কারামুক্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, “মিথ্যা মামলায় কারাবরনের মধ্যদিয়ে আমার মুখ বন্ধ করে রেখেছিল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার। ফাঁসির রায়ও দেওয়া হয়েছিল কিন্তু তাতেও ভয় পাইনি। এখন মুক্ত বাংলাদেশে সত্যের পক্ষে উচ্চস্বরে কথা বলে বাকি জীবনটা ন্যায়পূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাব।”

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে রংপুরের তারাগঞ্জে শুকরানা সমাবেশ ও ঈদ পুনর্মিলনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলাম বলেন, “১৬ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধচারণের মূল্য সবাইকে দিতে হয়েছে। ৫ আগস্ট আমরা মুক্ত হয়েছি। এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। শকুনের মতো কিছু শক্তি দেশ দখলের জন্য ওঁৎ পেতে আছে। তাদের প্রতিহত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

তিনি বলেন, “বিগত সময়ে যেসব আলেম-ওলামাদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে তা অন্যায়ভাবে হয়েছে। তাই ওইসব রায়ের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”

আজহার অভিযোগ করে বলেন, “মিথ্যা স্বাক্ষ্য আর বিচারপতিরা বিবেক বিক্রি করে অপরাধের নাটক সাজিয়ে আমাকে সাজা দিয়েছিলেন। এখন মুক্ত দেশে অপরাধের এসব সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে সংস্কার পরবর্তী অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রয়োজন। নির্বাচন কবে জানি না। তবে যদি আগামী এপ্রিলের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন হয়, তবে আমরা চাই ওই এপ্রিলের মধ্যেই যেন নির্বাচনের কাজ শুরু হয়। এবারের নির্বাচনে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে সৎ ও যোগ্যদের ক্ষমতায় আনতে হবে।”

সেসময় নিজ সংসদীয় আসন বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জের উন্নয়নে নিজের জীবন উৎসর্গ করার প্রতিশ্রুতি জানান সদ্য কারামুক্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম। 

পুনর্মিলনী ও শুকরানা সমাবেশে উপস্থিত থেকে আরও বক্তব্য রাখেন, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও রংপুর দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালনা পরিষদ সদস্য মাহবুবুর রহমান বেলাল, রংপুর মহানগর আমীর এটিএম আজম খান, জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রব্বানীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২২ আগস্ট মগবাজারের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন জামায়াতে ইসলামীর তখনকার সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম। সেসময় থেকেই তিনি কারাগারে ছিলেন।

শেষবার গ্রেপ্তারের আগে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রংপুরের বদরগঞ্জ এলাকায় এসেছিলেন তিনি। দীর্ঘ ১৪ বছর পর তিনি নিজের গ্রামের বাড়ি ফিরেছেন। তার নিজ সংসদীয় আসন বদরগঞ্জে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি রেখেছেন কর্মী সমর্থকরা।

ঢাকা/আমিরুল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আজহ র ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক নগরের মেয়র নির্বাচন সামনে রেখে ৭ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ আগাম ভোট দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বাদে অন্য কোনো নির্বাচনে নিউইয়র্কে এটাই সর্বোচ্চ আগাম ভোট পড়ার ঘটনা। আগামীকাল ৪ নভেম্বর নিউইয়র্ক নগরে মেয়র পদে ভোট গ্রহণ হতে যাচ্ছে।

গতকাল রোববার ছিল আগাম ভোট দেওয়ার শেষ দিন। এদিন প্রায় ১ লাখ ৫১ হাজার মানুষ আগাম ভোট দিয়েছেন। নগরের নির্বাচন কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, আগাম ভোট গ্রহণ শুরুর পর থেকে এটি এক দিনে সর্বোচ্চ ভোট পড়ার ঘটনা। তা ছাড়া এদিন ৩৫ বছরের কম বয়সী ভোটারদের উপস্থিতিও বেশি ছিল। এর মধ্য দিয়ে আগাম ভোট দেওয়া ভোটারদের গড় বয়সও কমে এসেছে। গড় বয়স ৫০ বছরে নেমে এসেছে।

আগের সপ্তাহের প্রথম দিকে কম বয়সী ভোটারের উপস্থিতি কম ছিল। ওই সপ্তাহের রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ৮০ হাজার নিউইয়র্কবাসী ভোট দিয়েছিলেন। তবে গত শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত এই সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ৩৫ বছরের কম বয়সী ১ লাখের বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন, যার মধ্যে শুধু গতকাল রোববারই এ বয়সী ভোটারের সংখ্যা ছিল ৪৫ হাজারের বেশি।

আরও পড়ুনমামদানিকে বারাক ওবামার ফোন, করলেন নির্বাচনী প্রচারের প্রশংসা০২ নভেম্বর ২০২৫

নিউইয়র্কে চলতি বছর মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটের সংখ্যা ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত মেয়র নির্বাচনের তুলনায় চারগুণের বেশি। এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি তাঁর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমো ও কার্টিস স্লিওয়ার চেয়ে এগিয়ে আছেন।

নিউইয়র্কে চলতি বছর মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটের সংখ্যা ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত মেয়র নির্বাচনের তুলনায় চারগুণের বেশি। এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি তাঁর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমো ও কার্টিস স্লিওয়ার চেয়ে এগিয়ে আছেন।

নিউইয়র্কে সর্বপ্রথম মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোট দেওয়ার সুযোগ তৈরি হয় ২০২১ সালে। ওই নির্বাচনে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ আগাম ভোট দিয়েছিলেন। তবে ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা যায়নি। ওই নির্বাচনে এরিক অ্যাডামস তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্লিওয়াকে দ্বিগুণের বেশি ভোটে হারিয়েছিলেন।

অবশ্য চলতি বছর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোট দেওয়া মানুষের সংখ্যা গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগাম ভোটকে ছাড়াতে পারেনি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১০ লাখ মানুষ আগাম ভোট দিয়েছিলেন। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তুলনায় মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোট দেওয়া মানুষের বয়স তুলনামূলক কম। এটা অবাক করা বিষয়। কারণ, সাধারণত যারা আগাম ভোট দেন তাঁদের গড় বয়স মোট নিবন্ধিতদের গড় বয়সের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে।

আরও পড়ুনব্যালটে মামদানি, অদৃশ্য ‘প্রার্থী’ ট্রাম্প১ ঘণ্টা আগে

চলতি বছরের মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটের সংখ্যা ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের তুলনায়ও অনেক বেশি। ওই সময় নিউইয়র্কে প্রায় ৪ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ আগাম ভোট দিয়েছিলেন। সে সময় আগাম ভোট দেওয়া ভোটারের অধিকাংশের বয়স ছিল ৫৫ বছরের বেশি।

চলতি বছরের মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটের সংখ্যা ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের তুলনায়ও অনেক বেশি। ওই সময় নিউইয়র্কে প্রায় ৪ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ আগাম ভোট দিয়েছিলেন। সে সময় আগাম ভোট দেওয়া ভোটারদের অধিকাংশের বয়স ছিল ৫৫ বছরের বেশি।

গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আগাম ভোট দেওয়া মানুষের গড় বয়স ছিল ৫১ বছর। তবে এবার মেয়র নির্বাচনে আগাম ভোটারদের গড় বয়স আরও কমে ৫০ বছরে নেমেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ