বেসরকারি খাতে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বিডি ভেঞ্চার লিমিটেডের চেয়ারম্যান হয়েছেন মামুন রশীদ। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।  

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মামুন রশীদ একজন ব্যাংকার ও নীতিনির্ধারণী পরামর্শক। ৪০ বছর ধরে তিনি ব্যাংকিং, পরামর্শক ও প্রতিষ্ঠান গঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করেছেন। বাংলাদেশের আর্থিক খাত সংস্কারে তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি দীর্ঘদিন ধরে নীতি ও কৌশলগত বিষয়ে কাজ করে আসছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিডি ভেঞ্চার প্রতিষ্ঠানটি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি), ন্যাশনাল ব্যাংক, গ্রিন ডেল্টা ইনস্যুরেন্স, ইবিএল সিকিউরিটিজ, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স, মাইডাস ফাইন্যান্সিং, এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইনস্যুরেন্স ও ডেটাএজ লিমিটেড প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত। এ ছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ের মালিকানায় রয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকার, হিসাববিদ ও পুঁজিবাজার–সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীরা।  

এর আগে মামুন রশীদ এএনজেড, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও সিটিব্যাংক এনএ–এর মতো আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে শীর্ষ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। যেখানে তিনি ব্যাংকিং সেবা সম্প্রসারণ ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির পথে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। বর্তমানে তিনি দেশীয় স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান শপ আপের প্রেসিডেন্ট। পাশাপাশি তিনি ফিন্যান্সিয়াল এক্সিলেন্স, ন্যাশনাল টি কোম্পানি এবং মেরিস্টোপস ক্লিনিক সোসাইটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্বে রয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

১৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ের ফল ‘শূন্য’

সিলেট নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার দুটি প্রকল্প হয়েছে। কিন্তু তার কোনো সুফল নগরবাসী পাচ্ছে না। বৃষ্টিতে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দ্রুত ভরাট হয়ে যাওয়া ড্রেন, নালা, খাল ও ছড়া পরিষ্কার এবং খননের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সিলেট নগরীতে ছোট-বড় ১১টি ছড়া (প্রাকৃতিক খাল) প্রবহমান। ছড়াগুলোর রয়েছে ১৬টি প্রশাখা। সবগুলো মিশেছে সুরমা নদীতে। ২৭ থেকে বেড়ে নগরীর ওয়ার্ড হয়েছে ৪২। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ওয়ার্ড সামলাচ্ছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তা। প্রকৃত চিত্র তার কাছে না থাকায় নতুন নতুন জটিলতা সামনে আসছে বলে মনে করছেন নগরবাসী।
এরই মধ্যে নতুন করে সিলেট সিটি করপোরেশন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড জলাবদ্ধতা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণে পৃথক প্রকল্প জমা দিলেও মন্ত্রণালয় অনুমোদন দেয়নি। জলাবদ্ধতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্পের পর প্রকল্প হলেও নেই স্বচ্ছতা। যথাযথ পরিকল্পনা, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতি, নদী ও খাল খনন এবং বৃষ্টির পানি সঠিকভাবে অপসারণের ব্যবস্থা করা গেলে দীর্ঘ মেয়াদে জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান মিলবে।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২৩ সালের মার্চে রিকাবীবাজার-চৌহাট্টা সড়কে কালভার্ট বড় এবং চৌহাট্টা-আম্বরখানা সড়কের সিভিল সার্জন অফিসের সামনে থেকে দরগা গেটের মূল ফটকের সামনে পর্যন্ত সড়কের নিচে বড় ড্রেন তৈরি করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়। একই সময়ে সোবহানীঘাটে ড্রেন প্রশস্ত করা হয়।
গত বছর কাজ শেষ হওয়ার পর প্রধান প্রধান সড়কের কয়েকটি ড্রেনের প্রবেশমুখ বড় করার উদ্যোগ নেয় সিসিক। এতে জলাবদ্ধতা নিরসনে কোনো কাজ না হওয়ায় বিভিন্ন সড়কের ড্রেনের পকেট কেটে বড় করা হয়। কিন্তু পকেট মুখগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় নগরীর প্রধান প্রধান সড়কে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমছে। কাজ করছে না নতুন ড্রেনগুলো। ফলে গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে সড়কে হাঁটুপানি জমে।
নগরবাসী মনে করেন, ছড়া-নর্দমার তলদেশে প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন বর্জ্যে ভরাট হওয়া, ছড়াগুলোতে অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও নর্দমার উন্নয়নকাজ ধীরগতিতে চলা এবং পানি চলাচলের স্বাভাবিক গতিপথ রুদ্ধ হওয়ায় নগরীতে জলাবদ্ধতা হচ্ছে।
বৃষ্টিতে নগরীর ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন সড়কে পানি দেখা দেয়। স্থানীয়দের পক্ষে বাহুবল ইউনিক ক্লাব জলাবদ্ধতা নিরসন ও ড্রেন নির্মাণের দাবিতে সিসিক প্রশাসকের কাছে গত বৃহস্পতিবার স্মারকলিপি দেন।
সিসিক ও পাউবো কর্মকর্তারা জানান, জলাবদ্ধতা নিরসন এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাবনা পাঠালে সময়ক্ষেপণ করে। ফলে যথাসময়ে কাজ শুরু ও শেষ করা যায় না। ঢল ও বৃষ্টির পানি নগরীর ব্যাপক ক্ষতি করে ফেলে। অথচ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৪ হাজার কোটি টাকার কাজ চলমান। সিসিক দীর্ঘ ১৪ বছরে বরাদ্দ পেয়েছে প্রায় ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা।
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ‘কানাইঘাট থেকে ছাতক পর্যন্ত সুরমা নদী খননের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ১ হাজার ৫০ কোটি টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা গেলে সুফল পাবে নগরবাসী।’
সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘১ হাজার ২২৮ কোটি টাকার প্রকল্প ছিল জলাবদ্ধতা নিরসনে। আমরা সেই অর্থে ৪৫০ কিলোমিটার ড্রেন করেছি। নতুন ১৪টি ওয়ার্ড সংযুক্ত হওয়ায় প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়িয়ে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সুপারিশ করা হলেও, বরাদ্দ অনুমোদন হয়নি।’
প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান আরও বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরবাসীকে সবার আগে সচেতন হতে হবে। ময়লা-আবর্জনা যত্রতত্র না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে রাখতে হবে।’

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ