Prothomalo:
2025-11-03@03:24:46 GMT

কলমের অলৌকিক উল্টো যাত্রা

Published: 9th, June 2025 GMT

মরিয়ম (আ.)-এর বাবার নাম ইমরান, মায়ের নাম হান্নাহ। তিনি ছিলেন তাঁদের একমাত্র সন্তান। বৃদ্ধ বয়সে হান্নাহের গর্ভে মরিয়মের জন্ম হয়। হান্নাহ সন্তান লাভের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন। একদিন তিনি দেখলেন, একটি পাখি তার বাচ্চাকে খাবার খাওয়াচ্ছে।

এ দৃশ্য তাঁর মাতৃত্বের তীব্র আকাঙ্ক্ষাকে আরও উসকে দেয়। আল্লাহ তাঁর প্রার্থনা কবুল করেন। হান্নাহ গর্ভবতী হন এবং মানত করেন, সন্তান জন্মালে তাঁকে মসজিদুল আকসার সেবক হিসেবে উৎসর্গ করবেন।

হান্নাহের মেয়েসন্তান জন্ম নেয়। নাম রাখা হয় মরিয়ম, যার সুরিয়ানি ভাষায় অর্থ ‘খাদেম’ বা ‘সেবক’। মানত অনুযায়ী, মসজিদুল আকসায় সেবক হিসেবে উৎসর্গের জন্য এ নাম ছিল যথার্থ। (ফাতহুল বারি, আল্লামা আসকালানী, ৬/৩৬৫)

মরিয়ম (আ.

) বড় হন এবং বুদ্ধি-বিবেচনার বয়সে পৌঁছান। তখন প্রশ্ন ওঠে, পবিত্র উপাসনাগৃহের এই আমানত কার হাতে অর্পণ করা হবে? তৎকালীন প্রথা অনুযায়ী, কাহিনরা (উপাসনাগৃহের ধর্মীয় সেবায় নিয়োজিত পবিত্র আত্মারা) মরিয়মের তত্ত্বাবধানের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেন। (কাসাসুল কোরআন, মাওলানা হিফজুর রহমান, ১০/১৩)

আরও পড়ুনঅলৌকিক উট১৩ এপ্রিল ২০২৫মরিয়ম (আ.) বড় হন এবং বুদ্ধি-বিবেচনার বয়সে পৌঁছান। তখন প্রশ্ন ওঠে, পবিত্র উপাসনাগৃহের এই আমানত কার হাতে অর্পণ করা হবে?

হজরত জাকারিয়া (আ.) ছিলেন মরিয়মের খালা ইয়াশির স্বামী এবং একজন নবী, তাই তাঁর চেয়ে উপযুক্ত তত্ত্বাবধায়ক আর কেউ ছিলেন না। কিন্তু তত্ত্বাবধান নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। মীমাংসার জন্য লটারির আয়োজন করা হয়।

সেকালে লটারি হতো কলমের মাধ্যমে। প্রত্যেকে তাওরাত লেখার কলম পানিতে নিক্ষেপ করেন। যাঁর কলম স্রোতের বিপরীতে চলবে, তিনি বিজয়ী হবেন। সবার কলম স্রোতে ভেসে যায়, কিন্তু জাকারিয়া (আ.)-এর কলম স্রোত উপেক্ষা করে উল্টো দিকে চলে।

কলম স্রোত উপেক্ষা করে উল্টো দিকে চলে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কলম স র ত র কলম

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য

দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।

আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।

লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।

আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা।

কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ