ইউক্রেনের ড্রোন হামলার জবাবে রাশিয়াকে ব্যবস্থা নিতেই হবে- এমন কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ঘণ্টাখানেকের বেশি সময় ফোনালাপের পরও যুদ্ধ থামার কোনো ইঙ্গিত মেলেনি। ট্রাম্প নিজেই বলেছেন, এই আলোচনা থেকে ‘তাৎক্ষণিক শান্তি’ আসবে না। খবর দ্যা গার্ডিয়ানের।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপে রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের হামলার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে তিনি পুতিনকে পাল্টা হামলা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাননি বলেও নিশ্চিত করেছেন ট্রাম্প। বরং আলোচনায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কথা হয়েছে। 

ট্রাম্প দাবি করেছেন, ইরান এই বিষয়ে গড়িমসি করছে এবং রাশিয়া এবিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে।

রোববার ইউক্রেন চারটি রুশ বিমানঘাঁটিতে দূরনিয়ন্ত্রিত ড্রোন হামলা চালায়। কিয়েভের দাবি, এতে মস্কোর প্রায় অর্ধশত যুদ্ধবিমান ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ‘অপারেশন স্পাইডারওয়েব’ নামে চালানো এই হামলার ভিডিও বুধবার প্রকাশ করে ইউক্রেন। স্যাটেলাইট চিত্রে অন্তত সাতটি ভারী বোমারু বিমান ধ্বংস হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

ফোনালাপে পুতিন বলেন, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়ে ইউক্রেন শুধু সময় নিতে চায়, যাতে তারা পশ্চিমা অস্ত্রের মজুদ বাড়াতে পারে। তাঁর ভাষায়, ‘ওদের পুরস্কার দেওয়ার কিছু নেই।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ইউক্রেনের সন্ত্রাসী হামলায় রাশিয়ার রেললাইন ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার শান্তি প্রস্তাবকে ‘একটি আলটিমেটাম’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁর দাবি, রাশিয়া চারটি দখলকৃত অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনা সরিয়ে নেওয়ার শর্ত জুড়ে দিয়েছে, যা কোনো বাস্তব সমাধান নয়।

ইস্তাম্বুলে সোমবার রাশিয়া-ইউক্রেন মধ্যবর্তী আলোচনায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে অগ্রগতি না হলেও বন্দি ও মৃতদেহ বিনিময়ে কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। রাশিয়া জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের দেওয়া ৩৩৯ জন অপহৃত শিশুর তালিকা নিয়ে কাজ করছে।

জেলেনস্কি জানান, ইউক্রেন আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ৫০০ বন্দি বিনিময়ের আশা করছে। তবে তিনি পুতিনের মধ্যস্থতা ছাড়া আর কোনো আলোচনাকে অর্থহীন বলে উল্লেখ করেন। একইসঙ্গে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রস্তাবিত ‘পুতিন-জেলেনস্কি-ট্রাম্প ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে’ অংশ নিতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।

পুতিন অবশ্য এই প্রস্তাবে ইতিবাচক নন। বরং তিনি ইউক্রেনের সাম্প্রতিক হামলাগুলোকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘এ অবস্থায় আলোচনার পরিবেশ নেই।’

এদিকে, পুতিনের সঙ্গে বুধবারই প্রথমবারের মতো কথা বলেছেন নবনির্বাচিত মার্কিন পোপ লিও চতুর্দশ। রাশিয়াকে শান্তির পথে একটি ‘ইতিবাচক পদক্ষেপ’ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন পোপ।

এই তিন নেতার আলোচনার দিনই ব্রাসেলসে ইউক্রেনের সামরিক সহায়তা বিষয়ে ৫২ দেশের একটি বৈঠকে ইউরোপীয় দেশগুলো নতুন উদ্যোগ ঘোষণা করেছে। সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনে যৌথ পরিকল্পনা এবং সরবরাহ জোরদারের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে এ বৈঠকে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইউক র ন ইউক র ন র প রস ত ব র প রস

এছাড়াও পড়ুন:

ফাঁকা রাজধানী, ঘরমুখী মানুষের ভিড় টার্মিনালে

ঈদুল আজহার ছুটি শুরুর আগে বুধবার ছিল শেষ কর্মদিবস। ওই দিন বিকেল থেকেই রাজধানী ছাড়তে শুরু করেন ঘরমুখী মানুষ। গতকাল বৃহস্পতিবার বাস টার্মিনালে ছিল উপচে পড়া ভিড়। আর অনেকেই স্বস্তির জন্য ঢাকা ছাড়ছেন আজ শুক্রবার। এখন বাস টার্মিনালে ভিড় থাকলেও পাল্টে গেছে ব্যস্ততম রাজধানীর চিরচেনা দৃশ্য।

আজ সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে গণপরিবহন ছিল হাতে গোনা। ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাও ছিল কম। সড়কে মানুষের উপস্থিতি কম হলেও যাঁরা ছিলেন, গণপরিবহন পেতে তাঁদের ঝক্কি পোহাতে হয়েছে। আছে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগও।

রাজধানীর মহাখালীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন জান্নাতুল ফেরদৌস। ঈদের ছুটিতে গাজীপুরের কোনাবাড়ী যাচ্ছেন তিনি। গাড়ির জন্য দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার কথা জানালেন জান্নাতুল। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি, গাড়ি পাচ্ছি না। আবার এক-দুটি গাড়ি পেলেও সেখানে অনেক মানুষের ভিড়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। ভাড়াও দ্বিগুণের মতো চাচ্ছে।’

অবশ্য বাস টার্মিনালে ছিল মানুষের ভিড়। উত্তরের পথে দীর্ঘ যানজটের কারণে যাত্রীর চাপ আরও বেড়েছে। আগে টিকিট কেটেও অনেককে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বেশ ভোগান্তিতে পড়েছেন নারী ও শিশুরা। তবে যাত্রীদের নিরাপত্তায় পুলিশ ও র‍্যাবের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।

মহাখালী বাস টার্মিনালে রাজশাহী, বগুড়া ও নাটোরগামী ‘একতা’ পরিবহনের টিকিট বিক্রি করছেন সাঈদুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের হাতে বিক্রি করার মতো এখন আর কোনো টিকিট নেই। আমাদের যাত্রীরা এসে বসে আছেন, তাঁরা যেতে পারছেন না। আমাদের গাড়িগুলো যমুনা সেতুর ওপারে জ্যামে আটকে আছে।’

ঈদ সামনে রেখে বাড়ি ফিরছেন মানুষ। ফাঁকা হতে শুরু করেছে রাজধানীর রাস্তাঘাট। শুক্রবার বেলা দেড়টায় রাজধানীর কুড়িলে

সম্পর্কিত নিবন্ধ