রাজধানীর দিয়াবাড়ি হাটে কোরবানির গরু বিক্রি করে ক্রেতার কাছ থেকে জাল টাকা নিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়া নাটোরের সেই বৃদ্ধ কৃষক রইস উদ্দিনকে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা করেছেন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। এছাড়া, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস ওই বৃদ্ধকে ওমরাহ করার যাবতীয় খরচ দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

রইস উদ্দিন আড়াই বছর আগে ২৫ হাজার টাকায় একটি ষাঁড় কিনেন। পরম যত্নে গরুটি লালন-পালন করেন তিনি। এবার ঈদুল আজহায় গরুটি বিক্রি করে ধার-দেনা পরিশোধ করবেন, এ আশায় নাটোর থেকে রাজধানীর দিয়াবাড়ি হাটে আসেন সেই বৃদ্ধ। দিয়াবাড়ি হাটে গত ৫ জুন ১ লাখ ২৩ হাজার টাকায় গরুটি বিক্রি করেন তিনি। প্রতারক ক্রেতা গরুটি কিনে দ্রুত হাট থেকে চলে যান। রইস উদ্দিন এক রাখালকে খাবার কিনতে ১ হাজার টাকার একটি নোট দেন। এ সময় তিনি লক্ষ করেন, টাকার বান্ডিলের ওপরের একটি ১ হাজার টাকার নোট ও নিচের একটি ১ হাজার টাকার নোট বাদে সব টাকাই জাল। এ সময় তিনি হাতে টাকার বান্ডিল নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাল টাকার নোটের বান্ডিল হাতে কান্নারত অবস্থায় সেই বৃদ্ধের একটি ভিডিও ব্যাপক ভাইরাল হয়।

রইস উদ্দিন নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার ইটালি ইউনিয়নের পাকুরিয়া এলাকার জব্বার প্রামানিকে ছেলে। পরিবারে তার স্ত্রী, পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছেন।

জাল টাকায় গরু বিক্রি করা রইস উদ্দিন জানিয়েছেন, মায়ের কাছ থেকে গরুটি কিনেছেন তিনি। গরুটি লালন-পালন করতে বিভিন্ন দোকান থেকে বাকিতে গোখাদ্য কিনতে হয়েছে। 

ঈদের দুই দিন আগে হাটে তিনজন লোক এসে গরুটি দেখে পছন্দ করে। এর পর ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়। তারা টাকার বান্ডিল রইস উদ্দিনের হাতে দিয়ে গরু নিয়ে চলে যান। খাবার কিনতে এক রাখালকে বান্ডিল থেকে ১ হাজার টাকার একটি নোট দেওয়ার সময় রইস দেখতে পান, দুটো বাদে সব নোট জাল।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে ওই বৃদ্ধ বলেন, “প্রতারকরা যদি ধরা পড়ত, আমি খুশি হতাম। মানুষকে ঠকানোর বিচার হওয়া দরকার। কোনো মানুষ যেন আমার মতো এমন প্রতারণার শিকার না হন।”

সিংড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেছেন, রইস উদ্দিনের বিষয়টি জানার পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে পাঠানো হয় তার বাড়িতে। ইতোমধ্যে তাকে বিভিন্ন ব্যক্তি আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। গরু বিক্রির টাকার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ তিনি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তবে, আর্থিক সহায়তা করা কোনো ব্যক্তি প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।

ঢাকা/আরিফুল/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আর থ ক র একট

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে কারখানা চালু করল সুইজারল্যান্ডের সিকা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে নতুন কারখানা চালু করেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক রাসায়নিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিকা বাংলাদেশ। আজ সোমবার দুপুরে সোনারগাঁয়ের টিপরদী এলাকায় মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এমআইইজেড) প্রতিষ্ঠানটির কারখানা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।

কারখানার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো রেংগলি। বিশেষ অতিথি ছিলেন মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল। এ ছাড়া সিকা বাংলাদেশের প্রধান সঞ্জীবন রায়, সিকা এশিয়া প্যাসিফিক ম্যানেজমেন্টের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ইউমি কানসহ মেঘনা গ্রুপ ও সিকা বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিকা বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড সঞ্জীবন রায় বলেন, ‘সিকা বাংলাদেশ’ হলো সিকার ১০০তম সহযোগী প্রতিষ্ঠান, যা আমাদের জন্য এক গৌরবের মাইলফলক। সিকা এখন বিশ্বজুড়ে টেকসই উন্নয়ন ও উদ্ভাবনের প্রতীক। নির্মাণ ও শিল্প খাতে স্থায়িত্ব, শক্তি এবং উপকরণের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আমরা নিরন্তরভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশের নির্মাণ খাতের রাসায়নিক বাজার বর্তমানে প্রায় ১০ কোটি মার্কিন ডলারের। এ বাজারে সিকার অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৫০ কোটি সুইস ফ্রাঁ বিনিয়োগে নতুন কারখানা করেছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রায় ৮ হাজার বর্গমিটার জায়গাজুড়ে স্থাপিত কারখানাটিতে দুটি আধুনিক উৎপাদন লাইন রয়েছে। যার মধ্যে একটি লিকুইড অ্যাডমিক্সচার ও অন্যান্য কংক্রিট পণ্য উৎপাদনের জন্য এবং অপরটি পাউডারভিত্তিক পণ্য তৈরির জন্য। বিশ্বজুড়ে নির্মাণ ও মোটরগাড়ি শিল্পের জন্য বন্ডিং, সিলিং, রিইনফোর্সিং, প্রটেকশন ও ড্যাম্পিং পণ্যে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান সিকা বর্তমানে ১০০টিরও বেশি দেশে কার্যক্রম রয়েছে।

সিকা বাংলাদেশকে শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত রেটো রেংগলি বলেন, সিকা মানেই গুণগত মান, উদ্ভাবন এবং আধুনিক প্রযুক্তির সংমিশ্রণ। ‘সিকা’ বিশ্বজুড়ে নির্মাণ খাতে উচ্চমানের উদ্ভাবনী পণ্য এবং সমাধান দিয়ে আসছে। বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার।

সিকার এই যাত্রা মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বাংলাদেশের জন্য গর্বের বলে উল্লেখ করেন এমজিআইয়ের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘নির্মাণ খাতে সিকা বিশ্বে নেতৃত্বদানকারী একটি প্রতিষ্ঠান। সিকার বিনিয়োগ আমাদের অঞ্চলের সমৃদ্ধি বয়ে আনতে সহায়ক হবে। মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চল বিনিয়োগ নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য অবকাঠামোসহ যাবতীয় সুযোগ–সুবিধা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের পাশে থাকবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ