Prothomalo:
2025-07-31@04:09:06 GMT

কলমের অলৌকিক উল্টো যাত্রা

Published: 9th, June 2025 GMT

মরিয়ম (আ.)-এর বাবার নাম ইমরান, মায়ের নাম হান্নাহ। তিনি ছিলেন তাঁদের একমাত্র সন্তান। বৃদ্ধ বয়সে হান্নাহের গর্ভে মরিয়মের জন্ম হয়। হান্নাহ সন্তান লাভের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন। একদিন তিনি দেখলেন, একটি পাখি তার বাচ্চাকে খাবার খাওয়াচ্ছে।

এ দৃশ্য তাঁর মাতৃত্বের তীব্র আকাঙ্ক্ষাকে আরও উসকে দেয়। আল্লাহ তাঁর প্রার্থনা কবুল করেন। হান্নাহ গর্ভবতী হন এবং মানত করেন, সন্তান জন্মালে তাঁকে মসজিদুল আকসার সেবক হিসেবে উৎসর্গ করবেন।

হান্নাহের মেয়েসন্তান জন্ম নেয়। নাম রাখা হয় মরিয়ম, যার সুরিয়ানি ভাষায় অর্থ ‘খাদেম’ বা ‘সেবক’। মানত অনুযায়ী, মসজিদুল আকসায় সেবক হিসেবে উৎসর্গের জন্য এ নাম ছিল যথার্থ। (ফাতহুল বারি, আল্লামা আসকালানী, ৬/৩৬৫)

মরিয়ম (আ.

) বড় হন এবং বুদ্ধি-বিবেচনার বয়সে পৌঁছান। তখন প্রশ্ন ওঠে, পবিত্র উপাসনাগৃহের এই আমানত কার হাতে অর্পণ করা হবে? তৎকালীন প্রথা অনুযায়ী, কাহিনরা (উপাসনাগৃহের ধর্মীয় সেবায় নিয়োজিত পবিত্র আত্মারা) মরিয়মের তত্ত্বাবধানের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেন। (কাসাসুল কোরআন, মাওলানা হিফজুর রহমান, ১০/১৩)

আরও পড়ুনঅলৌকিক উট১৩ এপ্রিল ২০২৫মরিয়ম (আ.) বড় হন এবং বুদ্ধি-বিবেচনার বয়সে পৌঁছান। তখন প্রশ্ন ওঠে, পবিত্র উপাসনাগৃহের এই আমানত কার হাতে অর্পণ করা হবে?

হজরত জাকারিয়া (আ.) ছিলেন মরিয়মের খালা ইয়াশির স্বামী এবং একজন নবী, তাই তাঁর চেয়ে উপযুক্ত তত্ত্বাবধায়ক আর কেউ ছিলেন না। কিন্তু তত্ত্বাবধান নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। মীমাংসার জন্য লটারির আয়োজন করা হয়।

সেকালে লটারি হতো কলমের মাধ্যমে। প্রত্যেকে তাওরাত লেখার কলম পানিতে নিক্ষেপ করেন। যাঁর কলম স্রোতের বিপরীতে চলবে, তিনি বিজয়ী হবেন। সবার কলম স্রোতে ভেসে যায়, কিন্তু জাকারিয়া (আ.)-এর কলম স্রোত উপেক্ষা করে উল্টো দিকে চলে।

কলম স্রোত উপেক্ষা করে উল্টো দিকে চলে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কলম স র ত র কলম

এছাড়াও পড়ুন:

জট কমাতে জাহাজ কমানোর উদ্যোগ

কনটেইনারভর্তি পণ্য নিয়ে একের পর এক জাহাজ আসছে। খালাস শেষে রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে বন্দর ছাড়ছে এসব জাহাজ। পণ্য পরিবহনের চাপ সামাল দিতে না পারায় বন্দরে কনটেইনার জাহাজের জট বাড়ছে। এই জট কমানোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের পথে চলাচলরত কনটেইনার জাহাজের সংখ্যা কমাতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

জাহাজ যাতে কম আসে সে জন্য বন্দরের নেওয়া পদক্ষেপ হতবাক করেছে শিপিং এজেন্টদের। শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, দুর্যোগের সময় ছাড়া কোনো বন্দরে চলাচলরত জাহাজের সংখ্যা কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার নজির বিশ্বে নেই। বরং বিশ্বের নানা বন্দর বা কনটেইনার টার্মিনালগুলোতে যাতে জাহাজ ভেড়ানো হয় সে জন্য শিপিং কোম্পানিগুলোকে উৎসাহ দেওয়া হয়। এ কাজের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বা টার্মিনাল পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলোর বিপণন বা বাণিজ্য দল রয়েছে। চট্টগ্রামে হচ্ছে উল্টোটা।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের পথে এখন ১১৮টি কনটেইনার জাহাজ নিয়মিত চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও চীনের বিভিন্ন বন্দরে এসব জাহাজ চলাচল করে। ২০ জুলাই বন্দরের এক সভায় বন্দরের পথে চলাচলরত ১৫টি জাহাজ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে ১৫টি জাহাজ কমানো হবে তার তালিকা শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনকে নিজ উদ্যোগে বন্দরকে দেওয়ার জন্য বলা হয় ওই সভায়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, জাহাজজটের কারণে বহির্বিশ্বে চট্টগ্রাম বন্দরের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান।

এ বিষয়ে জানতে বন্দর চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।

তবে শিপিং এজেন্টরা এখন পর্যন্ত কোনো জাহাজের নাম বন্দরকে দেয়নি, যেগুলো প্রত্যাহার করা হবে। তালিকা না দেওয়ায় গত মঙ্গলবার বন্দরের উপসংরক্ষক ক্যাপ্টেন মো. জহিরুল ইসলাম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে (বুধবারের মধ্যে) ১৫টি জাহাজের তথ্য দেওয়ার জন্য শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন, যেগুলো এই পথ থেকে প্রত্যাহার করা হবে।

শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, বন্দরের এ উদ্যোগ মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো। যেসব কারণে বন্দরে জাহাজজট হয়েছে, তা শনাক্ত করে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করা উচিত। জাহাজের সংখ্যা কমিয়ে জট কমবে না।

স্বাভাবিক সময় বন্দরের বহির্নোঙরে পাঁচ–ছয়টি জাহাজ অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু এখন জটের কারণে ক্রেনযুক্ত একেকটি জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর জন্য চার থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সাগরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

শিপিং ও বন্দর কর্মকর্তারা জানান, ঈদুল আজহার একটানা ১০ দিনের ছুটি, দুই দফায় পরিবহন ধর্মঘট, কাস্টমসের শাটডাউন কর্মসূচি ও কাস্টমসের শুল্কায়নের সফটওয়্যারের ধীরগতির কারণে বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এর জেরে কনটেইনার জাহাজের যে জট তৈরি হয়েছে, তা এখনো কমছে না। কারণ, কনটেইনারে পণ্য পরিবহন বাড়ছে।

এমন পরিস্থিতিতে বন্দরের নতুন উদ্যোগে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও শ্রীঙ্কার বন্দরগুলোতে বাংলাদেশমুখী কনটেইনারের জট তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন শিপিং এজেন্টরা। একইভাবে এসব বন্দর হয়ে ইউরোপ–আমেরিকামুখী রপ্তানি পণ্যের কনটেইনারের স্তূপ বাড়তে পারে ডিপোগুলোতে।

জানতে চাইলে কনটেইনার জাহাজ পরিচালনাকারী জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেডের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব অপারেশন মুনতাসীর রুবাইয়াত প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরের পথে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, চাহিদা বাড়লে কনটেইনার পরিবহনের ভাড়া বেড়ে যেতে পারে। এতে ভুক্তভোগী হতে পারেন ভোক্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ