বরিশালের বেতাগীতে সুব্রত সঞ্জীবের বেড়ে ওঠা। কৈশোরেই তাঁকে সিনেমার নেশায় পেয়ে বসে। এলাকায় সিনেমা দেখার তেমন ব্যবস্থা ছিল না। এ জন্য ছুটতেন দূরদূরান্তে। একসময় ভিসিআরে সিনেমা দেখার পোকা মাথায় ঢুকল। রাতদিন একাকার করে টাকা জমিয়ে বাড়ি থেকে পালাতেন সিনেমা দেখতে। সিনেমা-পাগল সুব্রতকে নিয়ে পরিবারের ভাবনার শেষ ছিল না—‘ছেলেটার কী যে হবে!’

তত দিনে অবশ্য নিজের ভবিষ্যৎ ঠিক করে ফেলেছেন সুব্রত। ভিসিআরের দোকানে কাজ নেবেন আর ইচ্ছামতো সিনেমা দেখবেন। বড় হয়ে তাঁকে আর অবশ্য ভিসিআরের দোকানে কাজ করতে হয়নি, কৈশোরের সেই নেশাই সুব্রত সঞ্জীবকে এনে ভিড়িয়েছে লেখাজোখা আর নাটক নির্মাণের জগতে।

যার শুরুটা ২০০০ সালে। বেতাগী থেকে বরিশাল শহরে এসে অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয়ে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হন। অভিনয় করবেন বলে ‘খেয়ালী’ নামের একটি নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত হন। পড়াশোনার পাশাপাশি চলতে থাকে অভিনয়ের তালিম। এর মধ্যে সরকারি ব্রজমোহন কলেজে থেকে শেষ করেন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। ২০১১ সালের দিকে নাট্যদলের অনেকে তাঁকে টিভি নাটকে অভিনয়ের পরামর্শ দেন। সুব্রতও সুযোগ খুঁজতে থাকেন। অভিনয় করতে বেশ কয়েকবার বরিশাল থেকে ঢাকাতেও আসেন। সেই অভিজ্ঞতা বিষয়ে সুব্রত বলেন, ‘পরে আমি বুঝতে পারি এখানে প্রচুর তৈলমর্দন করতে হয়। ভাবি নিজেই নাটক বানিয়ে অভিনয় করব। সেভাবেই ইউটিউবের জন্য দুইটা নির্দেশনা দিই। ২০১৬ সালে ফারহান আহমেদ জোভানকে নিয়ে নির্মাণ করি অপেক্ষা এবং বাকি সব গল্প। তখন আমার কাছে নির্মাণই বেশি ভালো লাগে। সেই থেকে অভিনয় ছেড়ে দিই।’

মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে এবার সেরা চিত্রনাট্যকারের স্বীকৃতি পেয়েছেন সুব্রত সঞ্জীব.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর শ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে স্থানীয় উৎপাদনে চাহিদা পূরণ সম্ভব

সমকাল: আপনারা কেন বাইসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিতে এলেন? আকিজ বাইসাইকেলের বিশেষত্ব কী?

সৈয়দ জয়নুল আবেদীন: বাইসাইকেল শিল্প একটি সম্ভাবনাময় খাত। দেশের পাশাপাশি বহির্বিশ্বেও এর বড় একটি বাজার রয়েছে। দেশের মোট চাহিদার অর্ধেকেরই বেশি এখনও আমদানিনির্ভর। ফলে আমরা দেখেছি, এখানে যদি গ্রাহকের চাহিদামতো পণ্য উৎপাদন করা যায়, তাহলে এ খাতে ভালো করা সম্ভব। আমরা মান নিশ্চিত করে দেশের গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী দামে বাইসাইকেল দিচ্ছি। বাইসাইকেলের কাঁচামাল এবং মেশিনারিজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। যার মধ্যে নেদারল্যান্ডস, ইংল্যান্ড, বেলজিয়াম, ইতালি, জাপান, তাইওয়ান, চীন, ভারত অন্যতম। এ জন্য খুব দ্রুত আমরা গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছি। ২০২৩ সালের মে মাসে যাত্রা শুরু করে আমরা দ্রুত স্থানীয় বাজারের প্রায় ১০ শতাংশ দখলে নিতে পেরেছি। আমরা আশা করছি, যে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি, সেটি ধরে রেখে দ্রুত এগোতে পারব।

সমকাল:  স্থানীয় বাজারের বড় অংশ এখনও আমদানিনির্ভর। এই নির্ভরতা কমাতে আপনাদের পরিকল্পনা কী?

সৈয়দ জয়নুল আবেদীন: দেখুন, আমরা আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ইতোমধ্যে ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করছি। দ্রুতই বাজারে এর প্রভাব পড়বে বলে বিশ্বাস করি। আমরা ন্যূনতম ৬ হাজার ৯০০ টাকায় বাইসাইকেল দিচ্ছি। আবার ৪৫ হাজার টাকাতেও আমাদের বাইসাইকেল রয়েছে। ফলে দেশের সব শ্রেণির গ্রাহকের জন্যই আমাদের বাইক রয়েছে। আমরা ইলেকট্রিক, স্পোর্টস, রেসিং, ফ্যাট, ফোলডিং ইত্যাদি ক্যাটেগরিতে বাইসাইকেল উৎপাদন এবং বাজারজাত করছি। আশা করছি এর প্রভাব বাজারে পড়বে।

সমকাল: বাইসাইকেলের জনপ্রিয়তা বাড়াতে কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন কিনা?

সৈয়দ জয়নুল আবেদীন: বাইসাইকেলের জনপ্রিয়তা বাড়াতেও আমরা কাজ করছি। বাইসাইকেল পরিবেশবান্ধব এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য ইতিবাচক একটি যান। ফলে উন্নত বিশ্বে দিন দিন কিন্তু বাইসাইকেলের কদর বাড়ছে। আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছে, আমরা স্বল্প দূরত্বেও রিকশা কিংবা অন্য যানবাহন ছাড়া চলতে পারি না। এ ধরনের অভ্যাস বদলে বাইসাইকেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাইসাইকেলের এই গুরুত্ব তুলে ধরছি। আমরা সব সময় তারুণ্যের চঞ্চলতা ও সুস্থ বিনোদনকে পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো গত বছর আমরা ‘আকিজ বাইসাইকেল স্পোর্টস ফেস্ট ২০২৪’ আয়োজন করি। এ ধরনের কার্যক্রম আমরা অব্যাহত রাখব।

সমকাল: দেশীয় বাইসাইকেলের বাজার বাড়াতে সরকারের কাছে আপনাদের কোনো দাবিদাওয়া আছে কি?

সৈয়দ জয়নুল আবেদীন: সাইকেল শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সরকারিভাবে কিছু নীতি সহায়তা প্রয়োজন। উৎপাদনকারী কারখানার অনেক কাঁচামাল আমাদের আমদানি করতে হয়। এই কাঁচামালের আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কমানোর দাবি জানাই। রপ্তানি পর্যায়ে ইনসেনটিভও বাড়ানো প্রয়োজন। এ ছাড়া আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়িয়ে রপ্তানি পর্যায়ে শুল্ক সুবিধা এবং দ্রুততম সময়ে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সও নিশ্চিত করতে হবে।

 সাক্ষাৎকার গ্রহণ: হাসান জাকির

সম্পর্কিত নিবন্ধ