জাল টাকায় গরু বিক্রি করা সেই বৃদ্ধ পেলেন আর্থিক সহায়তা
Published: 13th, June 2025 GMT
রাজধানীর দিয়াবাড়ি হাটে কোরবানির গরু বিক্রি করে ক্রেতার কাছ থেকে জাল টাকা নিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়া নাটোরের সেই বৃদ্ধ কৃষক রইস উদ্দিনকে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা করেছেন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। এছাড়া, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস ওই বৃদ্ধকে ওমরাহ করার যাবতীয় খরচ দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
রইস উদ্দিন আড়াই বছর আগে ২৫ হাজার টাকায় একটি ষাঁড় কিনেন। পরম যত্নে গরুটি লালন-পালন করেন তিনি। এবার ঈদুল আজহায় গরুটি বিক্রি করে ধার-দেনা পরিশোধ করবেন, এ আশায় নাটোর থেকে রাজধানীর দিয়াবাড়ি হাটে আসেন সেই বৃদ্ধ। দিয়াবাড়ি হাটে গত ৫ জুন ১ লাখ ২৩ হাজার টাকায় গরুটি বিক্রি করেন তিনি। প্রতারক ক্রেতা গরুটি কিনে দ্রুত হাট থেকে চলে যান। রইস উদ্দিন এক রাখালকে খাবার কিনতে ১ হাজার টাকার একটি নোট দেন। এ সময় তিনি লক্ষ করেন, টাকার বান্ডিলের ওপরের একটি ১ হাজার টাকার নোট ও নিচের একটি ১ হাজার টাকার নোট বাদে সব টাকাই জাল। এ সময় তিনি হাতে টাকার বান্ডিল নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাল টাকার নোটের বান্ডিল হাতে কান্নারত অবস্থায় সেই বৃদ্ধের একটি ভিডিও ব্যাপক ভাইরাল হয়।
রইস উদ্দিন নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার ইটালি ইউনিয়নের পাকুরিয়া এলাকার জব্বার প্রামানিকে ছেলে। পরিবারে তার স্ত্রী, পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছেন।
জাল টাকায় গরু বিক্রি করা রইস উদ্দিন জানিয়েছেন, মায়ের কাছ থেকে গরুটি কিনেছেন তিনি। গরুটি লালন-পালন করতে বিভিন্ন দোকান থেকে বাকিতে গোখাদ্য কিনতে হয়েছে।
ঈদের দুই দিন আগে হাটে তিনজন লোক এসে গরুটি দেখে পছন্দ করে। এর পর ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়। তারা টাকার বান্ডিল রইস উদ্দিনের হাতে দিয়ে গরু নিয়ে চলে যান। খাবার কিনতে এক রাখালকে বান্ডিল থেকে ১ হাজার টাকার একটি নোট দেওয়ার সময় রইস দেখতে পান, দুটো বাদে সব নোট জাল।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ওই বৃদ্ধ বলেন, “প্রতারকরা যদি ধরা পড়ত, আমি খুশি হতাম। মানুষকে ঠকানোর বিচার হওয়া দরকার। কোনো মানুষ যেন আমার মতো এমন প্রতারণার শিকার না হন।”
সিংড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেছেন, রইস উদ্দিনের বিষয়টি জানার পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে পাঠানো হয় তার বাড়িতে। ইতোমধ্যে তাকে বিভিন্ন ব্যক্তি আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। গরু বিক্রির টাকার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ তিনি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তবে, আর্থিক সহায়তা করা কোনো ব্যক্তি প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।
ঢাকা/আরিফুল/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আর থ ক র একট
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবেশবান্ধব পর্যটনে সমন্বিত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
সিলেটের জাফলংসহ দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যবাহী এলাকাগুলোতে পরিবেশবান্ধব পর্যটন (ইকো-ট্যুরিজম) উন্নয়নে একটি সমন্বিত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত শ্রমজীবী মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করাই এই মহাপরিকল্পনার অন্যতম লক্ষ্য।
আজ শনিবার দুপুরে জাফলং এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন। এ সময় পাথর কোয়ারির শ্রমিকরা তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবি জানান।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করবে। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহের মধ্যে সমন্বয় করে প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে।
রিজওয়ানা বলেন, জাফলং একটি পরিবেশগতভাবে বিপন্ন এলাকা। এখানে পাথর উত্তোলনের জন্য আর কোনো ইজারা দেওয়া হবে না। অতিরিক্ত পাথর ও বালু উত্তোলনের কারণে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নষ্ট হচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে পুরো নদীব্যবস্থাকে হুমকিতে ফেলছে।
জাফলংয়ে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় ওই এলাকার স্টোন ক্রাশারগুলোও সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, অবৈধভাবে কেউ যাতে পাথর উত্তোলন করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা হবে। জাফলংয়ের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় আমরা কোনো আপস করব না।
পরিদর্শনের সময় দুই উপদেষ্টা জাফলংয়ের নদী ও পাথরভরা প্রাকৃতিক এলাকা জলযানে ঘুরে দেখেন এবং স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিবেশ ও পর্যটন উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে মতবিনিময় করেন। তারা জাফলং স্টোন মিউজিয়াম ও হরিপুর রেস্ট হাউজ এলাকায় গাছের চারা রোপণ করেন।
পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, জেলা প্রশাসক মো. শের মাহবুব মুরাদ, পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুর রহমান, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির ও পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার।