রাজশাহীর পুঠিয়ায় ‘মারধরের’ ১২ দিন পর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সদস্য মফিজুল ইসলাম টুলু (৬০) মারা গেছেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে তিনি মারা যান। 

স্বজনদের অভিযোগ, গত ১ জুন পুঠিয়ার বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম রফিক মফিজুল ইসলামকে মারধর করেন। 

মারা যাওয়া মফিজুল ইসলাম পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সদস্য ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক। রাজনীতিতে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদ দারার চাচাতো ভাই ছিলেন মফিজুল ইসলাম।

আরো পড়ুন:

বরিশাল বিভাগে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু

রূপগঞ্জে গুলিবিদ্ধ সেই ব্যবসায়ীর মৃত্যু

মফিজুল ইসলামের চাচাতো ভাই মো.

রতন জানান, হাতিনাদা গ্রামে মফিজুল ইসলামের একটি পুকুর ইজারা নেওয়া আছে। পুকুরটি ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের স্বজনদের। পুকুর ইজারার মেয়াদ এখনো আছে। কিন্তু তারপরও টাকা দাবি করছিলেন রফিকুল। সম্প্রতি তার চাচাতো ভাই প্রায় এক লাখ টাকা দেন। কিন্তু আরো টাকা দাবি করা হচ্ছিল।

গত ১ জুন মফিজুল ইসলাম পুকুর দেখতে যান। এ সময় রফিকুল ইসলাম ও তার ছেলেরা টাকা চান। মফিজুল ইসলাম টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে নির্যাতন করা হয়। পরে তার মোটরসাইকেলটি কেড়ে নেওয়া হয়। বিষয়টি পুলিশকেও জানানো হয়েছিল। বুধবার রফিকুলের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল উদ্ধার করে থানায় নিয়েছে পুলিশ।

রতন জানান, মারধরের পর মফিজুল ইসলামকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে তাকে বাড়িতে নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবারো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গতকাল বুধবার তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাড়িতে নেওয়ার পর সন্ধ্যায় তিনি অসুস্থ হন। এবার তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি সেখানে মারা যান। 

মফিজুল ইসলামের এই স্বজনের দাবি, নির্যাতন এবং অপদস্থ করার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। এখনো থানায় অভিযোগ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম গত সোমবার ‘চাঁদা না পেয়ে’ লোকজন নিয়ে হাতিনাদা গ্রামের দুই ব্যক্তির বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন বলে অভিযোগ আছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার তাকে দল থেকেও আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। রফিকুল ইসলাম এখন আত্মগোপনে। এ কারণে তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

পুঠিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) দুলাল হোসেন জানান, বুধবার দুপুরে মফিজুল ইসলামের মোটরসাইকেলটি ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মোটরসাইকেলটি এখন থানাতেই আছে। রফিকুলের ছেলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, মোটরসাইকেলটি পুকুর পাড়ে পড়েছিল। তাই বাড়িতে এনে রাখা হয়।

তিনি জানান, বুধবার এ ব্যাপারে মফিজুল ইসলামের ছেলের সঙ্গেও কথা হয়েছিল। তিনি অভিযোগ করতে চাননি। 

পুলিশের এই সদস্য জানান, মফিজুলের মৃত্যুর খবরটি তিনি শুনেছেন। পরিবার অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর আহত অভ য গ হয় ছ ল য গ কর ম রধর উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সিজারের সময় নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সিজারিয়ান অপারেশনের সময় এক নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ক্লিনিকের চেয়ারম্যান ও আবাসিক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিয়ে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নবজাতকসহ তাদেরকে ক্লিনিক থেকে বের করে দেওয়া হয়। ওই রাতেই শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম হাসপাতালে) নেওয়া হয়। 

অভিযুক্ত চিকিৎসক পার্থ সমদ্দার কলাপাড়া পৌর শহরের জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আবাসিক চিকিৎসক এবং চেয়ারম্যান।শিশুটির

স্বজনদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) প্রসব বেদনা নিয়ে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন লালুয়ার ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার মেয়ে ও রফিকুলের স্ত্রী মিম বেগম। ওই রাতেই মিমের সিজারিয়ান অপারেশন করেন ডা. পার্থ সমদ্দার। সিজারের কিছুক্ষণ পরই টিকার কথা বলে নবজাতকের পায়ে একটি ইনজেকশন পুশ করা হয়। পরের দিন থেকেই নবজাতকের বাম পা ফুলতে শুরু করে এবং কান্না বাড়তে থাকে। বিষয়টি চিকিৎসক ও নার্সদেরকে অবহিত করলে তারা তাতে কর্ণপাত করেননি। উল্টো ওই ক্লিনিকের কর্মী ও নার্সরা নবজাতকের স্বজনদের সঙ্গে অসদাচরণের পাশাপাশি তাদের ক্লিনিক থেকে বের করে দেন। পরে অন্যত্র এক্সরে করে জানা যায়, সিজারের সময় নবাজতকের পা ভেঙে ফেলেছেন চিকিৎসক। 

নবজাতকের মা মিম আক্তার বলেছেন, বাচ্চা অনবরত কান্না করলে প্রথমে নার্স ও পরে চিকিৎককে অবহিত করা হয়। বাচ্চার বাম ফুলে গেলে তা জানানো হয়। কিন্তু, তারা এর কোনো প্রতিকার না করে আমাদের ধমকাতে থাকেন। ক্লিনিক ছেড়ে চলে যেতে চাপ প্রয়োগ করেন। 

নবজাতকের নানা সিদ্দিক বলেন, টিকার কথা বলে আমার নাতিকে শরীর অবশ করার ইনজেকশন দিয়েছিল নার্সরা। ইনজেকশনের কার্যকারিতা শেষ হওয়ার পরপরই আমার নাতি অনেক কান্না করে। আমার স্ত্রী নার্সদের বললে তারা তাকে মারধরের চেষ্টা করে। আমাদের সঙ্গে ক্লিনিকের সবাই অনেক খারাপ আচরণ করেছে। এভাবে রোগীদের সঙ্গে প্রাইভেট ক্লিনিকের কর্মকর্তারাও যদি অসদাচরণ করে, তাহলে আমরা কোথায় যাব?

সিজারের সময় নবজাকের পা ভাঙেনি, দাবি করে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান ডা. পার্থ সমদ্দার বলেছেন, আমি শিশু বিশেষজ্ঞ নই। নবজাতককে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেছেন, যদি সিজারিয়ান অপারেশনের প্রশিক্ষণ থাকে, তাহলে এনেস্থেসিস্টও সিজার করতে পারেন। তবে, এনেস্থেসিস্ট একাই সিজারিয়ান অপারেশন করতে পারেন না।

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাদারীপুরে পুকুরে ডুবে দুই ভাইয়ের মৃত্যু
  • সিলেটে রোগীর মৃত্যুর জেরে হাসপাতালে হামলা-ভাঙচুর, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া
  • সিজারের সময় নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ