে মসজিদের ছবি রয়েছে। নতুন নোটগুলো পর্যায়ক্রমে ছাপা ও বিতরণের প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, মোট ১১টি ব্যাংকের মাধ্যমে এই নতুন টাকা বিতরণ করা হবে। এসব ব্যাংকের নির্দিষ্ট শাখা থেকে গ্রাহকরা নতুন নোট সংগ্রহ করতে পারবেন।

যেসব ব্যাংকে নতুন টাকা বিনিময় করা যাবে সেগুলো হলো: সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক এবং ইস্টার্ন ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিটি ঈদ উৎসবের আগে বাজারে নতুন নোট ছাড়ে। যাতে মানুষ স্বচ্ছ, আকর্ষণীয় ও ঝকঝকে টাকা দিয়ে উপহার লেনদেন করতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ঘোষণা করেছে, দ্রুত নতুন নোট বাজারে আসবে। এই নতুন নোটগুলো দেশের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক, প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতীকগুলোকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। সব নোটে রয়েছে নতুন গভর্নর আহসান হাবিব মনসুরের স্বাক্ষর। সব নতুন নোট ডিজাইন করা ও ছাপানো সময় সাপেক্ষ বিষয় হওয়ায় এবার সীমিত পরিসরে নোট বাজারে আসছে।

ঢাকা/এনএফ/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শনিবার থেকে নতুন টাকা পাবেন গ্রাহকরা  
  • বিএনপি নেতাদের কবজায় ঢাকা দক্ষিণ সিটির কোরবানির পশুর হাট
  • ঢাকা উত্তরে গরুর ৮ হাটের ইজারাদারই বিএনপি নেতা
  • কথা ছিল ক্যাবিনেটে বসে ঘোষণা করব প্রেমের দরপত্র
  • ঢাকা উত্তরে পশুর হাট শুরুর বাকি ৩ দিন, চূড়ান্ত হয়েছে মাত্র দুটি
  • পশুর হাট শুরুর বাকি ৪ দিন, চূড়ান্ত হয়েছে মাত্র দুটি
  • জলমহালে কমছে পানি সঙ্গে মাছ-রাজস্বও
  • স্কুলের খেলার মাঠে পশুর হাট, জানেন না প্রধান শিক্ষক
  • সর্বোচ্চ ২৫ কোটি টাকা দরপ্রস্তাব, দরদাতাকে চেনেন না কেউ