সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার চলনবিলে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যার পানিতে চলনবিলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে নাবি জাতের ইরি বোরো ধান ডুবে গেছে। ফলে কৃষকের কোরবানি ঈদের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে।

আকস্মিক বন্যায় চলনবিলের তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, সিংড়া ও গুরুদাসপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল তলিয়ে গেছে। ফলে ডুবে যাওয়া ধান কাটা নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষক। ধান কাটার শ্রমিক না পেয়ে হারভেস্টার মেশিন এনে ধান কাটার চেষ্টা করছে। কিন্তু পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকায় সে চেষ্টাও বিফলে গেছে।

সিরাজগঞ্জের তাড়াশের মাগুড়াবিনোদ এলাকার কৃষক মো.

আজগার আলী সাত বিঘা জমিতে ব্রি- ২৯ জাতের বোরো ধানের আবাদ করেছিলেন। ঈদের পর পরই সে ধান কাটার কথা ছিল। কিন্তু মাত্র তিন দিনের ভারী বর্ষণ, উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে তার জমির ধান ডুবে যাচ্ছে। যদিও কোমর সমান পানিতে উচ্চ মূল্যের পারিশ্রমিক দিয়ে কৃষি শ্রমিকরা কিছু ধান কেটে পলিথিনের নৌকা বানিয়ে নিকটবর্তী পাকা সড়কে ধান তুললেও অধিকাংশই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে ওই কৃষকের পরিবারের বার্ষিক খোরাকির ধানও জুটবেনা এমন ভাষ্য তার।
 
আবার এ অঞ্চলের অনেকে কৃষি শ্রমিক না পেয়ে বা ধান ডুবে যাওয়ায় মোট জমির এক মুঠো বোরো ধান কাটতেও পারছেন না বলেও জানান ভুক্তভোগী কৃষক রাফী। তিনি জানান, তবে আগাম জাতের বোরো ধান আবাদ করা কৃষকেরা আকস্মিক বন্যার ১২ থেকে ১৫ দিন পূর্বেই কাটা শেষ করেছেন।

তাড়াশের ঘরগ্রাম এলাকার কৃষক মো. ইসমাইল হোসেন জানান, তাড়াশ উপজেলার সগুনা, মাগুড়াবিনোদ ও নওগাঁ ইউনিয়ন এলাকার কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ টি গ্রামের পাকা বোরো ধানের জমিতে এখন হাঁটু বা কোমড় সমান পানি আছে।

জানা গেছে, চলনবিলের আটটি উপজেলার একইরকম অবস্থা। আকস্মিক বন্যায় সব ধান পানিতে ডুবে গেছে। 

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রকৃতির ওপর কারো হাত নেই। তারপরও যতটুকু পারা যায় জমির পাকা ধান ঘরে তোলার জন্য কৃষকদের চেষ্টা চালিয়ে যাবার পরামর্শ দেন তিনি। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ ধ নক ষ ত বন য উপজ ল র চলনব ল

এছাড়াও পড়ুন:

যমুনার পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে যমুনা নদীর পানি। ফলে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদী ও খাল-বিলের পানিও বাড়ছে। এতে ফসলি জমিসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। 

শুক্রবার (৬ জুন) সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনার পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ সেন্টিমিটার বেড়েছে। পানির সমতল ১২ দশমিক ২৭ মিটার, যা বিপৎসীমার (১২ দশমিক ৯০ মিটার) নিচে রয়েছে। অপরদিকে, কাজিপুর উপজেলার মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ২৪ ঘণ্টায় ৪০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে (১৩ দশমিক ৯৫ মিটার), যা বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ দিনে সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীতে ২৮৭ সেন্টিমিটার ও কাজিপুরের মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ৩০৪ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যমুনায় দ্রুতগতিতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার উল্লাপাড়া, তাড়াশ ও শাহজাদপুর উপজেলার চলনবিল অধ্যুষিত এলাকায় দেরিতে রোপণ করা পাকা বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। 

আরো পড়ুন:

হবিগঞ্জে নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে, বাঁধে ধস

পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জে নদীর পানি বাড়ছে 

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন বলেন, “উজানের ঢল ও বৃষ্টির কারণে যমুনায় পানি বাড়ছে। দুই-একদিন পানি কিছুটা বাড়তে পারে। তারপর থেকে পানি স্থিতিশীল হয়ে কমতে শুরু করবে।”

সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আহসান শহীদ সরকার বলেন, “অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। বিশেষ করে তাড়াশ, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুরের চলনবিল এলাকায় দেরিতে রোপণ করা বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। চরাঞ্চলের নিম্নভূমিও প্লাবিত হয়েছে। এখনো ক্ষয়ক্ষতির সুনির্দিষ্ট হিসাব নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।”

ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যমুনার পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি