ইরান-ইসরায়েলের হামলা পাল্টা-হামলায় সাম্প্রতিক সময়ে তেল আবিবের পরেই ইসরায়েলের যে শহরটির নাম সবচেয়ে বেশি এসেছে, সেটি দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় বন্দরনগরী ‘হাইফা’। শহরটি লক্ষ্য করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে, হামলার পর শহরটিতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দাবি করা হয়েছে, শনিবার হাইফা ও তেল আবিব লক্ষ্য করে ১০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তেহরান। যার মধ্যে অনেকগুলোই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে বলেও দাবি করেছে ইরান। চ্যানেল টুয়েলভ, টাইমস অব ইসরায়েলসহ ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো হাইফায় বিস্ফোরণ ও বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের খবর দিয়েছে।

ইসরায়েলের তৃতীয় বৃহত্তম উত্তরাঞ্চলের উপকূলীয় হাইফাকে কেন লক্ষ্যবস্তু করছে ইরান– এই প্রশ্নের উত্তরে ওয়াশিংটন পোস্টসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, ইসরায়েলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নৌঘাঁটির অবস্থান এই শহরে। এ ছাড়া ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় তেল শোধনাগারসহ আরও কয়েকটি তেল শোধনাগার ও বহু গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক কারখানা হাইফায় অবস্থিত।  

হাইফা ইসরায়েলের প্রধান গভীর সমুদ্রবন্দর। কয়েক শতাব্দী ধরেই অঞ্চলটির অন্যতম প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে হাইফাকে। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলের সামুদ্রিক বাণিজ্যের একটি বড় অংশ এখান থেকে পরিচালিত হয়। এমনকি দেশটির মোট পণ্য পরিবহনের প্রায় অর্ধেকই হাইফা বন্দর দিয়ে পরিবাহিত হয় বলে জানিয়েছে তারা।

হাইফায় অবস্থিত নৌঘাঁটি, তেল শোধনাগার ও রাসায়নিক কারখানাগুলো তেল আবিবের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়। অঞ্চলটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে হাইফায় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম মোতায়েনসহ নানা প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ইসরায়েল। হাইফায় গুরুত্বপূর্ণ গ্যাস অবকাঠামো থাকায় ইরানি হামলা প্রত্যাশিতই ছিল বলে উল্লেখ করেছে আলজাজিরা। 

আলজাজিরা জানিয়েছে, হাইফায় ইরানের হামলা ইঙ্গিত দেয়, তেহরান অঙ্গীকার অনুযায়ী পাল্টা জবাব দিচ্ছে। এর আগে তেহরান বলেছিল, ইসরায়েল ইরানের বেসামরিক অবকাঠামো বা জ্বালানি স্থাপনায় হামলা চালালে তারাও একই রকম জবাব দেবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল র লক ষ য

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলের হাইফা কেন গুরুত্বপূর্ণ, কেন ইরানের নিশানায় শহরটি

ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর হাইফা। শহরটি নিশানা করে গতকাল শনিবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর ওয়াশিংটন পোস্টসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এসেছে। খবরে হাইফায় বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাওয়ার তথ্যও জানানো হয়।

খবরে আরও বলা হয়, হাইফার উত্তরের কিছু শহরেও গতকাল ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। বদলা হিসেবে হাইফাসহ ইসরায়েল বিভিন্ন এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র-ড্রোন হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে ইরান।

হাইফায় ইরানের হামলা নিয়ে নানা ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দাবি করা হয়, গতকাল ১০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের দিকে ছোড়া হয়, যার লক্ষ্য ছিল হাইফা ও তেল আবিব।

চ্যানেল ১২, টাইমস অব ইসরায়েলসহ ইসরায়েলি গণমাধ্যমে হাইফায় বিস্ফোরণ, বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের খবর দিয়ে বলা হয়েছে, এগুলো ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রভাব।

অন্যদিকে বিবিসি প্রথমে বলেছিল, হাইফায় ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। সেখানে পাঁচজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরে আবার বিবিসি বলে, হাইফায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত হানার খবরটি ঠিক নয়।

হাইফা ইসরায়েলের তৃতীয় বৃহত্তম শহর। কিন্তু ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের উপকূলীয় এ শহরটি কেন গুরুত্বপূর্ণ, কেনইবা ইরানের লক্ষ্যবস্তু হাইফা?

ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, হাইফায় ইসরায়েলের একটি গুরুত্বপূর্ণ নৌঘাঁটি আছে। এ ছাড়া এখানে বেশ কিছু তেল শোধনাগার ও বহু রাসায়নিক কারখানা আছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় তেল শোধনাগার হাইফা এলাকায় অবস্থিত।

হাইফা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে একটি বন্দর হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, হাইফা ইসরায়েলের প্রধান গভীর সমুদ্রবন্দর। ইসরায়েলের সামুদ্রিক বাণিজ্যের একটি বড় অংশ এখান থেকে পরিচালিত হয়। ইসরায়েলের মোট পণ্য পরিবহনের প্রায় অর্ধেকই এই বন্দর দিয়ে পরিবাহিত হয়।

বাণিজ্যিক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে হাইফায় আয়রন ডোম স্থাপনসহ নানা প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা ইসরায়েল গ্রহণ করে রেখেছে বলে জানায় রয়টার্স।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়, হাইফায় অবস্থিত নৌঘাঁটি, তেল শোধনাগার ও রাসায়নিক কারখানাগুলো তেল আবিবের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত।

হাইফায় ইরানি হামলা প্রত্যাশিত ছিল বলে উল্লেখ করেছে আল–জাজিরা। কারণ হিসেবে বলা হয়, এই শহরে গুরুত্বপূর্ণ গ্যাস অবকাঠামো রয়েছে।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশেষ করে হাইফায় ইরানের হামলা এই ইঙ্গিত দেয় যে তেহরান তার অঙ্গীকার অনুযায়ী পাল্টা জবাব দিচ্ছে। কারণ, তেহরান বলেছিল, ইসরায়েল যদি ইরানের বেসামরিক অবকাঠামো বা জ্বালানি স্থাপনায় হামলা চালায়, তাহলে তারাও ঠিক একই রকম জবাব দেবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসরায়েলের হাইফা কেন গুরুত্বপূর্ণ, কেন ইরানের নিশানায় শহরটি