ঈদুল আজহা: দ্বিতীয় দিনেও পশু কোরবানি
Published: 8th, June 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনে রোববার সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পশু কোরবানি চলছে। আগের দিন যারা নানাবিধ কারণে কোরবানি দিতে পারেননি, রোববার তারা ঈদুল আজহার মূল এই আনুষ্ঠানিকতায় সামিল হচ্ছেন।
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন ঘুরে পশু কোরবানির এই দৃশ্য চোখে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকার বাসা-বাড়ির সামনে কিংবা সংলগ্ন রাস্তার ওপরে কোরবানি দিয়েছেন অনেকেই।
ধর্মীয় দিক থেকে ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ১১ জিলহজও কোরবানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামের বর্ণনায় এই দিনটি মর্যাদাপূর্ণ বলে উল্লেখ রয়েছে। মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শনিবার ঈদের দিনের ব্যস্ততা ও চাপের কারণে অনেকেই কোরবানি দিতে পারেননি। কসাই কিংবা পশু কোরবানির সামগ্রীর সংকটও ছিল। সময় ও প্রস্তুতি ছিল না অনেকের। কারও কারও গরু হাট থেকে বাড়ি পৌঁছেছে ঈদের দিন রাতে। এসব কারণে যারা কোরবানি করতে পারেননি, রোববার দ্বিতীয় দিনে তারাই পশু কোরবানি করছেন।
অবশ্য কেউ কেউ ইচ্ছে করেই ভিড় এড়িয়ে আজ কোরবানি করছেন, যাতে সময় নিয়ে কাজ করতে পারেন।
রাজধানীর তেজগাঁও, ফার্মগেট, টিকাটুলী, মুগদা, রামপুরা ও বাসাবো এলাকা ঘুরে ঈদের দ্বিতীয় দিনে পশু কোরবানির চিত্র চোখে পড়েছে। তবে সংখ্যায় কম ছিল। আর পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে কোরবানির পশু জবাই ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের ব্যস্ত দৃশ্য চোখে পড়েছে। ঈদের পরদিন কোরবানি দেওয়াটা এসব এলাকার ঐতিহ্য বলে জানান কেউ কেউ।
পুরান ঢাকার বংশাল এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকটি বাসার সামনে পলিথিন টানিয়ে পশু কোরবানির প্রস্তুতি চলছে। আবার অনেকেই ইতোমধ্যে পশু কোরবানি সম্পন্ন করেছেন। রাস্তার পাশে কয়েকজন তরুণ মাংস কাটছেন, পাশে দাঁড়িয়ে কসাই নির্দেশনা দিচ্ছেন। কিছু দূরে শিশু-কিশোররা দাঁড়িয়ে কোরবানির দৃশ্য দেখছে। লালবাগের বেশ কিছু রাস্তায়ও একই চিত্র দেখা যায়।
শেওড়াপাড়া পীরেরবাগ রোডের একপাশে পশু কোরবানির দৃশ্য চোখে পড়েছে। এই এলাকার মো. টিটু জানালেন, ঈদের দিন আত্মীয়স্বজনের বাসা-বাড়িতে যাওয়া হয়েছে। সময় ছিল না। এই কারণে আজ রোববার কোরবানির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
রামপুরা এলাকার শফিকুল ইসলাম বলেন, নির্ধারিত কসাই ঈদের দিন কয়েকটি জায়গায় কাজ নিয়ে ফেলেছিল। শেষ পর্যন্ত আমাদের সময় হয়নি। তাই আজ সকালে নিজেরাই জবাইয়ের ব্যবস্থা করেছি।
তেজগাঁওয়ের বাসিন্দা মোহাম্মদ রফিক বলেন, আমাদের কোরবানি কালই করেছি। কিন্তু আজ এক প্রতিবেশীর কোরবানিতে সহায়তা করছি।
গৃহবধূ সোনিয়া আক্তার জানান, পরিবারে সব আত্মীয়-স্বজন মিলে কোরবানি দিয়ে থাকেন তারা। গতকাল সারাদিন নানা জায়গায় সবাই ব্যস্ত ছিলেন। তাই আজ সকালে সবাই মিলে একসঙ্গে কোরবানি দিয়েছেন।
অন্যদিকে, আজও পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় সিটি করপোরেশনের তৎপরতা দেখা গেছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, কোরবানির দ্বিতীয় দিনেও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলছে।
ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, যেসব এলাকায় আজ কোরবানি হচ্ছে, সেখানে আমরা নির্ধারিত পয়েন্টে কর্মী পাঠিয়ে বর্জ্য অপসারণ করছি। ঈদের তিন দিনই আমরা মাঠে থাকব।
মধ্যপীরেরবাগ এলাকায় কাজ করা ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মী সিদ্দিক বলেন, কাল অনেক জায়গা পরিষ্কার করেছি, আজও সকাল থেকেই ব্যাগ-বালতি নিয়ে কাজে নেমেছি। অনেক বাসা থেকে নিজ উদ্যোগেও ময়লা নির্ধারিত পয়েন্টে আনা হচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদ ল আজহ দ ন ক রব ন ক রব ন র দ ঈদ ল আজহ ঈদ র দ ন এল ক র অন ক ই র বব র
এছাড়াও পড়ুন:
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য বাস সার্ভিস চালু
৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ঢাকা ও ময়মনসিংহের পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে পৌঁছানোর লক্ষ্যে এ বিশেষ যাতায়াত সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে শাখা ছাত্রদলের কর্মী নাফিস ইকবাল পিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফেসবুক গ্রুপে এ তথ্য জানিয়ে পোস্ট দেন। একইসঙ্গে শাখা সভাপতি সাগর নাইম ও সাধারণ সম্পাদক সাজিদ ইসলাম দীপুও তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে পরীক্ষার্থীদের এ সুবিধা গ্রহণের আহ্বান জানান।
আরো পড়ুন:
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান অর্জন ও বিতরণের জায়গা: ইউজিসি চেয়ারম্যান
ছাত্রদল জানিয়েছে, ক্যাম্পাস থেকে দুটি বাস ছাড়বে। একটি ঢাকা রুটে এবং অপরটি ময়মনসিংহ রুটে যাবে। প্রতিটি বাসে ৫০ জন করে মোট ১০০ জন শিক্ষার্থী এই ফ্রি সার্ভিসের আওতায় যাতায়াত করতে পারবেন। এজন্য শিক্ষার্থীদের অবশ্যই আগাম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গুগল ফর্মের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কেউ এই সার্ভিসের সুবিধা নিতে পারবেন না।
শিক্ষার্থীদের জন্য এ উদ্যোগ ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক শিক্ষার্থী পোস্ট দিয়ে ছাত্রদলের এ পদক্ষেপকে ‘শিক্ষার্থীবান্ধব ও সময়োপযোগী উদ্যোগ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
শাখা সভাপতি সাগর নাইম তার পোস্টে বলেন, “প্রতি বছর বিসিএসে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাফল্যের আলো ছড়িয়ে দেন। আমরা চাই এ সুনাম আরো দূরে ছড়িয়ে পড়ুক, আরো উজ্জ্বল হোক। এ ধারাবাহিক সাফল্যের পথে আপনাদের পাশে থাকতে, ভালোবাসা ও সম্মান জানাতে মাভাবিপ্রবি ছাত্রদল ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বিশেষ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছে।”
এ বিষয়ে শাখা সাধারণ সম্পাদক সাজিদ ইসলাম দীপু বলেন, “জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময়ই শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে থাকে। গত বিসিএসে আমাদের বড় ভাই বিসিএস প্রশাসনে প্রথম হয়েছেন। এটি শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নয়, সারা দেশের জন্যই গর্বের বিষয়। সেই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আমরা এবার পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালু করেছি।”
তিনি বলেন, “বিশেষ করে অনেক নারী শিক্ষার্থী আছেন, যারা ক্যাম্পাস থেকে পরীক্ষাকেন্দ্র অনেক দূরে হওয়ায় অংশ নিতে পারেন না। আবার অনেকে যানবাহন না পেয়ে দেরিতে কেন্দ্রে পৌঁছান। আমরা চাইনি কেউ যেন যাতায়াত সমস্যার কারণে বিসিএস পরীক্ষায় পিছিয়ে পড়েন। তাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ভাইয়ের সহায়তায় আমরা এ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছি।”
ঢাকা/আবিদ/মেহেদী