রংপুর নগরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাড়িতে হামলায় ঘটনায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে থানায় মামলা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন রংপুরের জাতীয় পার্টি নেতারা। তাঁরা হামলাকারী ‘সন্ত্রাসীদের’ গ্রেপ্তারেরও দাবি জানিয়েছেন।

আজ শনিবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রশাসনের প্রতি এমন দাবি জানান জাতীয় পার্টির নেতারা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ মামলা না নিলে এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে থানা ঘেরাও এবং হরতাল দেওয়া হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

আরও পড়ুনজি এম কাদেরের বাড়িতে হামলার ঘটনায় মামলা নেয়নি পুলিশ, অভিযোগ জাপা নেতাদের৮ ঘণ্টা আগে

গত বৃহস্পতিবার রাতে রংপুর নগরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা জি এম কাদেরের বাড়ি দ্য স্কাই ভিউয়ের জানালার কাচ ভাঙচুর ও একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করেন। ঘটনার সময় জি এম কাদের ওই বাড়িতে ছিলেন।

দলীয় চেয়ারম্যানের বাসায় হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বেলা সাড়ে তিনটায় রংপুর সেন্ট্রাল রোডে জাতীয় পার্টির কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি রংপুর প্রেসক্লাব মোড় হয়ে টাউন হলের সামনে গিয়ে আবার পায়রা চত্বরে আসে। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করা হয়।

সমাবেশে জাতীয় পার্টির কো–চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান অভিযোগ করেন, জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের বাসভবনে (জি এম কাদেরেরও বাসভবন) হামলা হয়েছে প্রশাসনের নির্লিপ্ততার কারণে। সারা দেশের মতো রংপুরেও প্রশাসন কোনো কাজ করছে না।

মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘আমরা দেখছি, মব ভায়োলেন্স। এখন মবের যুগ। এখন আমরা প্রশাসনকে বলব, আপনারা সরে দাঁড়ান। মব ভায়োলেন্সে জাতীয় পার্টি দুর্বল নয়। জাতীয় পার্টি যেকোনো মবের ফেস করতে পারে। এনসিপির যদি ক্ষমতা থাকে, ডিক্লেয়ার (ঘোষণা) দিয়ে যদি করতে চায়, জাতীয় পার্টি প্রস্তুত আছে সব সময়। আমরা চাই না, মব ভায়োলেন্সের মতো আমরাও মব ভায়োলেন্স করি। কিন্তু যদি তারা রিঅ্যাকশন (প্রতিক্রিয়া) করে, জাতীয় পার্টি দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে।’

রংপুর নগরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) উদ্দেশে মোস্তাফিজার বলেন, ‘রংপুর কোতোয়ালির ওসি, মামলা যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এন্ট্রি (অন্তর্ভুক্তি) না হয়, তাহলে বুঝবেন, জাতীয় পার্টি কী করতে পারে। থানা ঘেরাওসহ অন্যান্য কর্মসূচি আমরা নেব। আইন আইনের গতিতে চলবে, আপনারা তদন্ত করে দেখবেন। ভিডিও ফুটেজ আছে, কারা কারা এই সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের গ্রেপ্তার করবেন।’

জি এম কাদেরের বাসভবনে হামলার ঘটনার এক দিন পর গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে রংপুর নগরের কোতোয়ালি থানায় মামলা করতে যান জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মিলন চৌধুরীসহ দলটির বেশ কয়েকজন নেতা। প্রায় এক ঘণ্টা পর থানা থেকে বের হয়ে তিনি অভিযোগ করেন, কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মব ভ য় ল ন স এম ক দ র র ব র প র নগর

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের জেরে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বাসভবনে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।

মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ পৌর পার্ক, লঞ্চঘাট, কাঁচাবাজার এলাকাসহ সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে জনগণের মনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে যান চলাচল ব্যাহত করা হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মিছিল করা হয়। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে ও এনসিপির পথসভা নস্যাৎ করতে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করতে জনসাধারণের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেন। এ সময় জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।

এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, জেলা কারাগারে হামলা, জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১৪টি‌ মামলা করা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। ১৪টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ১৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৫৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ জুলাই থেকে গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। পরে ২০ জুলাই রাত আটটায় কারফিউ ও ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় মামলা
  • গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা