রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত মাহবুব নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ মামলায় ১০ দিন আগে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে তাঁর স্ত্রীর পরিবারের অভিযোগ, তিনি নিজেই স্ত্রীকে খুন করেছেন। পরে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়েছেন।

মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছে, অনলাইন জুয়ায় আসক্ত মাহবুব স্ত্রী আকলিমা আক্তারকে (১৯) দিনের পর দিন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। নির্যাতনের বিষয়ে ভাইদেরও জানিয়েছিলেন তিনি। নির্যাতন করায় প্রায়ই কান্নাকাটি করতেন।

আকলিমার ভাই সুমন বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৬ মে বেলা ৩টায় ফোন করে আকলিমার ভাইকে জানানো হয় তাঁর বোন আত্মহত্যা করেছেন। পরে পুলিশ গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে।

আকলিমার ভাইয়ের দাবি, তাঁর বোনকে হত্যা করে মরদেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দিয়েছেন মাহবুব। পরে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিচ্ছেন।

তবে আসামি মাহবুবের পক্ষ থেকে আদালতে দাবি করা হয়েছে, আকলিমা আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যায় প্ররোচনার জন্য মাহবুব কোনোভাবে দায়ী নন।

জানতে চাইলে কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি আমিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আকলিমার মৃত্যুর ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার আগে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা সম্ভব নয়।’

যেভাবে সংসারে অশান্তির শুরু

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আকলিমা আক্তারের (১৯) গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। বছর দেড়েক আগে তাঁর সঙ্গে মাহবুবের (২৪) বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে কামরাঙ্গীরচরের ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন তিনি। বিয়ের সময় আকলিমার তিন ভাই সাধ্যমতো মাহবুবকে সহযোগিতা করেন। বিয়ের আগে মাহবুব বলেছিলেন, তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। পরে তিনি একটি রঙের কারখানায় কাজ নেন। দুজনের সংসার ভালোই চলছিল। তবে অনলাইনে জুয়ার নেশা এবং ঠিকমতো কাজ না করায় সংসারে অনটন দেখা দেয়। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়।

মামলার বাদী মো.

সুমন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বোনজামাই অনলাইনে জুয়ায় আসক্ত ছিলেন। ঠিকমতো কাজও করতেন না। সংসারে অভাব-অনটন শুরু হয়। আমরা সাধ্যমতো আমার বোনজামাইকে সাহায্য-সহযোগিতা করতাম। তারপরও আমার বোনকে মারধর করতেন মাহবুব।’

আকলিমার বড় বোনের স্বামী নূর আলম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরাই শ্যালিকাকে বড় করেছেন। মাহবুবের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর সে সুখেই ছিল। পরে শুনতে পান, তাঁর ভায়রা জুয়ায় আসক্ত হয়েছেন।

পুলিশ যা বলছে

আকলিমার পরিবারের এমন অভিযোগের বিষয়ে কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি, আকলিমার সঙ্গে মাহবুবের বিরোধের জের একটি শোবার খাটকে কেন্দ্র করে। আকলিমার ভাইদের কাছে খাট চেয়েছিলেন মাহবুব। সেই খাট দেননি তাঁরা। এ নিয়ে মাহবুবের সঙ্গে আকলিমার বিরোধ হয়। আবার মাহবুব অনলাইনে জুয়া খেলতেন, সেটি মামলার এজাহারে অভিযোগ এনেছেন আকলিমার ভাই সুমন।’

ওসি আরও বলেন, আকলিমার ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

মাহবুবের বিচার দাবি

আকলিমার ভাই প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বোনজামাই ঠিকমতো কাজ করতেন না। অনলাইন জুয়ায় আসক্ত ছিলেন। আয় না থাকায় সংসারে অশান্তির শুরু। এসব বিরোধের জের ধরে আমার বোনকে হত্যা করে ঝুলিয়ে দিয়েছেন মাহবুব। আমার বোনের মৃত্যুর জন্য দায়ী মাহবুবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ য় য় আসক ত আকল ম র ভ ই প রথম আল ক ন ম হব ব ম হব ব র আম র ব ন কর ছ ন করত ন তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন আইফোন কেনার মতো টাকা আয় করতে যুক্তরাষ্ট্রে লাগবে ৫ দিন, বাংলাদেশে কত দিন

ছবি: অ্যাপল

সম্পর্কিত নিবন্ধ