বিদেশি কোম্পানিকে বন্দর ব্যবস্থাপনার ইজারা দেওয়ার ঝুঁকিগুলো কী
Published: 14th, June 2025 GMT
বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পদগুলোর একটি হলো চট্টগ্রাম বন্দর। দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যিক কার্যক্রমের বেশির ভাগ পরিচালিত হয় এই বন্দরের মাধ্যমে। চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) দুবাইভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডের কাছে ইজারা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
সরকারের ভাষ্য, ডিপি ওয়ার্ল্ড পৃথিবীর অনেক দেশের বন্দর পরিচালনার কাজ করছে; তারা আন্তর্জাতিক মানের বন্দর পরিচালনায় দক্ষ। ডিপি ওয়ার্ল্ডের মতো অভিজ্ঞ কোম্পানির মাধ্যমে বন্দরের আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তি হস্তান্তর সম্ভব হবে এবং এর মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে এবং বন্দরের কার্যকারিতা বাড়বে।
সরকারের ভাষ্যের সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশ করে কেউ কেউ বলছেন, সমুদ্রবন্দর ইজারা কেবল অর্থনীতির বিষয় নয়; এটি একটি কৌশলগত বিষয়। এর ফলে জাতীয় সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ বিদেশি কোনো কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্ন উঠেছে।
এই চুক্তির আওতায় বিদেশি কোম্পানিগুলো পরিচালনা, বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত এবং প্রবেশাধিকারসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনার ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারবে। এর ফলে জাতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় বিদেশি কর্তৃত্বের অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে; ভবিষ্যতে এ সম্পদ ঘিরে জটিলতা ও বিরোধের আশঙ্কা বাড়তে পারে, এমনকি জাতীয় নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়তে পারে। ফলে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, চট্টগ্রাম বন্দরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া আদৌ কতটা যৌক্তিক?
চট্টগ্রাম বন্দর শুধু একটি সমুদ্রবন্দর নয়, এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি। দেশের মোট আমদানি-রপ্তানির প্রায় ৯২ শতাংশই এই বন্দরের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। খাদ্যপণ্য, জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের নির্বিঘ্ন প্রবাহ নিশ্চিত করতে এই বন্দর অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। এই বন্দর প্রতিবছর প্রায় তিন মিলিয়ন টিইইউ (২০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনারের একক হিসাব) কনটেইনার হ্যান্ডল (পরিচালনা) করে।
■ বন্দরের কর্মদক্ষতা কেবল অপারেশন ও ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করে না; ভৌগোলিক অবস্থান ও কাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার ওপরও নির্ভর করে। ■ বিদেশি অপারেটর নিয়োগ–সংক্রান্ত চুক্তির শর্তাবলি, সম্ভাব্য লাভ-ক্ষতি ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মূল্যায়ন করা আবশ্যক।বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূস যথার্থই চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে একে বাংলাদেশের ‘হৃৎপিণ্ড’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। হৃৎপিণ্ড সবল না হলে যেমন শরীরের রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়, তেমনি এই বন্দর দুর্বল হলে দেশের অর্থনীতির কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটবে।
এখন প্রশ্ন আসে, এই ‘হৃৎপিণ্ড’ কে সবল রাখতে আমরা কোন পথ বেছে নেব? সঠিক জীবনযাপন ও স্বাস্থ৵বিধি মেনে শরীরচর্চা করে হৃৎপিণ্ডের সক্ষমতা বাড়াব, নাকি সহজ সমাধানের খোঁজে ‘বিদেশি দাওয়াইয়ের’ ওপর নির্ভর করব? আগেই বলা হয়েছে, সিদ্ধান্তটি কেবল অর্থনৈতিক নয়, কৌশলগত এবং এর সঙ্গে জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা জড়িত।
২.নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ২০০৭ সালে নির্মিত হয়, যার প্রাথমিক সক্ষমতা ছিল ১.১ মিলিয়ন টিইইউ। সাম্প্রতিক সময়ে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো সংযোজনের মাধ্যমে এটি আরও উন্নত করা হয়েছে। বর্তমানে দেশীয় ব্যবস্থাপনায় টার্মিনালটি বছরে ১.৩ মিলিয়ন টিইইউর বেশি কনটেইনার হ্যান্ডল করছে, যা তার নির্ধারিত সক্ষমতার চেয়েও বেশি।
এনসিটি প্রতিবছর এক হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় করছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, যে টার্মিনাল দেশীয় ব্যবস্থাপনায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং লাভজনকভাবে কাজ করছে, সেটি বিদেশি পরিচালনায় হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তা আসলে কতটুকু বাস্তবসম্মত?
চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি ও আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। এটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম ব্যস্ত বন্দর হলেও এর দক্ষতা আন্তর্জাতিক মানের তুলনায় অনেক কম।
বর্তমানে একটি জাহাজ বার্থিংয়ের (জাহাজের অপেক্ষার সময়) জন্য চট্টগ্রামে তিন–চার দিন অপেক্ষা করে, সেখানে সিঙ্গাপুরে এটি মাত্র ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা এবং কলম্বোয় ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যেই সম্পন্ন হয়। একইভাবে কনটেইনার খালাসে চট্টগ্রাম বন্দরে ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগে, যা বিশ্বের শীর্ষ বন্দরে সাধারণত ২–৩ দিনের মধ্যে শেষ হয়; এর ফলে রপ্তানি ও আমদানির খরচ বেড়ে যায়।
বন্দরের কর্মদক্ষতা কেবল অপারেশন ও ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করে না; ভৌগোলিক অবস্থান ও কাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার ওপরও নির্ভর করে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্ণফুলী নদীর তীরে একটি সরু চ্যানেলে অবস্থিত, যেখানে পানির গভীরতা (ড্রাফট) প্রায় ৯ দশমিক ৫ মিটার যা আবার জোয়ার-ভাটার কারণে অনেক সময় কম-বেশি হয়।
পানির অগভীরতার পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর সরু চ্যানেল, তীক্ষ্ণ বাঁক ও জোয়ার-ভাটার পরিবর্তন জাহাজ চলাচলে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ফলে জাহাজের ‘টার্ন-অ্যারাউন্ড টাইম’ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। অবস্থানগত সীমাবদ্ধতার ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতাকে সিঙ্গাপুর বা কলম্বো বন্দরের মানদণ্ডে সরাসরি মূল্যায়ন করা যৌক্তিক নয়।
প্রাকৃতিক সীমাবদ্ধতা ছাড়াও আধুনিক স্ক্যানিং প্রযুক্তি ও ডিজিটাল সিস্টেমের অভাবে চট্টগ্রাম বন্দরে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সে ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগে। অবকাঠামো ও গুদাম ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা পণ্য হস্তান্তরে বিলম্ব ঘটায় আর শ্রমিকদের প্রযুক্তিগত দক্ষতার ঘাটতি অপারেশনাল কার্যকারিতাকে বাধাগ্রস্ত করছে। তাই চট্টগ্রাম বন্দরের চ্যালেঞ্জ কেবল কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়েই সীমাবদ্ধ নয়, এর কার্যকর সমাধানে প্রয়োজন কাস্টমস–প্রক্রিয়ার দ্রুততর ডিজিটালাইজেশন, শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং গুদামজাতকরণ ও পরিবহনব্যবস্থার আধুনিকীকরণ।
৩.চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ডিপি ওয়ার্ল্ডকে ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ২০২৩ সালে; সরকারের সঙ্গে সরকার (জিটুজি) আলোচনার মাধ্যমে। তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বন্দর নিয়ে কেন একই নীতি অনুসরণ করছে?
বিষয়টি শুধু একটি সরকারের সিদ্ধান্ত নয়; বরং এটি এক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মতবাদ—‘নব উদারনৈতিক (নিউ লিবারেল) দর্শনের প্রতিফলন।’ এই দর্শনের লক্ষ্য হলো বাজারব্যবস্থার সম্প্রসারণ, সরকারি সম্পদের বেসরকারীকরণ, নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে মূলধনের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা এবং বহুজাতিক করপোরেশনগুলোর জন্য প্রবেশাধিকারের পথ উন্মুক্ত করা।
বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, আইএফসি, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলো এই দর্শন বাস্তবায়নে দীর্ঘদিন ধরে ভূমিকা রেখে চলেছে। তারা উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বৈদেশিক বিনিয়োগের নামে কৌশলগত খাতগুলোতে বেসরকারীকরণে উৎসাহ দিচ্ছে, যা অনেক সময় জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
একাধিক উদাহরণ থেকেই বোঝা যায়, এ ধরনের চুক্তির পরিণতি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে; যেমন আফ্রিকার ছোট্ট দেশ জিবুতি ২০০৬ সালে দুবাইভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ডকে ‘ডোরালে কনটেইনার টার্মিনাল’ পরিচালনার জন্য ৫০ বছরের জন্য ইজারা দিয়েছিল। শুরুতে বিনিয়োগ ও উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। ফলে ২০১৮ সালে জিবুতি সরকার একতরফাভাবে চুক্তি বাতিল করে। জবাবে ডিপি ওয়ার্ল্ড আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বিরোধ নিষ্পত্তি সংস্থায় মামলা করে এবং পরে ক্ষতিপূরণ দাবি করে জয়লাভও করে।
এ ধরনের উদাহরণ শুধু আফ্রিকায় নয়, দক্ষিণ এশিয়া ও পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোতেও দেখা গেছে। যেমন ২০১৪ সালে কেনিয়ার মোম্বাসা বন্দরের একটি টার্মিনাল চীনা কোম্পানি সিআরবিসিকে দিয়েছিল। শুরুতে রাজস্ব বাড়লেও পরে স্থানীয় শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণ কমে যায়। কারণ, চীনা কোম্পানিগুলো নিজস্ব শ্রমিক ও সরবরাহব্যবস্থা ব্যবহার করেছিল।
বিশ্বব্যাংকের ২০২০ সালের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, যেসব অবকাঠামো প্রকল্পে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) বা বেসরকারীকরণ বাস্তবায়িত হয়েছে, সেগুলোর ৪২ শতাংশ ক্ষেত্রে আর্থিক ঝুঁকি ও দায় শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রকেই বহন করতে হয়েছে। শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন ও কেনিয়ার মতো দেশের অভিজ্ঞতা বলছে, বিদেশি কোম্পানিকে কৌশলগত খাতের নিয়ন্ত্রণ দিলে স্থানীয়দের ক্ষমতা দুর্বল হয় এবং স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা কমে যায়।
এ ছাড়া একাধিক গবেষণা দেখিয়েছে, কৌশলগত খাতে বেসরকারীকরণ টেকসই উন্নয়নের নিশ্চয়তা দিতে পারেনি; বরং আয়বৈষম্য, শ্রমবাজার সংকোচন এবং সামাজিক অসন্তোষ বেড়েছে। ওইসিডির ২০২২ সালের এক পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, যথাযথ নিয়ন্ত্রণক্ষমতা ছাড়া কৌশলগত সম্পদের বেসরকারীকরণ দীর্ঘমেয়াদে জাতীয় স্বার্থ ক্ষুণ্ন ও দর–কষাকষির ক্ষমতা দুর্বল করে।
৪.স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, দক্ষতা বাড়ানোর একমাত্র উপায় কি বিদেশি কোম্পানির হাতে বন্দর ব্যবস্থাপনা তুলে দেওয়া? ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের পাশেই নবনির্মিত পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল একটি সৌদি কোম্পানির অধীন পরিচালনার জন্য দেওয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী বার্ষিক পাঁচ লাখ টিইইউ হ্যান্ডল করার কথা থাকলেও এক বছর পর গড় হ্যান্ডলিং লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ১৩ শতাংশ। সেখানে এখনো পর্যাপ্ত গ্যান্ট্রি ক্রেন বসানো হয়নি এবং প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল ও টার্মিনাল অটোমেশন গড়ে তোলা হয়নি। অনেকের মতে, ২০২৩ সালে সৌদি অপারেটরের সঙ্গে করা চুক্তিটি জাতীয় স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
এ দৃষ্টান্ত প্রমাণ করে, শুধু বিদেশি অপারেটর আনলেই দক্ষতা ও উন্নয়ন নিশ্চিত হয় না। অবকাঠামো, জনবল ও সুশাসনের ঘাটতি থাকলে তারাও ব্যর্থ হয়। একই অভিজ্ঞতা আফ্রিকার মোমবাসা ও লাতিন আমেরিকার গুয়ায়াকিল বন্দরে দেখা গেছে; যেখানে বিদেশি পরিচালনা সেবার মান বাড়াতে পারেনি, বরং দুর্বল চুক্তি, শ্রমিক অসন্তোষ ও অতিরিক্ত খরচের মতো সমস্যা তৈরি করেছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বাড়াতে সবচেয়ে দ্রুত, সহজ এবং স্বল্প ব্যয়ে বাস্তবায়নযোগ্য পদক্ষেপ হলো কাস্টমস সংস্কার। বর্তমানে একটি কনটেইনার ক্লিয়ারেন্সে গড়ে সাত দিন লাগে, অথচ আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী এটি এক–দুই দিনে সম্ভব। বিশ্বব্যাংকের লজিস্টিকস পারফরম্যান্স সূচক অনুযায়ী, কাস্টমস দক্ষতায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৩২ দেশের মধ্যে ১০০তম; যা আমাদের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমিয়ে দেয়। আধুনিক স্ক্যানার, স্বয়ংক্রিয় রিস্ক ম্যানেজমেন্ট, ২৪/৭ অপারেশন ও দক্ষ জনবল নিশ্চিত করা গেলে বিদেশিদের কাছে ইজারা দেওয়া ছাড়াই বন্দরের সামগ্রিক স্থবিরতা অনেকাংশে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
৫.এনসিটি পরিচালনা বিষয়ে দুবাইভিত্তিক কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে ইজারার শর্তাবলি এখনো জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। এর ফলে চুক্তির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব, অর্থনৈতিক লাভ-ক্ষতি কিংবা কৌশলগত ঝুঁকি সম্পর্কে স্বচ্ছ ও বাস্তবসম্মত মূল্যায়ন করা দুরূহ। বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা বলছে, বিদেশি অপারেটর নিয়োগে বন্দরের দক্ষতা বাড়লেও কনটেইনার চার্জ বৃদ্ধি, শ্রমিক অধিকার সংকোচন, কৌশলগত তথ্যঝুঁকি এবং আন্তর্জাতিক বিরোধের আশঙ্কা বাড়ে।
বিশ্বব্যাংকের একটি গবেষণা অনুযায়ী, বেসরকারীকরণে বন্দর পরিচালনার ব্যয় ২০–৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের অভিজ্ঞতায়ও দেখা গেছে, বিদেশি অপারেটরের নিয়ন্ত্রণে বন্দরের পরিচালনা সরাসরি স্থানীয় অর্থনীতিকে চাপের মুখে ফেলে। ভারতের মুন্দ্রা ও শ্রীলঙ্কার হামবানটোটা বন্দরে বিদেশি অপারেশনের অধীন কনটেইনার চার্জ ২০–৩০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ব্যবসায়িক ব্যয় ও প্রতিযোগিতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি ও বৈদেশিক বাণিজ্য দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে আর এই প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি অপরিহার্য। তবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সমাধান শুধু বিদেশি অপারেটরের ওপর নির্ভর করে সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন একটি সুসমন্বিত বহুমাত্রিক রোডম্যাপ; যেখানে অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রযুক্তির আধুনিকায়ন, দক্ষ মানবসম্পদ গঠন এবং নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার একসঙ্গে পরিকল্পিতভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। কাস্টমস প্রক্রিয়া, অপারেশনাল ব্যবস্থাপনা, শ্রমিক ব্যবস্থাপনা এবং পণ্য পরিবহন ও গুদামজাতকরণসহ সমগ্র লজিস্টিকস শৃঙ্খলকে আধুনিক ও কার্যকর করতে হবে একটি সমন্বিত পদ্ধতির মাধ্যমে।
চট্টগ্রাম বন্দরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পদ নিয়ে তড়িঘড়ি করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিদেশি অপারেটর নিয়োগ–সংক্রান্ত চুক্তির শর্তাবলি, সম্ভাব্য লাভ-ক্ষতি ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মূল্যায়ন করা আবশ্যক। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া হতে হবে খোলামেলা, অংশগ্রহণমূলক এবং
প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের ভিত্তিতে; যাতে দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো সমভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। একই সঙ্গে এ রকম একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের সঙ্গে পরামর্শ ও আলোচনার ভিত্তিতেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
● গোলাম রসুল অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস, অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, ঢাকা
* মতামত লেখকের নিজস্ব
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব সরক র করণ ব শ বব য প রক র য় ক স টমস সরক র র র ওপর ন অবস থ ন অবক ঠ ম ক শলগত দ র বল র জন য অন য য় গ রহণ ক ষমত এনস ট
এছাড়াও পড়ুন:
সার্চ দুনিয়ার নতুন দিগন্ত জিইও: দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো কী প্
ইন্টারনেট সার্চ দুনিয়ায় চলছে নীরব এক বিপ্লব। তথ্য খোঁজার ধরন বদলে যাচ্ছে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুত। আগে যেখানে গুগলে উচ্চ র্যাংকিং মানেই ছিল সাফল্য, এখন সেই জায়গা নিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)-নির্ভর সার্চ টুল।
সার্চ জগতের নতুন চ্যালেঞ্জ
চ্যাটজিপিটি, গুগল জেমিনি, মাইক্রোসফট কপিলট কিংবা পারপ্লেক্সিটি এআই-এগুলো আর শুধু সার্চ ইঞ্জিন নয়, বরং উত্তর তৈরিকারক ইঞ্জিন। ব্যবহারকারী এখন শুধু ‘লিংক’ নয়, বরং সরাসরি উত্তর পেতে চায়। আর এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্যই এসেছে নতুন এক কৌশল- জিইও বা জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন।
জিইও কী?
জিইও (জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে আপনার ওয়েবসাইট ও কনটেন্ট এমনভাবে সাজানো হয় যাতে এআই-চালিত সার্চ ইঞ্জিন সহজেই আপনার তথ্য চিনতে, বুঝতে এবং ব্যবহারকারীর প্রশ্নের উত্তরে সেটি অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।
আগে ব্র্যান্ডগুলোর ফোকাস ছিল গুগলের প্রথম পাতায় জায়গা করে নেওয়া। কিন্তু এখন গুরুত্ব পাচ্ছে- চ্যাটজিপিটি বা জেমিনি-এর উত্তরে আপনার ব্র্যান্ডের নাম আসছে কি না!
এসইও বনাম জিইও: সার্চ দুনিয়ার নতুন যুগের পালাবদল
অনেকেই এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) এবং জিইও (জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) এক মনে করেন, কিন্তু এদের মধ্যে মূলত লক্ষ্য ও কৌশল ভিন্ন। এসইও হচ্ছে পুরোনো পদ্ধতি, অন্যদিকে জিইও হচ্ছে নতুন পদ্ধতি।
* মূল লক্ষ্য
এসইও: সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক বাড়ানো
জিইও: এআই সার্চের উত্তরে দৃশ্যমান হওয়া
* কাজের ধরন
এসইও: কিওয়ার্ড ও ব্যাকলিংক ভিত্তিক
জিইও: কনটেক্সট, প্রাসঙ্গিকতা ও ব্র্যান্ড অথরিটি নির্ভর
* ফলাফল
এসইও: ক্লিক ও ট্রাফিক বৃদ্ধি
জিইও: ব্র্যান্ড উল্লেখ ও আস্থা বৃদ্ধি
* প্ল্যাটফর্ম
এসইও: গুগল, বিং ইত্যাদি সার্চ ইঞ্জিন
জিইও: চ্যাটজিপিটি, জেমিনি, পারপ্লেক্সিটি, এসজিই ইত্যাদি এআই সার্চ
এসইও এখনও গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু ভবিষ্যতের সার্চ ইকোসিস্টেমে জিইও সমান অপরিহার্য হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশি ব্যবসার জন্য জিইও-এর গুরুত্ব
বাংলাদেশে ডিজিটাল মার্কেটের ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধি স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শিক্ষা, ট্রাভেল, স্বাস্থ্যসেবা, ই-কমার্স, রিয়েল এস্টেট- প্রায় প্রতিটি খাতেই ব্যবসা অনলাইনে আরো দৃশ্যমান হতে চাচ্ছে। কিন্তু বদলেছে মানুষের সার্চ করার ধরন। এখন তারা শুধু গুগলে সার্চ করেই সন্তুষ্ট থাকছে না, তারা এআই-চালিত সার্চ টুলগুলো যেমন চ্যাটজিপিটি, জেমিনি বা পারপ্লেক্সিটি-এর মাধ্যমে সরাসরি উত্তর খুঁজছে।
গার্টনারের এক গবেষণা অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে প্রচলিত সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ ভলিউম প্রায় ২৫ শতাংশ কমে যাবে- কারণ ব্যবহারকারীরা দ্রুতই এআই-চালিত সার্চ ও চ্যাটবটের দিকে ঝুঁকছে। (তথ্যসূত্র: Gartner, “Search Engine Volume Will Drop 25% by 2026, Due to AI Chatbots and Other Virtual Agents)
তবে এই পরিবর্তনের প্রভাব ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ধরুন, কেউ চ্যাটজিপিটি-তে লিখল, ‘ঢাকায় সেরা অ্যাকাউন্টিং ফার্ম কোনটি?’ যদি আপনার কোম্পানির নাম বা কনটেন্ট এআই-এর তৈরি উত্তরে না আসে, তাহলে সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট ও ব্যবসার সুযোগ হাতছাড়া হচ্ছে।
মূলত এখানেই জিইও-এর গুরুত্ব উঠে আসে। জিইও ব্যবহার করে কনটেন্ট এমনভাবে সাজানো যায় যাতে এআই সার্চ সিস্টেম আপনার ব্র্যান্ডকে সহজেই চিনতে পারে, বুঝতে পারে এবং ব্যবহারকারীর প্রশ্নের উত্তরে উল্লেখ করে। অর্থাৎ, বাংলাদেশের প্রতিটি ব্যবসা যদি এআই-এর দুনিয়ায় দৃশ্যমান থাকতে চায়, জিইও’র সঙ্গে খাপ খাওয়ানো এখন আর বিকল্প নয়- এটি একান্ত প্রয়োজন।
জিইও’র জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (জিইও) কোনো একদিনে শেখার মতো বিষয় না- এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, যেখানে ব্যবসাগুলোকে নিজেদের কনটেন্ট, উপস্থিতি ও বিশ্বাসযোগ্যতা এআই-বান্ধব করে গড়ে তুলতে হয়। নিচে ধাপে ধাপে দেখা যাক, কীভাবে আপনি জিইও’র পথে প্রস্তুত হতে পারবেন।
১. অনলাইন উপস্থিতি যাচাই করুন
জিইও’র প্রথম ধাপ হলো আপনার ব্যবসা বা ব্র্যান্ডের বর্তমান অনলাইন উপস্থিতি যাচাই করা। চ্যাটজিপিটি বা পারপ্লেক্সিটি-এর মতো এআই-চালিত সার্চ টুলে সার্চ দিন ‘বাংলাদেশে সেরা (আপনার ইন্ডাস্ট্রি)-এর কোম্পানিগুলো কোনগুলো?’
যদি সার্চের উত্তরে আপনার নাম না আসে, বোঝা যাবে যে আপনার এআই-দৃশ্যমানতা এখনও সীমিত। এই ক্ষেত্রে আপনাকে জিইও অনুযায়ী কনটেন্ট ও অনলাইন উপস্থিতি বাড়াতে কাজ শুরু করতে হবে।
২. বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করুন
জেনারেটিভ এআই সার্চ সিস্টেম সেই উৎসকেই অগ্রাধিকার দেয়, যা নির্ভরযোগ্য ও যাচাইযোগ্য। তাই আপনার ওয়েবসাইটে ব্র্যান্ড, টিম, যোগাযোগ ও রিভিউসহ সব তথ্য সম্পূর্ণ ও স্বচ্ছ রাখুন।
গুগল বিজনেস প্রোফাইল নিয়মিত আপডেট করুন- ঠিকানা, সময়, পোস্ট ও রিভিউসহ।
বিশ্বস্ত সংবাদমাধ্যম ও ব্লগে ব্র্যান্ডের উল্লেখ বাড়ান।
E-E-A-T (Experience, Expertise, Authoritativeness, Trustworthiness) বজায় রাখুন।
এভাবেই এআই ও ব্যবহারকারীর কাছে আপনার ব্র্যান্ড একটি বিশ্বাসযোগ্য সোর্স হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে- যা জিইও সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।
৩. কনভারসেশনাল কনটেন্ট লিখুন
এআই সার্চ এখন ব্যবহারকারীর প্রশ্নভিত্তিক অনুসন্ধানকে গুরুত্ব দেয়। তাই আপনার কনটেন্ট তৈরি করুন এমনভাবে যেন এটি প্রাকৃতিক প্রশ্ন ও কথোপকথনের মতো শোনায়। উদাহরণ: ‘Where can I find a trusted IELTS coaching center in Dhaka?’ ‘Where can I apply for a blue-collar job?’ এ ধরনের কনটেন্ট এআই-এর চোখে আরো সহজে বোঝার মতো হয় এবং ব্যবহারকারীর প্রশ্নের উত্তর হিসেবে উল্লেখযোগ্য।
৪. বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় থাকুন
এআই শুধু ওয়েবসাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে না। এটি ফেসবুক, ইউটিউব, লিংকডইন, কোরা এবং অন্যান্য সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম থেকেও তথ্য সংগ্রহ করে। তাই বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আপনার উপস্থিতি নিশ্চিত করা জিইও-এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৫. এসইও এবং জিইও একসাথে ব্যবহার করুন
ডিজিটাল দুনিয়ায় এখন শুধু সার্চ র্যাংকই যথেষ্ট নয়। এসইও যেমন গুগল সার্চে আপনার কনটেন্টকে শীর্ষে নিয়ে আসে, তেমনি নতুন যুগের জিইও (জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) আপনার ব্র্যান্ডকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক সার্চে আরো দৃশ্যমান করে তোলে।
এসইও মূলত গুগল ও অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইটের অবস্থান উন্নত করে, আর জিইও শেখায়- কীভাবে এআই মডেলগুলো আপনার ব্র্যান্ডকে চিনবে, উল্লেখ করবে এবং বিশ্বাস করবে।
দুটি কৌশল একসাথে প্রয়োগ করলে অনলাইন উপস্থিতি অনেক বেশি শক্তিশালী হয়। একদিকে সার্চে দৃশ্যমানতা বাড়ে, অন্যদিকে এআই-নির্ভর প্ল্যাটফর্মগুলোতেও আপনার ব্র্যান্ডের নাম উঠে আসে স্বতঃস্ফূর্তভাবে।
ভবিষ্যতের সার্চ জগতে টিকে থাকতে হলে এখনই সময়- এসইও এবং জিইও-কে একসাথে কাজে লাগানোর।
বাংলাদেশের ব্যবসার জন্য জিইও’র নতুন সম্ভাবনা
জিইও বাংলাদেশের ব্যবসাগুলোর জন্য হতে পারে এক গেম চেঞ্জার। আগে যেখানে অনলাইন দৃশ্যমানতা মানেই ছিল গুগলে র্যাংক করা, এখন সেটি ধীরে ধীরে স্থান ছেড়ে দিচ্ছে এআই সার্চ ভিজিবিলিটি–কে।
আজ যদি কোনো ব্যবহারকারী চ্যাটজিপিটি বা জেমিনি-তে জিজ্ঞেস করে-
‘বাংলাদেশে নির্ভরযোগ্য অনলাইন বই বিক্রির সাইট কোনটা?’
অথবা, ‘ঢাকায় সেরা ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি কারা?’
যদি আপনার ব্র্যান্ডের নাম সেই উত্তরে উঠে আসে, সেটিই হবে প্রকৃত দৃশ্যমানতা- শুধু ক্লিক নয়, বরং আস্থা, প্রভাব ও ব্র্যান্ড অথরিটি–এর প্রতিফলন।
বাংলাদেশে এখন প্রতিদিন শত শত নতুন অনলাইন ব্যবসা শুরু হচ্ছে- ই–কমার্স, এডুকেশন, হেলথটেক, রিয়েল এস্টেট, ফাইন্যান্স, এমনকি ছোট স্টার্টআপরাও দ্রুত ডিজিটাল হচ্ছে। কিন্তু একইসঙ্গে প্রতিযোগিতাও বেড়ে যাচ্ছে বহুগুণে।
এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে শুধু এসইও নয়, জিইও–কেন্দ্রিক কৌশলও অপরিহার্য।
জিইও’র ভবিষ্যৎ
খুব শিগগিরই এআই সার্চ টেক্সটের বাইরে গিয়ে ভয়েস, ভিডিও ও ইমেজ কনটেন্ট থেকেও উত্তর তৈরি করবে। তখন জিইও কেবল ওয়েবসাইট নয়, বরং ভিডিও, পডকাস্ট, সোশ্যাল প্রোফাইল, নিউজ রিপোর্ট- সবকিছুর মধ্যেই প্রভাব ফেলবে।
তাই এখন থেকেই যারা জিইও-কেন্দ্রিক কৌশল গ্রহণ করবে, ভবিষ্যতের সার্চ রেভোলিউশনে নেতৃত্ব দেবে তারাই।
উপসংহার
জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (জিইও) শুধু নতুন ট্রেন্ড নয়- এটি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের পরবর্তী অধ্যায়।
এসইও যেমন আপনাকে সার্চ রেজাল্টে নিয়ে যায়, জিইও তেমনি আপনাকে নিয়ে যাবে এআই–এর উত্তরে।
‘ভবিষ্যতের সার্চে র্যাংক নয়, ব্র্যান্ডের বিশ্বাসযোগ্যতাই হবে সাফল্যের আসল মাপকাঠি।’
লেখক: হেড অব ওয়েব অ্যানালাইসিস অ্যান্ড এসইও ডিরেক্টর, ইন্টেলেক আইটি এলএলসি (ইউএসএ অ্যান্ড বাংলাদেশ)
ঢাকা/ফিরোজ