জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ও সদ্য কারামুক্ত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, “জনসমর্থন থাকলে কেউ পালায় না বরং জনগণই তাদের রক্ষা করে।”
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকালে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি কথাগুলো বলেন।
তিনি বলেন, ‘‘আমরা পালাই নাই, আমাদের কেউই পালায়নি। যারা বড় বড় কথা বলেছেন, তারাই আজ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। আর আমরা আজও দেশের মাটিতেই আছি, জনগণের মাঝে আছি।’’
কারাগারে বন্দি অবস্থায় তার মুক্তির জন্য যারা রোজা রেখেছেন, নামাজ পড়েছেন এবং কাবা শরীফের গিলাফ ধরে কান্নাকাটি করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘আল্লাহ তাদের দোয়া কবুল করেছেন। আমি তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি এখন মুক্ত ও স্বাধীন। এখন আমি আমার মতামত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে পারি। এ জন্য আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি।”
জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলাম বলেন, “জনসমর্থন থাকলে কেউ পালায় না। বরং জনগণই তাদের রক্ষা করে। আমাদের নেতা মীর কাসেম আলী সাহেব মামলার শুরুতে আমেরিকায় ছিলেন। অনেকেই তাকে দেশে না ফেরার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি বলেছিলেন, আমি কোনো অপরাধ করিনি, মরতে হলে নিজের দেশেই মরব। তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন। আর যারা বড় বড় কথা বলেছেন, তারাই আজ বিদেশে পালিয়ে আছেন।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম, রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল টিম সদস্য মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ, রংপুর মহানগর জামায়াতের আমির এটিএম আজম খান, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান পলাশসহ আরও অনেকে।
সৈয়দপুর থেকে তিনি রংপুর তারাগঞ্জে শুকরানা সমাবেশ ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
ঢাকা/সিথুন/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন
তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের।
দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত।
আরো পড়ুন:
রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন
টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়
প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।
তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।
গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে।
সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়।
ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে।
২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি