রাশিয়ার বিমান ঘাঁটিতে ইউক্রেনের হামলার প্রতিশোধ নেবেন পুতিন: ট্রাম্প
Published: 5th, June 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাকে জানিয়েছেন যে, রাশিয়ার কৌশলগত বিমান ঘাঁটিতে ইউক্রেনের ব্যাপক ড্রোন হামলার ঘটনায় মস্কো ‘উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া জানাবে’।
চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে।
ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে বুধবার (৪ জুন) একটি পোস্টে লিখেছেন, তিনি পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং ১ জুনের হামলা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
আরো পড়ুন:
পুতিনের সঙ্গে বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব জেলেনস্কির
উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনে বড় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া: জেলেনস্কি
পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, “আমরা রাশিয়ার পার্কিং করা বিমানগুলোতে ইউক্রেনের সাম্প্রতিক ড্রোন হামলা এবং উভয় পক্ষের এর আগের বিভিন্ন হামলা নিয়ে আলোচনা করেছি.
ট্রাম্প জানান, তিনি পুতিনের সঙ্গে বুধবার প্রায় ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ফোনে কথা বলেছেন। ট্রাম্প আরো উল্লেখ করেন, “কথোপকথন ভালো ছিল। তবে এমন আলোচনা হয়নি যা দ্রুত শান্তি স্থাপন করবে।”
বুধবার মস্কো জানিয়েছে, রাশিয়ার অভ্যন্তরে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা চালানোর বিরুদ্ধে তাদের সামরিক অভিযান চালানোর বিষয়টি আলোচনার টেবিলে রয়েছে। এছাড়া এ ঘটনার জন্য ক্রেমলিন পশ্চিমাদের অভিযুক্ত করছে।
গত বুধবার রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলে চারটি সামরিক ঘাঁটিতে বড় ধরনের ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। এতে রাশিয়ার অন্তত ৪০টির বেশি যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করে কিয়েভ।
এই হামলার পর কিয়েভকে সংযত থাকতে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের প্রতি আহ্বান জানায় রাশিয়া। তবে ব্রিটিশ এবং মার্কিন কর্মকর্তা বলছেন, পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম রাশিয়ার দূর-পাল্লার যুদ্ধবিমানে ইউক্রেনের এই হামলার বিষয়ে তারা আগে থেকে কিছুই জানত না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টে ট্রাম্প বলেন, তিনি পুতিনের সঙ্গে ইরান সম্পর্কেও আলোচনা করেছেন। এতে পুতিন তেহেরানের সঙ্গে পারমাণকি কর্মসূচি নিয়ে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চলমান আলোচনায় অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ট্রাম্প বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বলেছি যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না এবং এ বিষয়ে আমি মনে করি আমাদের মধ্যে ঐকমত্য ছিল।” তিনি ইরানকে আলোচনা নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করা’ বা সময়ক্ষেপণেরও অভিযোগ করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ ইউক র ন ইউক র ন র বল ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের (সাদপন্থী) ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। পাশাপাশি তাঁরা সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে আগামী বছরের মার্চ মাসে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা করার কথাও বলেছেন। গত আয়োজনে ইজতেমা মাঠে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সাজা নিশ্চিতের দাবিও জানান তাঁরা।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। ‘হযরত ওলামায়ে কেরাম ও দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীবৃন্দের’ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
এর আগে গত রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তাবলিগের শুরায়ে নেজামের সাথী মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘কোরআন ও হাদিসের কথা যারা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে, তাদের ইসলামি দাওয়াতের এই ময়দানে জায়গা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রাসুল (সা.)-এর তরিকা, সুন্নাহ ও হাদিসের অনুসরণে যারা তাবলিগি কার্যক্রম পরিচালনা করে, কেবল তারাই ইজতেমা করার অধিকার রাখে।’
মুফতি আমানুল হক আরও বলেন, ‘সরকারের ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সাদপন্থীরা শেষবারের মতো টঙ্গী ময়দানে ইজতেমা করার অনুমতি পেয়েছিল। সেই প্রজ্ঞাপনে তাদের স্বাক্ষরও রয়েছে। সরকার তখনই বুঝেছিল—একই মাঠে দুই পক্ষের ইজতেমা আয়োজন দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’
২০২৪ সালের ডিসেম্বরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘গত বছরের ১৮ ডিসেম্বরের রাতে সাদপন্থীদের অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের বাংলাদেশি নেতা ওয়াসিফ সাহেবের চিঠিতে উল্লেখ ছিল, “যুগটা ব্যতিক্রমী, সবাই প্রস্তুতি নিয়ে আসবে”—এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই তারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ঘুমন্ত মুসল্লিদের ওপর টর্চলাইট নিয়ে হামলা চালানো হয়, যা একতরফা সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছিল।’ তিনি দাবি করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও প্রমাণিত হয়েছে, ‘এ হামলা একতরফাভাবে সাদপন্থীদের পক্ষ থেকেই হয়েছিল।’
মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী ও ইসলামবিরোধী মহলের প্ররোচনায় তাবলিগ জামাতে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীরা বেআইনি পথে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ ও কাকরাইল মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এমনকি তাঁরা সরকারকে বিব্রত করতে ‘যমুনা ভবন ঘেরাও’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিশৃঙ্খলাকারীদের কাকরাইল মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং শুরায়ে নেজামপন্থীদের কাকরাইলে দাওয়াত কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেয় বলে জানান মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারির ৬৩ নম্বর স্মারকে বলা হয়, সাদপন্থীরা শেষবারের মতো ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে টঙ্গীতে ইজতেমা করতে পারবে, এরপর আর নয়। তারা স্বাক্ষর দিয়ে সেই শর্ত মেনে নিয়েছিল।
শুরায়ে নেজামপন্থীরা বলেন, ‘আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করছি। আগামী বছরের মার্চে ইজতেমা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের কাছে ৪ দফা দাবি পেশ করেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। তাঁদের দাবিগুলো হলো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ইজতেমার তারিখ ঘোষণা, টঙ্গী ইজতেমা মাঠকে অস্থায়ীভাবে ‘কেপিআই’ হিসেবে ঘোষণা, বিদেশি মেহমানদের ভিসা সহজীকরণের পরিপত্র নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ ও গত বছরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মতিন উদ্দিন আনোয়ার, রুহুল আমিন এবং তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ে নেজাম) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।