কিছু পদচিহ্ন রেখে যাওয়ার সুযোগ ছিল, কিন্তু সে রকম চমক নেই
Published: 2nd, June 2025 GMT
বাজেটে মন্দা, বেকারত্ব ও বিদেশ নির্ভরতার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দেশের ৫৪তম বাজেট সম্পর্কে এক প্রতিক্রিয়ায় দলটি বলেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রথম বাজেট। সেই হিসেবে এটি একটি অনির্বাচিত সরকার প্রণীত বাজেট। স্বভাবতই এতে কোনো কাঠামোগত মৌলিক পরিবর্তনের সুযোগ নেই। তবে কিছু পদচিহ্ন রেখে যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু সে রকম কোনো চমক বাজেট দেখাতে পারেনি।
সিপিবি সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, এবারের বাজেট শুধু গতানুগতিক নয়, চমকহীনও বটে। এ বাজেট সংকোচনমূলক ও মন্দার বাজেট। এই বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং আইএমএফ-এর নির্দেশ অনুযায়ী ‘বেল্ট টাইট’ করে ব্যয় কমানোর জন্য সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মোট বাজেটের আয়তন, মোট উন্নয়ন ব্যয়, মোট ঋণপ্রবাহ এক কথায় উৎপাদনশীল ব্যয় প্রসারের ওপর এই বাজেটে কোনো মনোযোগ দেওয়া হয়নি। ফলে আগামীতে প্রবৃদ্ধির যে টার্গেট ঠিক করা হয়েছে ৬ শতাংশের মতো, তা কার্যকর হবে না। বিশ্বব্যাংকের প্রক্ষেপণই বলে দেয় এই প্রবৃদ্ধির হার ৩ শতাংশের কাছাকাছি নেমে যেতে পারে। এর ফলে এ কথা প্রায় নিশ্চিত যে, আগামীতে প্রবৃদ্ধি কমবে, বেকারত্ব ও দারিদ্র বাড়বে।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, এবারের বাজটের প্রত্যাশা ছিল- লুটপাটকারীদের টাকা, পাচারকারীদের টাকা, ঋণখেলাপি ও কালো টাকার মালিকদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করে বাজেটের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও দারিদ্র বিমোচনে অন্তবর্তীকালীন সরকার বিশাল পরিমাণ ব্যয় বরাদ্দে স্বচেষ্ট হবে। বৈষম্য কমিয়ে আনার জন্য অতি ধনীদের কাছ থেকে সম্পদ কর আদায় করে বাজেটকে আরও বৈষম্যবিরোধী ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ নির্ভর করা হবে। কিন্তু এ দিক দিয়ে সুদের বোঝা ও রাজস্ব তোলায় ব্যর্থতার জন্য বাজেট তা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। কিছু সামান্য এদিক-ওদিক শুল্ক বাড়ানো-কমানো ও নিম্ন আয়ের মানুষের কর ছাড় ও সামাজিক সুরক্ষা আওতায় কিছু সংস্কার ছাড়া বাকি সব জায়গায় কোনো পদচিহ্নই রাখতে পারেনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, এরপরও সুদের হার বেশি, ছোট মাঝারি শিল্প, কৃষকের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, তেল-গ্যাস বিদ্যুৎ খরচ বৃদ্ধি এবং আমদানিকৃত কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতির দাম বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে এই বাজেটের নিম্ন-মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও কৃষকের মধ্যে কোনো সুখবর নেই। এই বাজেট তাই গণতান্ত্রিকও নয়। এই বাজেট অবস্থা স্থিতিশীল রেখে আগামী বছরের জুনের আগে নির্বাচিত সরকারের কাছে বাজেট বাস্তবায়নের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রচিত একটি বাজেট। যেসব পদচিহ্ন রেখে যাওয়ার বড় বড় কথা অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, তা তার বাজেটে শেষ পর্যন্ত আর স্থান পায়নি। এখন মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং টাকার মান কিছুটা স্থির করতে সরকার সক্ষম হয়েছে বটে, তবে এই বাজেটে সেটা নিশ্চিত করতে গিয়ে মন্দা বেকারত্ব বিদেশ নির্ভরতার বিপদ ডেকে আনার সমূহ আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব জ ট ২০২৪ ২৫ এই ব জ ট পদচ হ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ভুট্টা ক্ষেতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ জনের মৃত্যু
পঞ্চগড়ে ভুট্টা ক্ষেতে কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কলেজ শিক্ষার্থীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন একজন।
বুধবার (৪ জুন) সকালে সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের ফকিরের হাট এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল্লা হিল জামান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মারা যাওয়ারা হলেন- ধাক্কামারা ইউনিয়নের বেংহারি পাড়ার সফিউল ইসলামের ছেলে রব্বানী (৩৫), লিয়াকত আলীর ছেলে শাহীন ইসলাম (৪৫) এবং কলেজছাত্র জামিদুল ইসলাম। আহত ব্যক্তির নাম জয় ইসলাম। তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
উখিয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রের দেয়াল ধসে রোহিঙ্গা যুবক নিহত
হাকিমপুরে বজ্রপাতে নারীর মৃত্যু
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধাক্কামারা ইউনিয়নের ১৪ জনের একটি দল চুক্তিতে ফকিরের হাট এলাকার একটি ভুট্টা ক্ষেতে কাজ করছিল। ক্ষেতে আগেই পড়ে ছিল বৈদ্যুতিক লাইনের একটি ছেঁড়া তার। কাজের সময় সেখানে বিদ্যুৎ ছিল না। হঠাৎ করে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হলে কয়েকজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। ঘটনাস্থলেই মারা যান কলেজছাত্র জামিদুল ইসলাম। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান রব্বানী ও শাহীন ইসলাম।
আহত জয় ইসলাম বলেন, “ভুট্টা ক্ষেতেই পড়ে ছিল বৈদ্যুতিক লাইনের তার। তখন বিদ্যুৎ ছিল না। হঠাৎ পা ঝিনঝিন করতে থাকে, দেখি অন্যরাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছে। আমি দৌঁড়ে গিয়ে বারবার বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দেই, কিন্তু কেউ ফোন ধরেনি। পরে আরো অনেকে ফোন দিয়ে জানালে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়। তারপর আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন এলাকাবাসী। আমার ভাই শাহীন ইসলাম বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে ছটফট করছিল।”
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আবুল কাশেম বলেন, “বিদ্যুৎস্পৃষ্ট অবস্থায় চারজনকে হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে তিনজন মৃত ছিলেন। একজনকে ভর্তি করে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
ঢাকা/নাঈম/মাসুদ