ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় গরু আনতে গিয়ে সিঙ্গার নদের স্রোতে পড়ে দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ এলাকায় নদের দুটি পৃথক স্থান থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হল গোকর্ণ গ্রামের মিনার আলীর মেয়ে মারিয়া আক্তার (১২) ও ফারিয়া আক্তার (৯)। তারা স্থানীয় গোকর্ণ মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। মিনার আলী সৌদি আরবে থাকেন। দুই বোনের মৃত্যুতে এলাকায় শোক নেমে এসেছে।

নিহতদের পরিবার, স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার সকালে আকাশিয়া মাঠে গরু চরাতে যায় মারিয়া ও ফারিয়া। প্রতিদিনের মতো তাদের দুপুরের মধ্যে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু গরুগুলো ফিরে এলেও দুই বোন আর ফেরেনি। পরিবার তাদের খোঁজ করতে থাকে। সন্ধ্যা পর্যন্তও কোনো সন্ধান না মেলায় বিষয়টি স্থানীয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়।

পরে রাত ১২টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে উদ্ধার অভিযান চালালেও তাদের পাওয়া যায়নি। পরদিন, অর্থাৎ আজ সকালে নিখোঁজস্থল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে বড় বোন মারিয়ার লাশ ভেসে থাকতে দেখা যায়। সকাল ৯টার দিকে ছোট বোন ফারিয়ার লাশ দেড় কিলোমিটার দূরে একটি মাছ ধরার জালে আটকে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয় ব্যক্তিরা তাদের উদ্ধার করে একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয়রা জানান, বাড়ি ফেরার পথে বেড়িবাঁধ এলাকায় সিঙ্গার নদ পার হওয়ার সময় স্রোতের তোড়ে পড়ে দুই বোন ডুবে যায়।

গোকর্ণ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো.

আবদুল আলীম বলেন, ‘সকালে ওরা গরু নিয়ে বের হয়েছিল; কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত না ফেরায় আমরা নদে ভেসে গেছে বলে ধারণা করেছিলাম। কারণ, আকাশিয়া মাঠের হাওরে গরু চরাতে সিঙ্গার নদ পার হতে হয়। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খাইরুল আলম বলেন, শুক্রবার বিকেলে বাড়ির পাশের নদ পার হয়ে গরু আনতে যায় মারিয়া ও ফারিয়া। দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্রোত তৈরি হয়। এ সময় নদ পার হতে গিয়ে স্রোতের তোড়ে ভেসে যায় দুই বোন। এর পর থেকে তাদের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে শনিবার সকালে নদে দুই বোনের লাশ ভেসে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের লাশ উদ্ধার করে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ কর ণ নদ প র

এছাড়াও পড়ুন:

গরু ফিরেছে, বাড়ি ফেরেনি দুই বোন

সকালে উঠেই গরু নিয়ে বের হয়েছিল দুই বোন। দুপুরে গরুগুলো বাড়ি ফিরলেও ফেরেনি মারিয়া আক্তার (১২) ও ফারিয়া আক্তার (৯)। সন্ধ্যা নামতেই বাড়িতে নেমে আসে উৎকণ্ঠা। আজ শনিবার সকালে ফিরে এলো দুই বোন-নিঃশব্দ, নিথর হয়ে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে নিখোঁজের ২০ ঘণ্টা পর সিঙ্গার নদীর দুটি ভিন্ন স্থানে পাওয়া গেছে দুই বোনের মরদেহ। উদ্ধার করেছেন স্থানীয়রা। শুক্রবার দুপুরে গোকর্ণ ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ এলাকায় সিঙ্গার নদী পার হতে গিয়ে রাতে ভেসে যায় তারা।

আজ শনিবার সকালের তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের মৃত্যুতে গোটা গ্রামে নেমে এসেছে লোকের ছায়া। কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার, প্রতিবেশী ও সহপাঠীরা।

নিহত দুজনই গোকর্ণ ইউনিয়নের গোকর্ণ গ্রামের সৌদি প্রবাসী মিনার আলীর মেয়ে। তারা গোকর্ণ মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।

পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল আকাশি হাওরের পাড়ে গরু চড়াতে যায় দুই বোন। প্রতিদিনের মতো দুপুরের মধ্যেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাদের। কিন্তু এদিন দুপুর পার হয়ে যায়, গরুগুলো ঠিকই বাড়িতে ফিরে আসে। ফারিয়া-মারিয়া ফেরে না। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। দুপুর গড়িয়ে বিকেল, তার পর সন্ধ্যা। পরিবারে বাড়ে উৎকণ্ঠা।

একপর্যায়ে স্থানীয়রা ধারণা করেন, নদী পার হতে গিয়ে হয়তো তারা পানিতে ভেসে গেছে। বিষয়টি জানানো হয় উপজেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসকে। নাসিরনগর ফায়ার সার্ভিস রাত ১২টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালায়। তবে প্রশিক্ষণ না থাকায় তারা পানিতে নামতে পারেননি। শনিবার সকালে ডুবুরি দল আসার আগেই স্থানীয়দের চোখে পড়ে দুটি মরদেহ। সকাল ৯টার দিকে নিখোঁজস্থল থেকে দুই কিলোমিটার দূরে বড় বোন মারিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। আর সকাল ৯টার দিকে দেড় কিলোমিটার দূরে পাওয়া যায় ছোট বোন ফারিয়ার নিথর দেহ।

স্থানীয় শিক্ষক মো. আকবর সমকালকে জানান, ‘প্রতি বছর গ্রীষ্মকাল ও বর্ষা মিলে এই হাওরের নদীগুলো ভয়ংকর হয়ে ওঠে। শিশু-কিশোর থেকে শুরুর করে বৃদ্ধরা গরু চরাতে গিয়ে তীব্র স্রোতে ভেসে যায়। গত দুই বছরে একই স্থানে চারজন মানুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

গোকর্ণ ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং সদস্য মো. আব্দুল আলীম বলেন, সকালে ওরা গরু নিয়ে বের হয়েছিল। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত না ফেরায় আমরা নদীতে ভেসে গেছে বলে সন্দেহ করি। কারণ আকাশি হাওরে গরু চড়াতে সিঙ্গা নদী পার হতে হয়। পরে বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়।

নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম বলেন, পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাদের পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা নাসরিন বলেন, উজানের ঢল ও নিম্নচাপের কারণে নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে গেছে। রাতে ছিল তীব্র। নদী পার হতে গিয়ে তারা ভেসে যায়। আমরা রাতেই উদ্ধার চেষ্টার সবকিছু করেছি। সকালে স্থানীয়রা লাশ ভেসে উঠতে দেখে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খালের পানিতে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু
  • গরু ফিরেছে, বাড়ি ফেরেনি দুই বোন