সন্তানকে একপলক দেখার আকুতিই কাল হলো হানিফের
Published: 19th, June 2025 GMT
পারিবারিক কলহের জেরে মো. হানিফ ও নুরজাহান আক্তার আঁখি দম্পতি আলাদা থাকতেন। কিন্তু তাদের একমাত্র সন্তানকে দেখতে বারবার শ্বশুর বাড়ি যেতেন হানিফ। তা মেনে নিতে পারেননি শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এর জেরে তাকে খুন করা হয়। গত ১৫ জুন ভোরে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার মাঝের ঘোনা গলাচিপা কাঁচা রাস্তার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
গতকাল বুধবার বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমের সামনে আনে পুলিশ। এ ঘটনায় হানিফের স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক ও এক যুবককে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- হানিফের শ্বশুর খোরশেদ মোল্লা, শ্যালক আরিফ মোল্লা, তার বন্ধু দেলোয়ার হোসেন বাবু, হানিফের স্ত্রী নুরজাহার আক্তার আঁখি ও শাশুড়ি রহিমা বেগম।
পুলিশ সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে হানিফ ও আঁখির বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহের জেরে বাবার বাড়িতে চলে যান আঁখি। হানিফ বিভিন্ন সময় মেয়েকে দেখতে শ্বশুর বাড়িতে যেতেন। বিষয়টি শ্বশুর বাড়ির লোকজন মেনে নিতে পারতেন না। এর জেরে তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদও হয়। তবুও হানিফ মেয়েকে দেখতে যাওয়া বন্ধ করেননি।
হানিফের বাবা জামাল মিয়ার অভিযোগ, গত ১৫ জুন রাত তিনটার দিকে মেয়ের অসুস্থতার কথা বলে ডেকে নিয়ে যান শ্বশুর খোরশেদ। সেখানে গেলে শ্বশুরসহ অন্য আসামিরা মিলে তাকে ছুরিকাঘাত করে। প্রাণ বাঁচাতে হানিফ পালানোর চেষ্টা করে। তাকে ধাওয়া দিয়ে ধরে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা পালিয়ে যায়।
তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বায়েজিদ বোস্তামী থানার এসআই কাজী আবিদ হোসেন জানান, ঘটনার দিন হানিফ নিজ থেকে শ্বশুর বাড়ি গিয়েছিলেন। তার শ্বশুর বাড়ি টিলা এলাকায়। ভোর রাতে সেখানে গিয়ে ডাকাডাকি করায় শ্বশুর ছুরি নিয়ে বের হন। এ সময় তিনি মোবাইলে ভিডিও করতে থাকেন। একপর্যায়ে রেগে গিয়ে শ্বশুরকে ধাক্কা দেন হানিফ। এ সময় ছুরি বের করে হানিফকে ছুরিকাঘাত করেন খোরশেদ। হানিফ দৌড়ে পালানোর সময় তাকে ধাওয়া করে খোরশেদ, আরিফ ও বাবু ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে লাশ উদ্ধার করে। বাসা থেকে স্ত্রী ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে খোরশেদ, আরিফ ও বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুইটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদনে ১৭টি আঘাতের চিহ্ন পেয়েছে পুলিশ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ র ক ঘ ত কর
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে ৪ আইনজীবীকে বহিষ্কার
যশোরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার আইনজীবীকে জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
অভিযুক্ত আইনজীবীরা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি, রফিকুল ইসলাম এবং তরফদার আব্দুল মুকিত।
জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, ওই চার আইনজীবীর মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক এক এনজিওর ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই টাকা ফেরত দিতে তিনি অঙ্গীকার করে ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওই চেক ডিজ অনার হয় এবং একই সাথে তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় মক্কেল আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
অন্যদিকে, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি একটি জমি ক্রয় করেন। কিন্তু ওই জমির মালিককে পূর্ণাঙ্গ টাকা না দিয়ে তালবাহানা করেন। শেষমেষ আট লাখ টাকা না দেওয়ায় জমির মালিক আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
এছাড়া, রফিকুল ইসলাম নিজে আইনজীবী হয়েও আরেক আইনজীবী নুরুল ইসলামকে নির্বাহী আদালতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় নুরুল ইসলাম অভিযোগ দেন। অন্যদিকে, তরফদার আব্দুল মুকিত এক মক্কেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ করেননি। এছাড়া তিনি ওই মক্কেলের কাগজপত্র আটকে রেখে জিম্মি করে রাখেন। বাধ্য হয়ে তিনি মুকিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন সমিতিতে।
এসব অভিযোগ জেলা আইনজীবী সমিতি পৃথকভাবে তদন্ত করে। একই সাথে চার আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে তাদেরকে নোটিশ দিয়ে অবগত করা হবে।”
ঢাকা/রিটন/এস