ভোট থেকে বিরত রাখার বিধান বাতিল চায় সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ, উপদেষ্টাকে চিঠি
Published: 17th, June 2025 GMT
টানা দুইবার নির্বাহী কমিটি বা পর্ষদে থাকলে একবার বিরতি দিয়ে পুনরায় নির্বাচন করা যাবে। এই নিয়মটি ভবিষ্যতের পাশাপাশি বিগত সময়ের জন্যও প্রযোজ্য হবে। ফলে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইসহ সব বাণিজ্য সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক নেতাদের অনেকে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা-২০২৫–এ থাকা এই উপবিধি বাতিল চেয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনকে চিঠি দিয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের নেতারা। তাঁরা বলেছেন, একজন ভোটারের মৌলিক অধিকার হচ্ছে যেকোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা। যেহেতু বাণিজ্য সংগঠনগুলো অলাভজনক, সেহেতু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপের মাধ্যমে বিরত রাখার বিধানটি মোটেই কাম্য নয়। শুধু তা–ই নয়, বিধিনিষেধ আরোপে অতীত সময়কাল থেকে কার্যকর করাটা আইনবহির্ভূত ও অধিকার ভঙ্গের শামিল।
সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের পক্ষে আহ্বায়ক মীর নিজাম উদ্দিন গত রোববার বাণিজ্য উপদেষ্টাকে এই বিধান বাতিল চেয়ে চিঠি দেন। এতে বাণিজ্য বিধিমালার ১৮ (৫) উপবিধি বাতিলের দাবি করা হয়। অর্থাৎ টানা দুইবার পর্ষদে থাকলে একবার বিরতি দিয়ে পুনরায় নির্বাচন করার বিধানটি ভবিষ্যতে কার্যকর চায় সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ।
এ ছাড়া পণ্যভিত্তিক বাণিজ্য সংগঠন বা অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বারে ভর্তি ফি ও বার্ষিক চাঁদার পরিমাণ আগের মতো রাখার দাবি করেছে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ। তারা বলেছে, এত দিন চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনে এককালীন ভর্তি ফি ছিল সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা। আর বার্ষিক চাঁদা ছিল ১ হাজার টাকা। নতুন বিধিমালায় সাধারণ সদস্যদের ভর্তি ফি ১৫ হাজার টাকা ও বার্ষিক চাঁদা ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত ফি ধার্য করায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। ভ্যাট, ট্যাক্স আর ব্যাংকঋণের সুদহার নিয়ে এমনিতেই সাধারণ ব্যবসায়ীরা সমস্যায় জর্জরিত। এমন প্রেক্ষাপটে ফি বাড়ানোর কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের মধ্যে চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা দেখা যাবে।
এফবিসিসিআইয়ের বার্ষিক চাঁদা কমানোর দাবিও করেছে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ। নতুন বিধিমালায় ক শ্রেণির অ্যাসোসিয়েশনের জন্য বার্ষিক চাঁদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা। আর ক শ্রেণির চেম্বারের বার্ষিক চাঁদা ১ লাখ টাকা। ১৯৯৪ সালের বিধিমালায় এই ফি ছিল অ্যাসোসিয়েশনের জন্য ২৫ হাজার ও চেম্বারের জন্য ৩০ হাজার। দুই বছর আগে এফবিসিসিআইয়ের বার্ষিক চাঁদার হার অ্যাসোসিয়েশনের জন্য ৩৫ হাজার আর চেম্বারের জন্য ৪৫ হাজার করা হয়েছিল। নতুন বিধিমালায় চাঁদার হার যে হারে বাড়ানো হয়েছে তাতে ছোট অ্যাসোসিয়েশন ও মফস্বল চেম্বারের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নতুন বিধিমালায় এফবিসিসিআইয়ের সাধারণ পরিষদের প্রত্যেক সদস্যের নিবন্ধন ফি ধার্য করা হয়েছে ২০ হাজার টাকা। আগে এই নিবন্ধন ফি ছিল ২ হাজার ৫০০ টাকা। এই ফি না বাড়ানোর অনুরোধ করেছে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ।
এ ছাড়া এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান প্রশাসকের সহায়ক কমিটি ভেঙে দেওয়ার দাবি করেছে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ। তারা বলেছে, সহায়ক কমিটির সঙ্গে আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলের প্রার্থীদের সরাসরি যোগসাজশ রয়েছে। ফলে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে সহায়ক কমিটি বাতিল করা প্রয়োজন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এফব স স আইয় র নত ন ব ধ ম ল য় ব ণ জ য স গঠন র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করছে সরকার, এখনই বাড়ছে না জ্বালানি তেলের দাম: অর্থ উপদেষ্টা
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে আরও অপেক্ষা করব। আপাতত পর্যবেক্ষণ করছি, যুদ্ধটা যদি বেশি দিন চলে তখন আমাদের ওপর একটা প্রভাব পড়বে।’
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে ইরান-ইসরায়েলের চলমান সংঘাতে আমাদের দেশের জ্বালানি তেলের দামে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধটা পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা দেখেছি ইতোমধ্যে কিছুটা দাম বেড়েছে। তবে যেগুলোতে আমরা অর্ডার করেছি সেগুলোতে প্রভাব ফেলে নাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণ করছি গ্যাস, এলএনজির দাম যদি বেড়ে যায়, তাহলে আমরা বিবেচনায় নেবো। আজকে যে এলএনজি আমদানির অনুমোদন দিয়েছি, সেটা পুরোনো দামেই কোড করেছে। আমাদের ভাগ্য ভালো যে আমরা আগের দামেই পাবো।’
আপাতত আমাদের বাণিজ্য ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা কী নেই- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘না না, আপাতত বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না।’
বিশেষ কোনো প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশেষ প্রস্তুতি বলতে আজকে আমরা যে এলএনজি, সার আনার প্রস্তাব অনুমোদন দিলাম সেটা পুরোনো দামে। ভবিষ্যতে যখন নতুন কোনো কিছু আনব তখন হয়তো কিছুটা ইফেক্ট করবে।’
যুদ্ধ যদি দীর্ঘায়িত হয় তাহলে বিকল্প কিছু চিন্তা করছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বিকল্প চিন্তা বলতে অবশ্যই জ্বালানি মন্ত্রণালয় করছে। যেহেতু আমরা এলএনজির ওপর নির্ভর করি বেশি। যুদ্ধতে শুধু জ্বালানি না, সার, জাহাজ চলাচলেও প্রভাব পড়বে। হরমুজ প্রণালি দিয়ে জাহাজ আসে, সেখানে প্রভাব পড়তে পারে। মনে হয়, যুদ্ধটা বেশি দিন চলবে না।’