Samakal:
2025-11-03@00:56:43 GMT

১০০ কম্পিউটার চালু হচ্ছে না 

Published: 31st, May 2025 GMT

১০০ কম্পিউটার চালু হচ্ছে না 

১২তম প্রজন্মের ২০০ কম্পিউটার দেওয়ার কথা। একেকটির দাম লাখ টাকা। এর বদলে দিয়েছে ষষ্ঠ প্রজন্মের। এর মধ্যে প্রায় ১০০টি চালু হচ্ছে না। এ সব কম্পিউটার নিয়ে বিপাকে পড়েছে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

দরপত্র অনুযায়ী, ডেস্কটপ হবে এইচপি ব্র্যান্ডের। কোরআই থ্রি প্রসেসর। ৪ জিবি (গিগাবাইট) র‌্যাম। এক হাজার জিবি হার্ডডিস্ক ড্রাইভ। ৪৫০ ওয়াট পাওয়ার সাপ্লাই। মনিটর ২১.

৫ ইঞ্চি এফএইচডি ও এলইডি। কিন্তু সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পুরোনো ও নিম্নমানের ২০০টি কম্পিউটার সরবরাহ করেছে। ফলে অর্ধেক কম্পিউটার এখনও চালু করতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, কোনো ব্র্যান্ডের কম্পিউটার দেওয়া হয়নি। ১২তম প্রজন্মের বদলে ষষ্ঠ প্রজন্মের যন্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে। দরপত্রে যেসব শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে, তার কোনোটি মানেননি ঠিকাদার। এতে সরকারের ২ কোটি টাকা গচ্চা গেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, ক্যান্টিন ও স্টোরের কয়েকটি কক্ষে বিকল কম্পিউটারগুলো তালাবদ্ধ করে ফেলে রাখা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফেরত নেওয়ার কথা বললেও তা নেয়নি।

স্টোরকিপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘২০০ কম্পিউটারের অর্ধেক অচল। চালু করা যায়নি। টুয়েলভ জেনারেশনের ক্ষেত্রে যদি সিক্সথ জেনারেশন দেয়, তাহলে কি হবে?’ এগুলো তারা প্রকল্প পরিচালককে ফেরত দিয়েছেন।

ছয় হাজারের বদলে ১২০০ জিপিডি: পানি শোধন যন্ত্র কেনায় নীতিমালা মানা হয়নি। ছয় হাজার জিপিডি (গ্যালন পার ডে) সক্ষমতার পরিবর্তে ১ হাজার ২০০ জিপিডির যন্ত্র সরবরাহ করেছে ঠিকাদার। যন্ত্রটি এখন পর্যন্ত স্থাপন করা হয়নি। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ টাকার বেশি।

ডুপ্লিকেটের বদলে ফটোকপি: উচ্চ রেজুলেশনের কয়েকটি ডিজিটাল ডুপ্লিকেট যন্ত্র কেনার জন্য দরপত্র দেওয়া হয়। এর বদলে সরবরাহ করা হয়েছে নিম্নমানের ফটোকপি যন্ত্র। এতে সরকারের ৪ লাখ টাকা অপচয় হয়েছে। এ তিনটি সরঞ্জাম সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকার এশিয়া ট্রেডিং করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির মালিক সজিব আল হাসান। নিম্নমানের সরঞ্জাম সরবরাহের বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা ও নম্বরে যোগাযোগ করলেও কেউ সাড়া দেয়নি।

তড়িঘড়ি বিল প্রদান: ২০২৩ সালের ৭ মে ১৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নিউরোসার্জারি বিভাগের ১৯টি যন্ত্র কেনার জন্য দরপত্র ডাকা হয়। তৎকালীন মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশে কাজ পায় ঢাকার প্রতিষ্ঠান এম/এস এসপি ট্রেডিং হাউস। ওই বছরের ৩০ জুনের মধ্যে সব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করার কথা। কয়েকবার সময় বাড়িয়ে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ৬টি যন্ত্র সরবরাহ করে। পরে বাকিগুলো সরবরাহ করে। এর মধ্যে রয়েছে ২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার ইমেজ গাইডেড নিউরো নেভিগেশন সিস্টেম ফর ক্রানিয়াল অ্যান্ড স্পাইনাল সার্জারি। ৪১ লাখ টাকার ইলেক্ট্রিক ড্রিল সিস্টেম উইথ ক্রানিটিমি অ্যান্ড মাইক্রো ডিভাইডার হ্যান্ড পিচ ক্রানিয়াল। স্পাইনাল অ্যান্ড পিটুইটারি সেট, থ্রিডি ভিজ্যুয়ালাইজেশন মাইক্রোস্কোপ সিস্টেম ফর মাইক্রো নিউরোসার্জারি সেট কেনা হয়েছে ৩ কোটি ৪২ লাখ টাকায়। মিনিমালি ইনভেসিভ স্পাইন সার্জারি ৮৫ লাখ ৯১ হাজার টাকা। প্রিকিটেনিয়াস ভরসো লাম্বার পেডিকল স্ক্রু ডোনেশন অ্যান্ড ইন্টার বডি ফাংশন সেট ৩০ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। এসিডিএফ স্পাইন সার্জারি ইনস্ট্রুমেন্ট সেট ৪৮ লাখ ৭১ হাজার টাকা।

মেডিকেলের একাধিক সূত্র জানায়, যন্ত্রপাতি কেনার পর নিয়ম অনুযায়ী এক সদস্যের সার্ভে কমিটি সেটি প্রথমে বুঝে নেবে। অথচ স্টোরের স্টক লেজারে না তুলে সার্ভে প্রতিবেদন আসার আগে তড়িঘড়ি ৭ কোটি ৫ লাখ টাকা বিল প্রদান করা হয় ওই বছরের ১৮ ডিসেম্বর। এর ৩ মাস পর সার্ভে প্রতিবেদন আসে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে। এটি দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের টেকনিক্যাল ম্যানেজার (ট্রেনিং) নিমিউ অ্যান্ড টিসির কর্মকর্তা সার্ভে কমিটির সদস্য এম এন নাশিদ রহমান।

এক ভবন থেকে ৫ কোটি টাকা লোপাট: ২০১২ সালে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। শেষ হয় ২০২৩ সালে। ৬১৪ কোটি টাকার মধ্যে ৪৮৫ কোট ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে কলেজের একাডেমিক, হাসপাতালসহ কয়েকটি ভবন নির্মাণ করা হয়। আর যন্ত্রপাতি ও ফার্নিচার কেনায় ব্যয় হয় ১২৯ কোটি টাকা। একাডেমিক ভবনের প্রথম ৪ তলা নির্মাণে ৩০ কোটি ও পরে বর্ধিত ২ তলা নির্মাণে আরও ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

একটি সূত্র জানায়, একাডেমিক ভবনের বেজমেন্ট, টাইলস লাগানোসহ অন্যান্য কাজে সাড়ে ৫ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। এতে কুষ্টিয়া গণপূর্ত বিভাগের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদ মো. কবিরসহ একাধিক উপবিভাগীয় প্রকৌশলী, উপসহকারী প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের যোগসাজশ ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য: এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ডা. সরোয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যেসব নিম্নমানের কম্পিউটার দিয়েছে, সেগুলো ফেরত নেবে বলে জানিয়েছে। ২০০ কম্পিউটারের অর্ধেক খারাপ পাওয়া গেছে। আমরা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করছি। এ ছাড়া পিউরিফায়ার ও ডুপ্লিকেট মেশিনের বিষয়েও কথা হচ্ছে।’ যন্ত্রপাতি বছর ধরে পড়ে আছে কেন? জানতে চাইলে বলেন, ‘পরিচালকের দপ্তর বুঝে না নেওয়ায় আমরা যন্ত্রপাতি নিয়ে সমস্যায় আছি। বুঝে দেওয়ার জন্য বারবার চিঠি দিলেও তারা সাড়া দিচ্ছেন না। এখন এসব যন্ত্রপাতি অচল হয়ে গেলে কে দায় নেবে?’

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক দিন ধরে যন্ত্রপাতিগুলো পড়ে আছে। এগুলো বুঝে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আশা করছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’ নিম্নমানের যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, ‘নিম্নমানের কম্পিউটারসহ অন্যান্য কিছু সারঞ্জাম আমরা নিইনি।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসপি ট্রেডিং হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাফিজুর রহমান পুলক বলেন, ‘আমরা শুধু নিউরো বিভাগের ১৯টি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছি। সরকারের ক্রয় নীতিমালা শতভাগ মেনেছি। সেগুলো আমরা বুঝিয়েও দিয়েছি। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি।’

তবে অনিয়মের অভিযোগে এরই মধ্যে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন কুষ্টিয়া কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। অনুসন্ধানে ভবন নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ে অনিয়মের সত্যতা মিলেছে বলে জানান উপপরিচালক মাঈনুল হাসান রওশনী। তিনি বলেন, ‘অনুসন্ধান চলছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রজন ম র সরক র র দরপত র র চ লক স প ইন র বদল

এছাড়াও পড়ুন:

২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও ৭% কমতে পারে, বাংলাদেশে কেন কমছে না

চলতি বছরের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে দাম কমার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুসারে, চলতি বছরে সামগ্রিকভাবে পণ্যমূল্য ৭ শতাংশ কমবে। আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৬ সালে পণ্যমূল্য আরও ৭ শতাংশ কমবে। এ দাম হবে ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।

কিন্তু বাংলাদেশের বাজারে তার প্রভাব নেই। দেশে মূল্যস্ফীতির হার এখনো ৮ শতাংশের ঘরে। যদিও একসময় তা দুই অঙ্ক ছাড়িয়ে গিয়েছিল। গত সেপ্টেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ হয়েছে। দেশের মানুষকে এখনো বাড়তি দামেই পণ্য ও সেবা কিনতে হচ্ছে। আগামী বছর নিত্যপণ্যের দাম কমবে কি না, সেই নিশ্চয়তাও নেই। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমলেও দেশে এর প্রভাব কম।

বিশ্বব্যাংকের ‘কমোডিটি মার্কেটস আউটলুক অক্টোবর ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, ২০২৫ সালের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। যার মূল কারণ হিসেবে তারা চিহ্নিত করেছে জ্বালানির দাম কমে যাওয়া। সেই সঙ্গে আরও কিছু কারণ চিহ্নিত করেছে তারা। সেগুলো হলো চীনে তেলের চাহিদা বৃদ্ধির গতি কমে যাওয়া এবং বিশ্ববাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় তেলের দামে বড় ধরনের পতন ঘটা। খাদ্যপণ্যের দাম বছরের শুরু থেকে ধীরে ধীরে কমতে থাকে, কিন্তু বছরের প্রথমার্ধে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে পানীয় পণ্যের দাম হঠাৎ অনেকটা বেড়ে যায়। এ ছাড়া বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতায় ওঠে। মূলত রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে মানুষ সোনার দিকে ছুটেছেন।

বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্য নির্ধারণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে জ্বালানি তেলের দাম। বিশ্বব্যাংক গ্রুপের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালে জ্বালানির দাম আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে আরও ১০ শতাংশ কমবে। ২০২৭ সালে তা আবার প্রায় ৬ শতাংশ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস ২০২৬ সালে কৃষিপণ্য, খাদ্য ও কাঁচামালের দাম কমবে। চলতি বছরেও এসব পণ্যের দাম কমেছে।

জ্বালানি তেল

বিশ্বব্যাংকের ২০২৬ সালের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা বাড়ায় গ্যাসের দাম কিছুটা বাড়লেও তেলের দাম কমে যাবে এবং সেই প্রভাবকে ছাপিয়ে যাবে। ২০২৫ সালে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম হতে পারে ব্যারেলপ্রতি গড়ে ৬৮ ডলার; ২০২৪ সালের ৮১ ডলারের তুলনায় যা বেশ কম। ২০২৬ সালে এই দাম আরও কমে ব্যারেলপ্রতি গড়ে ৬০ ডলারে নামতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।

এই পূর্বাভাস অনুযায়ী, তেলের ব্যবহার বৃদ্ধির হার আরও কমবে—মূলত চীনের চাহিদা কমে যাওয়া, বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড গাড়ির দ্রুত প্রসার ও বৈশ্বিক তেল সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

২০২৫ সালে বৈশ্বিক তেলের বাজারে সরবরাহ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০২৬ সালে তা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০২০ সালের সর্বোচ্চ মাত্রার তুলনায় প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি হবে এ সরবরাহ।

কৃষিপণ্য

বিশ্বব্যাংক গ্রুপের পূর্বাভাস অনুযায়ী, কৃষিপণ্যের মূল্যসূচক ২০২৫ সালে স্থিতিশীল আছে। ২০২৬ সালে তা সামান্য ২ শতাংশ ও ২০২৭ সালে আরও ১ শতাংশ কমবে।

খাদ্যপণ্যের দাম, যেমন শস্য, তেল, প্রোটিনজাত খাবারসহ অন্যান্য খাদ্যের দাম সাম্প্রতিক সীমার কাছাকাছি থাকবে। তবে মাঝেমধ্যে সামান্য কিছুটা ওঠানামা থাকবে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রধান ফসলগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধির হার আবার দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতায় ফিরে আসছে।

২০২৫ সালের বাকি সময়ে সয়াবিনের দাম কমবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের যে সয়াবিন সাধারণত চীনে রপ্তানি হয়, তা এবার কম দামে অন্য ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে হতে পারে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের অন্যতম প্রধান ক্ষেত্রে হচ্ছে এই সয়াবিন। চীন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সয়াবিন কিনছে না। ফলে ২০২৬ ও ২০২৭ সালে এই পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্ববাজারে দাম কমে গেলে যুক্তরাষ্ট্রে সয়াবিন চাষের পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে, তবে ব্রাজিল তার সয়াবিন আবাদ আরও বাড়ানোর পথে রয়েছে। পানীয় পণ্যের দাম ২০২৬ সালে ৭ শতাংশ ও ২০২৭ সালে প্রায় ৫ শতাংশ কমবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এদিকে চলতি বছর সারের দাম সামগ্রিকভাবে ২১ শতাংশ বাড়তি। চাহিদা বৃদ্ধি, বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা ও কিছু অঞ্চলে সরবরাহ–ঘাটতির কারণে এ দাম বেড়ে যাওয়া। ২০২৬ ও ২০২৭ সালে দাম প্রায় ৫ শতাংশ কমতে পারে। তবু ২০১৫-১৯ সালের গড় দামের তুলনায় তা অনেক বেশি থাকবে। এর কারণ হলো উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া, রপ্তানি সীমাবদ্ধতা ও চলমান আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা।

চীন ইতিমধ্যে নাইট্রোজেন ও ফসফেট সার রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। অন্যদিকে পটাশ সরবরাহকারী বড় দেশ বেলারুশ এখনো ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছে। রাশিয়া ও বেলারুশ—উভয় দেশই সারের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরোপিত নতুন শুল্কের সম্মুখীন।

দেশে কেন দাম বেশি

বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশের বাজার দাম না কমার অন্যতম প্রধান কারণ ডলারের দামের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন। গত তিন বছরে ডলার দাম অনেকটা বেড়েছে। সেই সঙ্গে দেশের অনেক আমদানি পণ্যে শুল্ক বেশি বলে মনে করেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনার কারণে দাম কমছে না। বাজারে চাহিদা কত বা কখন কোন পণ্য আমদানি করতে হবে, সে বিষয়ে যথাযথ তথ্যের ঘাটতি আছে। ফলে সময়মতো পণ্য আমদানি হয় না।

আরেকটি বিষয় হলো দেশে যেসব পণ্য আমদানি করা হয়, তার অনেক কিছু উৎপাদিতও হয়। কিন্তু বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় এসব পণ্যের সরবরাহে টান পড়েছে। বাজারের পণ্যমূল্যে তার প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন মোস্তাফিজুর রহমান।

তিন বছর আগে দেশে ডলারের দাম ছিল ৮৬ টাকা। এখন তা বেড়ে ১২২ টাকা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েক মাস ধরে আমদানির ঋণপত্র খোলাও কমেছে। এতে আমসদানিতে চাপ পড়ছে।

দেশের বাজার উচ্চ মূল্যের কারণ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক সেলিম রায়হান বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি, কৃষি ও খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশের বাজারে তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। জ্বালানি ও পরিবহন ব্যয়, শুল্ক ও করের চাপ ও বাজার ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার কারণে দাম কমছে না। পাইকারি থেকে খুচরা পর্যন্ত অতি মুনাফা ও অস্বচ্ছ বাণিজ্যিক শৃঙ্খলের কারণেও বাজারে কৃত্রিমভাবে উচ্চমূল্য বিরাজ করছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে টাকার অবমূল্যায়ন। ফলে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে এবং আন্তর্জাতিক মূল্যহ্রাসের সুফল ভোক্তাপর্যায়ে পড়ছে না।

সেলিম রায়হান আরও বলেন, এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার কারণ ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিনিয়োগকারীরা নতুন ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। পণ্য পরিবহন ও আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সরবরাহ শৃঙ্খল দুর্বল হয়ে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বাজারে পণ্যের ঘাটতি ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এটি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

দেশে তিন বছর ধরেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। সম্প্রতি তা কিছুটা কমলেও সেপ্টেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ। গত আগস্ট মাসে এই হার ছিল ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না
  • সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন
  • ২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও ৭% কমতে পারে, বাংলাদেশে কেন কমছে না
  • যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
  • ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প
  • সবজির দাম কমতির দিকে, আটার দাম কেজিতে বাড়ল ৫ টাকা