অলিগলিতে উঠেছে কোরবানির পশু, খামারে বিক্রি কেজি দরে
Published: 4th, June 2025 GMT
পবিত্র কোরবানির ঈদের আর মাত্র দুই দিন বাকি। আগামী ৭ জুন মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীর পশুর হাটগুলো জমে উঠেতে শুরু করেছে। একইসঙ্গে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাট বাদে বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা পশু বিক্রি শুরু করছেন। বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা পশুর খামারগুলোতেও কোরবানির পশু বিক্রি শুরু হয়েছে। কোনো কোনো খামারে কেজিপ্রতি ৫৫০ টাকা দরে (লাইভ ওয়েট) বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশু।
বুধবার (৪ জুন) রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার ত্রিমোহনী, গৌরনগর, বাসাবো মাদারটেক, গোড়ান ও রামপুরা এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এবার রাজধানীর মেরাদিয়া ও আফতাবনগর আবাসিক এলাকায় কোরবানির পশুর হাট বসছে না। তাই রামপুরা, বনশ্রী, মেরাদিয়া, দক্ষিণ বনশ্রী, মাদারটেক, নন্দীপাড়া এলাকায় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা পশু বিক্রি শুরু করছেন। এর আগে এসব এলাকায় মৌসুমী ব্যবসায়ী ও খামারিরা কোরবানির পশু বিক্রি করেননি। তাই এবার দুইটি বড় কোরবানির হাট না বসায় রামপুরা, বনশ্রী, মেরাদিয়া, দক্ষিণ বনশ্রী, মাদারটেক, নন্দীপাড়ায় বসবাসরত এলাকাসী ডেমরার আমুলিয়া আলীগড় মডেল কলেজের উত্তর পাশের খালি জায়গায় হাট ও উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘ ক্লাব সংলগ্ন হাটে ছুটছেন। একই সঙ্গে অলিগলিতে গড়ে ওঠা মৌসুমি ব্যবসায়ী ও খামারীদের পশু দেখতে ভিড় করছেন সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী।
ব্যবসায়ী ও খামারিরা মনে করছে, ঈদের আগে বুধবার (৪ জুন) অফিস আদালতের শেষ কর্মদিবস। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থেকে শুরু হচ্ছে সরকারি ছুটি। তাই বৃহস্পতিবার থেকেই কোরবানির পশুর হাটগুলো পুরোপুরি জমে উঠবে। গত কয়েদিন ধরে হাটগুলোতে পশু বিক্রির পরিমান কম হয়েছে। ক্রেতারা শুধু দর-দাম জানছেন। বৃহস্পতিবার থেকে পুরোদমে পশু কেনাবেচা শুরু হবে আশা করছেন ব্যবসায়ি ও খামারিা।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাঘুরে দেখা গেছে, মৌসুমি ব্যবসায়ি তাদের পচ্ছন্দসই জায়গায় অর্থাৎ রাস্তার পাশে, অলিগলি ও বাসা-বাড়ির গ্যারেজে কোরবানির পশু বিক্রি করছেন। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা না আসলেও স্থানীয় এলাকাবাসীরা সেখান থেকে পশু কিনছেন। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেছে আশপাশের এলাকার বাসীন্দারা পশু দেখতে ভিড় করছেন।
পূর্ব বাসাবোর সরদারবাড়ি কবরস্থানের পাশে একটি বাড়ির গ্যারেজে এবার পশু বিক্রি করছেন স্থানীয় বাসীন্দা শহীদুল ইসলাম ও তার অংশীজন। তিনি এবার দিনাজপুর থেকে ছোট, মাঝারি ও বড় সাইজের প্রায় ৪০টি গরু বিক্রির জন্য এনেছেন। ইতোমধ্যে ১০টি গরু বিক্রি হয়েছে বলে জানা গেছে। একইভাবে মাদারটেক আব্দুল আজিজ হাই স্কুল ও কলেজের পাশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গরু বিক্রি করতে দেখা গেছে। আর গোরান বাজার, দক্ষিণ বনশ্রী মসজিদ মার্কেট ও ইউনিটি এইড হাসপাতালের পাশে কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ীদের ছাগল বিক্রি করতে দেখা গেছে।
আরো পড়ুন:
জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাট: ছোট ও মাঝারি গরুর বিক্রি বেশি
লক্ষ্মীপুরে কোরবানির হাট: কম দামে খুশি ক্রেতা, হতাশ বিক্রেতা
এদিকে এবারই প্রথম দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার ই-ব্লকে এক ব্যবসায়ী ময়মনসিংহ থেকে ৮টি গরু এনেছেন। তবে স্থানীয় বাড়িওয়ালাদের চাপে বি-ব্লকের কেরফা গলিতে গরুগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়।
খিলগাঁও এলাকার ত্রিমোহনী গৌরনগর এলাকায় গড়ে উঠেছে ফ্রেশি ডট ফার্মের গরুর খামার। এখানে কেজি দরে বা লাইভ ওয়েটে গরু বিক্রি করতে দেখা গেছে। প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা দরে গরু বিক্রি করা হচ্ছে। তবে বড় সাইজের গরু কিনলে দাম কিছুটা কম রাখা হবে। প্রতিষ্ঠানটি গরু বিক্রির পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মাংস সরবরাহ করে থাকে।
দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার সি ব্লকে আলী এগ্রো লিমিটেড কোরবানির পশু বিক্রি করছে। এবারই প্রথম প্রতিষ্ঠানটি দক্ষিণ বনশ্রীতে এভাবে কোরবানির পশু বিক্রি করছে। সেখানকার দায়িত্বরত একজন কর্মচারী জানান, ১৫টি মাঝারি ও বড় সাইজের গরু আনা হয়েছে। ক্রেতারা আসছেন, দেখছেন, দর-দাম করছেন। ইতোমধ্যে কয়েকটি গরু বিক্রি হয়েছে। আশা করছি, ঈদের আগেই সবগুলো গরু বিক্রি হয়ে যাবে।
এদিকে দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার ডি ব্লকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পঞ্চাশোর্ধ্ব এক নারীকে দুইটি খাসি বিক্রি করতে দেখা গেছে। দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২৮ হাজার টাকা এই জোড়া খাসির দাম চাচ্ছি। কেউ বলছে ২০ হাজার টাকা, আবার কেউ বলে ২২ হাজার টাকা। আরেকটু দাম বাড়ালেই দিয়ে দেব।
ঢাকা/এনটি/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র হ ট ঈদ উৎসব ঈদ ব যবস য় এল ক র এল ক য় করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প থেকে হবিগঞ্জকে ‘বাদ দেওয়ার চেষ্টার’ প্রতিবাদ
হবিগঞ্জ-লাখাই-নাসিরনগর-সরাইল আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প থেকে হবিগঞ্জ অংশ বাদ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে—এমন অভিযোগে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। আজ মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে অংশ নেন হবিগঞ্জ সদর ও লাখাই উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের শতাধিক বাসিন্দা।
হবিগঞ্জ সদর ও লাখাইবাসীর ব্যানারে বেলা একটার দিকে এই মানববন্ধন শুরু হয়।
এতে বক্তারা বলেন, সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই-হবিগঞ্জ সড়ক প্রশস্তকরণে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ৬৬১ দশমিক ৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। কিন্তু নাসিরনগর থেকে সরাইল পর্যন্ত সড়কটির প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হলেও হবিগঞ্জ অংশ প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। অথচ সড়কটির উন্নয়ন হলে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে সিলেট বিভাগের দূরত্ব কমবে প্রায় ৪০ কিলোমিটার। এতে যাতায়াত খরচ কমবে। এ ছাড়া সড়কের পাশে শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে।
বক্তাদের দাবি, হবিগঞ্জ-লাখাই-নাসিরনগর-সরাইল আঞ্চলিক মহাসড়কটি হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কিশোরগঞ্জের কয়েকটি উপজেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যাতায়াত সহজ করেছে। প্রতিদিন ৫০ হাজারের বেশি যানবাহন ও কয়েক লাখ মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। চার জেলার মধ্যে আর্থসামাজিক, কৃষি ও শিল্পসংশ্লিষ্ট যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সড়কের উন্নয়ন হলে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের সঙ্গে বিকল্প ও কার্যকর সংযোগ গড়ে তোলার মাধ্যমে আঞ্চলিক অর্থনীতি বেগবান হবে। পণ্য পরিবহন সহজ হবে। স্থানীয় জনগণের ভ্রমণ ব্যয় ও সময় সাশ্রয়ী হবে। সেই সঙ্গে সড়কে নিরাপত্তাও বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু সড়কটির নাসিরনগর-সরাইল অংশে কাজ শুরু হলেও হবিগঞ্জ-লাখাই অংশ প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়ার চেষ্টা চলছে। যদি প্রকল্পের হবিগঞ্জ-লাখাই অংশ প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়া হয়, তাহলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। প্রয়োজন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে ঢাকার সঙ্গে সিলেট বিভাগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী, ইসলাম তরফদার ও এনামুল হক, হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফা রফিক, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান, হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরী, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মফিজুর রহমান, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা লাভলী সুলতানা, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহ রাজীব আহমেদ প্রমুখ।