চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে খালপাড় থেকে তোয়ালে মোড়ানো অবস্থায় এক নবজাতককে উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার সকালে উপজেলার মায়ানী ইউনিয়নের পূর্ব মায়ানী গ্রামের একটি খালপাড়ে শিশুটির কান্নার শব্দ শুনে স্থানীয় এক কৃষক তাকে উদ্ধার করে। সদ্য ভূমিষ্ঠ ছেলেশিশুটিকে কে বা কারা খালপাড়ে রেখে যায়, তা জানা যায়নি।

স্থানীয় লোকজন জানান, পূর্ব মায়ানী এলাকার মো.

মোস্তফা নামের এক কৃষক সকালে মাঠে যাওয়ার সময় খালপাড়ে বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনতে পান। কান্নার শব্দ শুনে তিনি আশপাশে খুঁজে খালপাড়ে তোয়ালে মোড়ানো একটি নবজাতক দেখতে পান। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় মুজিবুল হক নামে এক ব্যক্তির কাছে নিয়ে যান। ঘটনার জানাজানি হলে এলাকার শত শত লোক শিশুটিকে দেখতে ভিড় করেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সম্মতিতে এক নিঃসন্তান দম্পতিকে দেওয়া হয়। শিশুটিকে এখন হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছেন ওই দম্পতি।

শিশুটি উদ্ধারের সময় সেখানে ছিলেন শাহাব উদ্দিন নামের এক তরুণ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেখে মনে হচ্ছে, নবজাতকটিকে জন্মের কিছু সময় পরই ফেলে রেখে যাওয়া হয়েছিল। কান্নার শব্দ শুনে স্থানীয় কৃষক মোস্তফা নবজাতকটি পাওয়ার পর আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। বিষয়টি এলাকার লোকজনকে জানালে তাঁদের উপস্থিতি ও সম্মতিতে শিশুটিকে নিঃসন্তান এক ব্যবসায়ী পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।’

মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মুসা মিয়া জানান, খালপাড় থেকে একটি সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতক উদ্ধারের পর স্থানীয় এক নিঃসন্তান পরিবারের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হয়েছে। সে এখন সুস্থ রয়েছে।

জানতে চাইলে এমন কোনো ঘটনার কথা শোনেননি বলে জানান মিরসরাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জহির আমিন। তিনি বলেন, ‘মায়ানী ইউনিয়ন আমার দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকা। সেখানে খালপাড়ে নবজাতক পাওয়া গেছে, এ ধরনের কোনো ঘটনার কথা শুনতে পাইনি। এলাকা থেকেও কেউ এ বিষয়ে কিছু জানায়নি আমাদের।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে

একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।

এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।

আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।

সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ