উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে তলিয়ে গেছে বাদাম, পটলসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে কৃষি বিভাগ। 

সরেজমিনে তিস্তা ও ধরলা অববাহিকার কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে বাদাম ও পটলের ক্ষেত। উঠতি ফসল হারিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অনেক কৃষক। 

চলতি মাসের প্রথম দিকে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার অববাহিকার নিচু এলাকা তলিয়ে গেছে। এতে বাদাম, পটল, পাট, তিল, কাউনসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানিয়েছেন, চলতি মাসের শুরুতে হঠাৎ করে প্রথমে তিস্তা এবং পরে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিচু এলাকার বাদাম, পটল, তিল, কাউনসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত তলিয়ে যায়। তিন থেকে চার দিন নিমজ্জিত ছিল এসব ক্ষেত। পরে পানি নেমে গেলেও আর ফসল বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের বুড়ির বাজার এলাকার কৃষক আব্দুল জলিল বলেছেন, তিস্তার চরে ৫ বিঘা জমিতে বাদাম আবাদ করেছি। আগে এমন ক্ষতির মুখে পড়িনি। এ বছর বন্যার পানি এসে ক্ষেত তলিয়ে গেছে। আর ১০ দিন গেলেই ক্ষেত থেকে বাদাম তোলা হতো। 

কুড়িগ্রাম সদরের মোগলবাসা ইউনিয়নের কৃষক মাজেদুল বলেছেন, প্রায় এক একর জমিতে পটল আবাদ করেছি। টানা বৃষ্টি আর নদীর পানি বেড়ে পটল ক্ষেত তলিয়ে যায়। পানি নেমে গেছে, কিন্তু ক্ষেত রক্ষা করা যায়নি। এখন গাছ মরে যাচ্ছে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী উপ-পরিচালক ড.

মো. মামুনুর রহমান বলেছেন, বন্যার পানিতে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার অববাহিকায় সবজিসহ কিছু ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। পানি নেমে গেছে। কৃষকদের ক্ষতি নিরুপণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চলতি মৌসুমে কুড়িগ্রাম জেলার চরাঞ্চলগুলোতে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমির ফসলের মধ্যে বন্যার পানিতে নষ্ট হয়েছে ৩০০ হেক্টর জমির সবজিসহ বিভিন্ন ফসল।

ঢাকা/বাদশাহ্/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফসল র ক ষ ত ব ভ ন ন ফসল বন য র প ন ও ধরল

এছাড়াও পড়ুন:

ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’

ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।

আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।

আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।

রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।

রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।

কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?

কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।

রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।

রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।

এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।

রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ