‘মারধরের’ ১২ দিন পর সাবেক প্রতিমন্ত্রীর চাচাতো ভাইয়ের মৃত্যু
Published: 12th, June 2025 GMT
রাজশাহীর পুঠিয়ায় ‘মারধরের’ ১২ দিন পর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সদস্য মফিজুল ইসলাম টুলু (৬০) মারা গেছেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে তিনি মারা যান।
স্বজনদের অভিযোগ, গত ১ জুন পুঠিয়ার বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম রফিক মফিজুল ইসলামকে মারধর করেন।
মারা যাওয়া মফিজুল ইসলাম পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সদস্য ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক। রাজনীতিতে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদ দারার চাচাতো ভাই ছিলেন মফিজুল ইসলাম।
আরো পড়ুন:
বরিশাল বিভাগে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু
রূপগঞ্জে গুলিবিদ্ধ সেই ব্যবসায়ীর মৃত্যু
মফিজুল ইসলামের চাচাতো ভাই মো.
গত ১ জুন মফিজুল ইসলাম পুকুর দেখতে যান। এ সময় রফিকুল ইসলাম ও তার ছেলেরা টাকা চান। মফিজুল ইসলাম টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে নির্যাতন করা হয়। পরে তার মোটরসাইকেলটি কেড়ে নেওয়া হয়। বিষয়টি পুলিশকেও জানানো হয়েছিল। বুধবার রফিকুলের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল উদ্ধার করে থানায় নিয়েছে পুলিশ।
রতন জানান, মারধরের পর মফিজুল ইসলামকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে তাকে বাড়িতে নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবারো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গতকাল বুধবার তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাড়িতে নেওয়ার পর সন্ধ্যায় তিনি অসুস্থ হন। এবার তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি সেখানে মারা যান।
মফিজুল ইসলামের এই স্বজনের দাবি, নির্যাতন এবং অপদস্থ করার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। এখনো থানায় অভিযোগ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম গত সোমবার ‘চাঁদা না পেয়ে’ লোকজন নিয়ে হাতিনাদা গ্রামের দুই ব্যক্তির বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন বলে অভিযোগ আছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার তাকে দল থেকেও আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। রফিকুল ইসলাম এখন আত্মগোপনে। এ কারণে তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
পুঠিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) দুলাল হোসেন জানান, বুধবার দুপুরে মফিজুল ইসলামের মোটরসাইকেলটি ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মোটরসাইকেলটি এখন থানাতেই আছে। রফিকুলের ছেলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, মোটরসাইকেলটি পুকুর পাড়ে পড়েছিল। তাই বাড়িতে এনে রাখা হয়।
তিনি জানান, বুধবার এ ব্যাপারে মফিজুল ইসলামের ছেলের সঙ্গেও কথা হয়েছিল। তিনি অভিযোগ করতে চাননি।
পুলিশের এই সদস্য জানান, মফিজুলের মৃত্যুর খবরটি তিনি শুনেছেন। পরিবার অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর আহত অভ য গ হয় ছ ল য গ কর ম রধর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।
সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।
স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা