জুলাই আন্দোলনে জীবিত ভাইকে নিহত দেখিয়ে মামলা, নেপথ্যে কী?
Published: 31st, May 2025 GMT
মো. সোলাইমান হোসেন সেলিম ময়মনসিংহের ফুলাবাড়িয়া উপজেলার ধামর গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে। ধামর বেলতলি বাজারে সেলিম মুদির ব্যবসা করলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তাকে শহীদ দেখিয়ে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।
গত বছরের ৩ আগস্ট রাজধানীর কাজলা পেট্রোল পাম্পের সামনে সেলিম গোলাগুলিতে নিহত হয়েছে এমন অভিযোগ এনে তারই বড় ভাই গোলাম মোস্তুফা ওরফে মুস্তু ডাকাত ৩০ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আসামি করা হয়েছে ৪১ জনকে। মামলায় সাক্ষী করা হয় তাদের দুই সহদোর হেলাল উদ্দিন এবং আবুল হোসেনকে।
সম্প্রতি জানা গেছে, নিহত সেলিম আসলে জীবিত। এ নিয়ে হইচই পড়েছে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায়। স্থানীয় পুলিশ ইতিমধ্যে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছেন।
প্রশ্ন হলো- জীবিত সেলিমকে কেন নিহত দেখিয়ে মামলা করলেন তারই সহদর মুস্তু?
অনুসন্ধানে জানাযায়, প্রায় ২০ বছর আগে তাদের বাবা আব্দুল হাকিম মারা গেলে জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয় ভাইদের মধ্যে। সেলিম দুই কন্যা সন্তানের জনক হওয়ায় তার সকল সহায় সম্পত্তির মধ্যে নজর পড়ে বাকি তিন ভাইয়ের।
বেশ কয়েকটি মামলায় আসামি হওয়ায় প্রায় ১৫ বছর ধরে বাড়িতে আসেন না মামলার বাদী মুস্তু। ঢাকা শহরে চালান বাস। সেলিমের অপর দুই ভাই নিজ বাড়িতে বসবাস করে কৃষি কাজ করেন।
এদিকে দুইটি হত্যাসহ চারটি মামলায় জড়িয়ে নিঃস্ব মুস্তু ফন্দি আটে সেলিমকে নিয়ে।
সেলিমের স্ত্রী হাজেরা খাতুন বলেন, “সেলিমকে হত্যার উদ্দেশ্যেই এই নাটক সাজিয়েছেন তারই তিন ভাই। সেলিমের সম্পত্তি গ্রাস করতেই তাদের চলমান বিরোধ থামছে না।”
ভুক্তভোগী সেলিম বলেন, “আমার দুই মেয়ে, কোন ছেলে সন্তান নেই। দীর্ঘদিন ধরে আমার ভাইয়ের আমার সহায় সম্পত্তির উপর লোভ করে আসছে। তাই আমার কোন ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা করে এই মামলাটি করেছেন। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা দাবি করছি।”
সেলিমকে নিহত দেখিয়ে মামলা করার বিষয়ে মামলার স্বাক্ষী সেলিমের ভাই হেলাল উদ্দিনের মেয়ে ঝুমি আক্তার বলেন, “শুনেছি মামলা হয়েছে কিন্তু বাবাকে কেন সাক্ষী করা হলো জানি না।”
ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলছেন, “পারিবারিক বিরোধের কারণেই জীবিত সেলিমকে মৃত দেখিয়ে তার ভাই মামলা করেছে। এ বিষয়ে যাত্রাবাড়ী পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।”
ঢাকা/সনি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দিনে ঢাকায় মিছিল, রাতে বাড়িতে ফিরতেই নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ৩ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
রাজধানীর উত্তরায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ময়মনসিংহ জেলা শাখার ব্যানারে মিছিলে অংশ নেওয়ার পর রাতে বাড়িতে ফিরতেই তিন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি নূর হামীম রুশো (২০), ছাত্রলীগ কর্মী আলিফ জাহান ওরফে পার্থ (২০), মো. মারুফ মিয়া (২৫)। তাঁরা সবাই ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের বাসিন্দা।
আজ শনিবার বিকেলে গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে গতকাল শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে ঢাকায় মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন তাঁরা।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, বিশেষ অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগের তিন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা রাজধানীর উত্তরার মিছিলে অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।