ওয়ানডে থেকে অবসর ঘোষণা ম্যাক্সওয়েলের
Published: 2nd, June 2025 GMT
গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ব্যাটিং যেন কখনোই নিয়মে বাঁধা থাকেনি। কখনো লেগ স্টাম্পের বাইরে থেকে স্কুপ, কখনো হাঁটতে হাঁটতে মিডউইকেটের ওপারে ছয়। ২০২৩ সালে বিশ্বকাপে আতঙ্ক হয়ে উঠেছিলেন তিনি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে অপরাজিত ২০১ রানের ইনিংস খেলে বিশ্বকাপ ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়েছিলেন একা হাতে। যেখানে খোঁড়ানো পায়ে দাঁড়িয়েও মাটি কাঁপিয়েছিলেন।
এমন একজন ক্রিকেটারের মুখে হঠাৎ করে “আমি যেন দলকে পেছনে টেনে ধরছি”— এমন স্বীকারোক্তি অস্বস্তির মতোই চমকে দেয়। আর সেই উপলব্ধি থেকেই অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ব্যাটে ঝড় তুলতে পারলেও, শরীর আর সেই আগের মতো সাড়া দিচ্ছে না। সেটাই সিদ্ধান্তের পেছনে বড় কারণ।
সম্প্রতি এক পডকাস্টে আবেগঘন কণ্ঠে বললেন ম্যাক্সওয়েল, “আমি দেখছি, আমার শরীর এখন কন্ডিশনের সঙ্গে ঠিকভাবে মানিয়ে নিতে পারছে না। ম্যাচের সময় মাঠে নিজের মান অনুযায়ী পারফর্ম না করতে পারলে নিজেরই খারাপ লাগে। তখন মনে হয়, হয়তো আমি দলকে আটকে দিচ্ছি।”
আরো পড়ুন:
পাকিস্তানের বাংলাদেশে আসার দিনক্ষণ চূড়ান্ত
দল গোছাতে সময় চাইলেন সিমন্স
২০২২ সালে পা ভাঙার যে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছিল, তার রেশ থেকেই আজকের সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, “ওই ইনজুরির পর আমি সব সময় শতভাগে পৌঁছাতে পারিনি। ওয়ানডে ম্যাচে চাপ অনেক বেশি। আমি বুঝেছি, দীর্ঘ মেয়াদে এই ভার আমি বহন করতে পারব না।”
অবসর নেয়ার আগে ১৪৯টি ওয়ানডে খেলেছেন, যেখানে ৩ হাজার ৯৯০ রান করেছেন ৩৩.
ম্যাক্সওয়েল এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জাতীয় নির্বাচক জর্জ বেইলির সঙ্গেও বিস্তর আলোচনা করেছেন। তিনি জানালেন, “২০২৭ বিশ্বকাপ নিয়ে কথা বলেছি। তবে সত্যি বলতে, আমি মনে করি না, তখনও এই ফরম্যাটে ফিট থাকব।”
টেস্ট ক্রিকেট থেকে তিনি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে সরে না দাঁড়ালেও, মূলত এই ফরম্যাটে তাকে দেখা যায় না। মাত্র ৭টি টেস্ট খেলে থেমে আছে তার সাদা পোশাকের ক্যারিয়ার।
তবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খেলে যাবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন ম্যাক্সওয়েল। গ্লোবাল লিগে খেলার পাশাপাশি জাতীয় দলের হয়েও এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণে খেলে যেতে চান তিনি।
অবসর মানে কি থেমে যাওয়া? গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মতো ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে হয়তো না। তারা শুধু ভিন্নভাবে ফিরে আসেন। হয়তো কোন একদিন, আবারও শর্ট কভার দিয়ে স্লগ করে ছক্কা হাঁকাতে দেখা যাবে ‘ম্যাড ম্যাক্স’কে। হয়ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চেই।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ন ম য ক সওয় ল ব শ বক প
এছাড়াও পড়ুন:
এসএসসি পরীক্ষার পর অবসরে কী করবে, রইল ৮ পরামর্শ
এসএসসি পরীক্ষা শেষ। ব্যবহারিক পরীক্ষাও ভালোভাবে শেষ হয়েছে। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পরীক্ষাটি আশা করি তুমি শেষ করলে। এখন প্রায় তিন মাস অবসর। তোমাদের কোনো পড়াশোনা নেই, কোনো প্রস্তুতিও নেই। এই অখণ্ড অবসরে তুমি কী বসে থাকবে? নাকি কিছু একটা করবে। অবশ্যই তোমাকে একটা কিছু করতে হবে। তোমার মনে যা ইচ্ছা হয় করতে, তা–ই করো, যা তোমার মনে ভালো লাগে।
১. বই পড়ে জানতে হবে
‘বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না’ কথাটি বলেছেন কথাসাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী। আর বই পড়ে কেউ ক্ষতির মুখোমুখি হয় না। যে বই পড়ে সে সঠিক জানতে পারে। বই পড়া বিষয়টি একেকজনের একেক রকম হতে পারে। কেউ বিচিত্র ধরনের বই পড়েন, তাঁরা নিজেদের মনোজগৎ আলোকিত করেছেন। একটা গল্পের বই পড়ে একরকম মজা, প্রবন্ধের বই পড়ে অন্য রকম মজা। প্রবন্ধের বই পড়ে তো প্রতিটি বাক্যের মধ্যেই যেন জানার খোরাক থাকে। একেক ধরনের বই একেকভাবে মনকে আলোড়িত করে, আলোকিতও করে। কলেজের একাদশ শ্রেণির পড়ার চাপ শুরু হওয়ার আগেই পড়ে নাও চিরায়ত বইগুলো।
২. অন্য ভাষাও শিখি
বিশ্বের শীর্ষ ভাষাবিশেষজ্ঞদের মতে, পৃথিবীতে বর্তমানে প্রায় ৬ হাজার ৫০০ ভাষা রয়েছে। ২০২২ সালে সোয়াপ ল্যাঙ্গুয়েজের এক প্রতিবেদনে লিখেছিল, পৃথিবীতে সরকারিভাবে পরিচিত ভাষা ৭ হাজার ১৩৯টি। সব ভাষা কি জানা সম্ভব? কিছুতেই না। মনে রেখো, মাতৃভাষা বাংলার পাশাপাশি অন্তত দু-একটি ভাষা আমাদের জানা জরুরি। বিশেষ করে ইংরেজি ভাষা জানা খুবই প্রয়োজন। ইংরেজি না জানলে পদে পদে বাধায় মুখে পড়তে হবে। উচ্চশিক্ষার জন্য ইংরেজি কত প্রয়োজন, আমরা সবাই জানি। এখন অনেকে জার্মান ভাষা, চীনা ভাষা, জাপানিজ ভাষা শিখছে।
৩. কম্পিউটারের দুনিয়া
বর্তমানে কম্পিউটার আমাদের জীবনের সঙ্গে মিশে গেছে। কোভিডকাল থেকে কম্পিউটারের ব্যবহার অনেক বেড়ে গেছে। এখন অনলাইনে ক্লাস, বাসায় পড়াশোনা বহু কিছু এর মাধ্যমে হয়ে থাকে। কম্পিউটারের মৌলিক বিষয়গুলো না জানলে তোমাদের পিছিয়ে থাকতেই হবে। কম্পিউটারের এমএস ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্টসহ কিছু বিষয় আয়ত্ত করা খুবই দরকার।
আরও পড়ুনক্যাডেট কলেজে আপনার সন্তানকে ভর্তি করতে চান?০৭ মে ২০২৫৪. তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার
এখন সবকিছুতেই ব্যবহার হচ্ছে তথ্য ও প্রযুক্তি। এটা তোমাকে জানতেই হবে। তোমার সহপাঠীর চেয়ে এগিয়ে থাকতে হলে দরকার তথ্য ও প্রযুক্তি জানা। এআই, ডিপসিক থেকে শুরু করে আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি রয়েছে, তার কোর্স তুমি করতে পারো। সম্ভব হলে হার্ডওয়্যারসহ অ্যাডভান্স কত কিছু আছে শেখার! ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, প্রোগ্রামিংও তো কেউ কেউ শিখে নেয়। ভবিষ্যৎ জীবনে কিন্তু এগুলোও কাজে লাগতে পারে।
৫. জানার আছে অনেক কিছু
বর্তমানে বাংলাদেশে মোট প্রায় ১০৩টি জাদুঘর রয়েছে। এই জায়গা পুরোপুরি জানার। অনেক শিক্ষার্থীর মন চায় নতুন কিছু জানতে, নিজ চোখে দেখে শিখতে। তারা তাদের জানার ইচ্ছা মেটাতে পারে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘর, নারায়ণগঞ্জের লোকশিল্প জাদুঘর, ঠাকুরগাঁওয়ের লোকজন জীবন বৈচিত্র্য জাদুঘর, নেত্রকোনায় বাংলাদেশের প্রথম ভূমি জাদুঘর, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা পানি জাদুঘর, রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর, উত্তরা গণভবন, পঞ্চগড়ে পাথর জাদুঘর, শ্রীমঙ্গল চা জাদুঘর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভাসু মৎস্য জাদুঘর, আগারগাঁও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরসহ অনেক অনেক কিছু।
আরও পড়ুনপ্রাথমিকে ছুটি কমিয়ে পাঠদানের সময় বাড়ানোর পরিকল্পনা হচ্ছে: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা১৭ মে ২০২৫৬. ঘুরে আসি দূরে কোথাও
‘থাকব না কো বদ্ধ ঘরে দেখব এবার জগৎটাকে’—জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই কথাটি পাঠ্যবইয়ের পাতায় পড়েছ! বাইরের জগৎটা কেমন, তা জানার আগ্রহ থাকে অনেকের। এই সুযোগে দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ঘুরে দেখতে পারো। দেশের ভেতরে কত সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে, দেখলে চমকে যাবে। মন আনন্দে ভরে উঠবে। কক্সবাজার, সুন্দরবন, সিলেট, রাঙামাটি, সাজেক ভ্যালি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কুয়াকাটা আরও কত জায়গা আছে দেখার! এসব জায়গায় গেলে বাড়বে জানার পরিধিও।
আরও পড়ুনএসএসসি–এইচএসসির বোর্ডসেরাদের ১০ ও ২৫ হাজার টাকা দেবে সরকার, যেভাবে আবেদন ১৯ মে ২০২৫৭. হাত বাড়িয়ে সহযোগিতা
হাত বাড়ানো যায় দুভাবে। কিছু চাওয়ার জন্য এবং কিছু দেওয়ার জন্য। আবার হাত দিয়ে কাউকে টেনে তুলতে পারি। নিশ্চয়ই ভালো-মন্দ বুঝে আমরা হাতকে কাজে লাগাব। তা–ই না? এবার বলি আসল কথা। আশপাশের অন্তত একজন নিরক্ষরকে যদি অক্ষর শেখাতে পারি।
৮. বাগান করি সময় কাটাই
অনেকে শখ করে বাসার আঙিনায় বাগান করে থাকে। সেখান থেকে অনেক ফলমূল, শাকসবজি, ফুল ইত্যাদির ফলন দেখা যায়। এ রকম কাজের মধ্যে অনেক আনন্দ জোটে। খাবার প্রয়োজনও মিটে যায়। নিজের ফলানো ফসল খাওয়ার মজা অন্য রকম, তা নিশ্চয়ই বানান করে বুঝিয়ে দিতে হবে না। তাহলে বাগান করি, নিজের শখ পূরণ করি।
লেখক: রমজান মাহমুদ, সিনিয়র শিক্ষক,গবর্নমেন্ট সায়েন্স হাইস্কুল, ঢাকা