গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতাকে ঘিরে মেতে উঠেছিল ‘জাগুসা’
Published: 10th, June 2025 GMT
গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতাকে ঘিরে উৎসবে মেতে উঠেছিল ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার জাগুসা গ্রাম।
সোমবার (৯ জুন) দিনভর জাগুসা গ্রামের পশ্চিম মাঠে চলে গ্রামীণ ঐতিহ্যের এই গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন। এইদিন সকাল থেকেই সাজ সাজ রব পড়ে এলাকাজুড়ে। প্রতিযোগিতাকে ঘিরে হাজারো মানুষ ভিড় করেন মাঠে। দর্শকদের উল্লাস আর গাড়োয়ানদের হাঁকডাকে মেতে ওঠে গোটা এলাকা।
প্রতিযোগিতার মূল মঞ্চ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সারি করে গরু ও গাড়ি নিয়ে প্রস্তুত ছিলেন গাড়োয়ানরা। বাঁশির শব্দে এক লাফে শুরু হয় প্রতিযোগিতা। গরুর গাড়ি নিয়ে ক্ষিপ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ছুটতে থাকেন গাড়োয়ানরা। একে অপরকে টপকে এগিয়ে যাওয়ার প্রাণপণ চেষ্টায় মুহূর্তেই জমে ওঠে মাঠ। দর্শকদের উল্লাসে মুখরিত হয় পুরো এলাকা।
প্রতিযোগিতা দেখতে এসেছিলেন পাশের কয়েকটি উপজেলার মানুষও। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপভোগ করেন দৌড় প্রতিযোগিতা। আয়োজন ঘিরে বসে যায় মেলা। গ্রামীণ মেলায় ছিল মনোহরী, কসমেটিকসসহ নানা ধরনের খাবারের দোকান।
ঝিনাইদহ সদর থেকে আসা দর্শক মাজেদা খাতুন বলেন, ‘আমরা প্রতিবছর এই দৌড় দেখতে আসি। খুব ভালো লাগে। এই ঐতিহ্য যেন হারিয়ে না যায়।’
আরেক দর্শক আশিকুর রহমান বলেন, ‘আজকের দিনে এমন আয়োজন যুবসমাজকে মাদক আর মোবাইল গেমস থেকে দূরে রাখতে পারে। এমন আয়োজন আরো বাড়ানো উচিত।’
আয়োজক কমিটির সদস্য জাগুসা গ্রামের খোকন হোসেন বলেন, ‘এই আয়োজন শুধু বিনোদন নয়, গ্রামীণ ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখারও একটা মাধ্যম। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যেন এসব দেখতে পায়, সেটাই চাওয়া।’
আয়োজকদের পক্ষ থেকে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ‘এবারের প্রতিযোগিতায় ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা ও যশোরসহ বিভিন্ন জেলার ১৬টি গরুর গাড়ি অংশ নেয়। প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন যশোরের লেবুতলা গ্রামের মিনটু গাড়োয়াল।’
ঢাকা/শাহরিয়ার/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা ‘অতিশয় বিরক্তিকর’: ট্রাম্প
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বৃহস্পতিবার ভোরের আলো ফোটার আগে বিপুল পরিমাণে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে ৫ শিশুসহ অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছেন। কিয়েভে যুদ্ধের এই পর্যায়ে রাশিয়ার এতটা ব্যাপক হামলাকে ‘অতিশয় বিরক্তিকর’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘রাশিয়া যা করছে, আমি মনে করি, তা অতিশয় বিরক্তিকর। আমি মনে করি, এটা সত্যিই জঘন্য।’
ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, কয়েক দিনের মধ্যে তাঁর বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ রাশিয়া সফরে যাবেন। বর্তমানে তিনি মধ্যপ্রাচ্য সফরে রয়েছেন।
গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় গ্রহণ করেই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ শুরু করেন ট্রাম্প। এরপর স্টিভ উইটকফ বেশ কয়েকবার মস্কো সফর করেছেন। সফরে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন। তখন ইউক্রেনে হামলা কমিয়েছিল রাশিয়া।
কিন্তু জুলাইয়ের মাঝামাঝি যুদ্ধ শেষ করতে রাশিয়াকে ৫০ দিনের সময় বেঁধে দেন ট্রাম্প। সম্প্রতি তা কমিয়ে ১০-১২ দিনে নামিয়ে এনেছেন তিনি। বেঁধে দেওয়া এই সময়ের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হলে রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার তিনি সেই হুমকি পুনরাবৃত্তি করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনে হামলা বাড়ানো নিয়ে সম্প্রতি বারবার হতাশা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
‘শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের ডাকা’
শুক্রবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, কিয়েভে রাশিয়ার আগের দিনের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর আমরা যে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছিলাম, তা শেষ হয়েছে।
জেলেনস্কি বলেন, ‘হামলায় দুর্ভাগ্যজনকভাবে এখন পর্যন্ত ৫ শিশুসহ ৩১ জন নিহত হয়েছেন। নিহত শিশুদের মধ্যে কনিষ্ঠজনের বয়স দুই বছর।’ তিনি জানান, রাশিয়া জুলাই মাসে ইউক্রেনে ৩ হাজার ৮০০–এর বেশি ড্রোন ও প্রায় ২৬০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। কিয়েভকে নিশানা করেই অধিকাংশ হামলা চালানো হয়েছে।
এদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জেলেনস্কি লেখেন, ‘(ইউক্রেনে) যা ঘটছে, তা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, ইউরোপীয় নেতারা এবং অন্যান্য অংশীদাররা স্পষ্টভাবে দেখছেন এবং রাশিয়ার নিন্দা জানাচ্ছেন। বিষয়টি আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’ যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং অন্যান্য বিশ্বশক্তির যৌথ চেষ্টার মাধ্যমেই রাশিয়াকে থামানো সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আগের দিন বৃহস্পতিবার অনলাইনে আয়োজিত এক সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়াকে যুদ্ধ থামাতে ‘চাপ দিয়ে বাধ্য করা’ সম্ভব। স্নায়ুযুদ্ধকালীন হেলসিংকি চুক্তির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
বক্তৃতায় জেলেনস্কি বলেন, ‘বিশ্ব যদি রাশিয়ার শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্য স্থির না করে, তাহলে এর অর্থ দাঁড়ায়, যুদ্ধ শেষ হলেও প্রতিবেশী দেশগুলোকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালিয়ে যাবে মস্কো।’
ধ্বংসস্তূপ থেকে সন্তানকে উদ্ধারের অপেক্ষায় থাকা এক মা অপর এক ব্যক্তিকে আলিঙ্গন করছেন। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে, ৩১ জুলাই ২০২৫