Samakal:
2025-08-01@09:09:48 GMT

তামাকের বিরুদ্ধে তারুণ্য

Published: 16th, June 2025 GMT

তামাকের বিরুদ্ধে তারুণ্য

তামাক সহজলভ্য নেশাদ্রব্য। এতে দেশের অগণিত মানুষ আসক্ত। ৩১ মে ছিল বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। ‘ধূমপান ত্যাগ কর এবং জয়ী হও’ প্রতিপাদ্যে তামাক ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে দিবসটি উদযাপন করে এডাস্ট সুহৃদ সমাবেশ। অনুষ্ঠিত হয় ‘তামাকবিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধি ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা। কর্মসূচির বিস্তারিত নিয়ে…


বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (এডাস্ট) সমকাল সুহৃদ সমাবেশ আয়োজিত সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারীমৈত্রীর পরিচালক খালিদ বিন ইউসুফ। প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আব্দুল কাইউম সরদার আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এমপিএইচ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো.

আরিফুজ্জামান খান, সুহৃদ সমাবেশের সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান। এ ছাড়া এডাস্ট সুহৃদ উপদেষ্টা, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও কো-অর্ডিনেটরসহ ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটির সুহৃদরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান আলোচক খালিদ বিন ইউসুফ তথ্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে তামাক ব্যবহার ও এর প্রভাব সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩৭ মিলিয়ন কিশোর-কিশোরী তামাক ব্যবহার করছে। তামাক কোম্পানিগুলো তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে চটকদার প্যাকেট, ফ্লেভার এবং বিজ্ঞাপনী কৌশল ব্যবহার করছে; যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ হুমকি। গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর টোব্যাকো কন্ট্রোলের ২০২২ সালের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে ১৫-ঊর্ধ্ব আনুমানিক চার কোটি মানুষ তামাকজাত পণ্য নিয়মিত ব্যবহার করে। এর এক-চতুর্থাংশ নারী। এই সংখ্যার ভিত্তিতে বাংলাদেশ তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যায় বিশ্বে পঞ্চম এবং বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এ ছাড়া টোব্যাকো অ্যাটলাসের তথ্যমতে, দেশে প্রতি বছর প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার ১৩৫ জন তামাকজনিত রোগে মারা যান। তামাক ব্যবহারের কারণে বার্ষিক অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় প্রায় ৩৯ হাজার ১৭৩ কোটি টাকা।
আব্দুল কাইউম সরদার আলম বলেন, ‘তামাকজনিত রোগে প্রতিবছর লাখো মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। হৃদরোগ, ক্যান্সার, স্ট্রোক, শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা, অ্যাজমা ও ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী ও প্রাণঘাতী রোগের পেছনে তামাক অন্যতম প্রধান কারণ। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী জনসমক্ষে ধূমপান নিষিদ্ধ বিজ্ঞাপন ও প্রমোশন নিষিদ্ধ, স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা বাধ্যতামূলক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১০০ গজের মধ্যে এসব পণ্য বিক্রি নিষিদ্ধ, স্কুলে তামাকবিরোধী শিক্ষা অন্তর্ভুক্তি, মোবাইল ফোনে তামাকবিরোধী বার্তা প্রচার, চিত্রায়িত স্বাস্থ্য সতর্কীকরণ লেবেল বাধ্যতামূলক করা, এনজিও ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর ভূমিকা, গবেষণা ও তথ্য প্রচারের মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানোর কথা রয়েছে। তারপরও তরুণদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে তামাক ব্যবহার বেড়েছে।’ তিনি শিক্ষার্থীদের তামাক তথা ধূমপান থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন।
সূচনা বক্তব্যে সুহৃদ প্রধান উপদেষ্টা শারমিন আকতার তামাকবিরোধী সচেতনতায় পরিবারের ভূমিকার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। এই পর্বে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের জীবনের লক্ষ্য এবং তামাকজনিত বিভিন্ন বিষয়ের প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধান আলোচক। 
প্রতিবছর ৩১ মে নানা আয়োজনে দিনটি পালিত হয়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা আন্তর্জাতিক সচেতনতা দিবস হিসেবে ১৯৮৭ সালে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে অবহিত করা এবং তামাকমুক্ত সমাজ গঠনের আহ্বান জানাতে দিনটি ঘোষণা করে। সমকাল সুহৃদ সমাবেশ এডাস্টের প্রাক্তন সভাপতি সাগর হোসেনের সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান।
তামাকের বিরুদ্ধে তারুণ্যের প্রত্যয়
তামাকবিরোধী সেমিনার শেষে সাংগঠনিক সভায় মিলিত হন সুহৃদরা। এ সময় সদস্যদের কার্যক্রমের ভিত্তিতে কমিটি পুনর্গঠন, নতুন কার্যক্রম গ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় সুহৃদ সমাবেশের বিভাগীয় সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামানের পরামর্শে সুহৃদরা আরও সক্রিয়ভাবে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এডাস্ট সুহৃদ উপদেষ্টা সারমিন আকতার সুহৃদদের কার্যক্রম ও আগামীদিনের কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি জানান, সুহৃদ সমাবেশ কেন্দ্রীয় কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে গত তিন বছর ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। বরাবরের মতো সুহৃদ সমাবেশ ও এডাস্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে এই কার্যক্রম চলমান থাকবে। সবার সম্মতিক্রমে তিনি নতুন কমিটিতে উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য হিসেবে এমপিএইচ বিভাগের চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান খানকে যুক্ত করার বিষয়টি জানান। শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন– এডাস্ট সুহৃদ উপদেষ্টা ড. মো. মাহীবুল হাসান, মেহনাজ বিনতে আমীন, কেয়া বোস, জুবায়ের আহমেদ। সুহৃদদের মধ্যে ছিলেন– খালেকুজ্জামন রাব্বি, মমিনুর ইসলাম আরমান, আশরাক আহমেদ আবির, মুনতাসির মজুমদার, জোবায়ের হোসেন প্রমুখ। এ ছাড়া পুরোনো কমিটির কয়েকজন সুহৃদও উপস্থিত ছিলেন। v
সুহৃদ এডাস্ট
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ ত ম ক ব যবহ র এড স ট স হ দ উপদ ষ ট ব শ বব

এছাড়াও পড়ুন:

৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।

‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।

সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।

এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ