দেশের শীর্ষ ব্যাংকারদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন সিটি ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাসরুর আরেফিন। সম্প্রতি এবিবির পরিচালনা পর্ষদের এক সভায় তাঁকে সংগঠনটির নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়। তিনি এবিবির আগামী বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) পর্যন্ত অর্থাৎ অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব পালন করবেন।

এবিবি আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন সম্প্রতি ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি ও সিইও পদ থেকে পদত্যাগ করায় এই সংগঠনের চেয়ারম্যান পদটি শূন্য হয় এবং নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

এবিবির পরিচালনা পর্ষদের একই সভায় পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ আলী সংগঠনটির নতুন ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের এমডি ও সিইও আবুল কাশেম মো.

শিরীন এবিবির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর আগের দায়িত্ব পালন করে যাবেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাসরুর আরেফিন ১৯৯৫ সালে এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে যোগ দিয়ে ব্যাংকিং কর্মজীবন শুরু করেন। ৩০ বছরের পেশাগত জীবনে তিনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক কাতার, এএনজেড ব্যাংকের মেলবোর্ন হেড অফিস, আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক এনএ প্রভৃতি ব্যাংকে কাজ করেন। ছয় বছর ধরে তিনি সিটি ব্যাংকের সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এবিবিতে প্রায় চার বছর ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করার পর এবার তিনি সংগঠনটির নেতৃত্বে এলেন। ব্যাংকার পরিচয়ের বাইরে তিনি একজন লেখক ও অনুবাদক হিসেবেও সুপরিচিত।

এবিবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী ২০০৮ সালে পূবালী ব্যাংকে চিফ টেকনোলজি অফিসার (সিটিও) হিসেবে যোগ দেন। এরপর ২০১৬ সালে তিনি ব্যাংকটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি), ২০২০ সালে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) ও পরে এমডি ও সিইও পদে উন্নীত হন। এই ব্যাংকের কর্মজীবনে তিনি চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও), চিফ অ্যান্টি মানি লন্ডারিং অফিসার, চিফ রিস্ক অফিসার ও ক্রেডিট কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও কাজ করেন। এবিবির ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি সংগঠনটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে কয়েক বছর ধরে কাজ করছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স গঠনট র নত ন চ অফ স র ক জ কর র পর চ

এছাড়াও পড়ুন:

বৈদ্যুতিক মোটরসাইকেল উৎপাদনের শর্তে শিথিলতা চান ব্যবসায়ীরা

বৈদ্যুতিক মোটরসাইকেল বা ই–বাইক উৎপাদন শিল্পে শুল্ক–কর আরোপের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কিছু শর্ত শিথিলের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বামা)। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) সম্প্রতি চিঠি দিয়েছে সংগঠনটি।

বামার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী দ্বীন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, পরিবেশবান্ধব যানবাহন উৎপাদনে সরকার সহায়তা দিলেও ই–বাইক শিল্পে কার্যকর অগ্রগতির পথে কিছু শর্ত বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। স্থানীয়ভাবে ই–বাইক উৎপাদন শিল্প বিকাশে ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এসআরওর মাধ্যমে এই খাতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তবে এ জন্য ১৪টি শর্ত পরিপালনের কথা বলা হয়েছে এসআরওতে।

বৈদ্যুতিক মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে, দেশে ই–বাইক শিল্প মূলত পশ্চাৎ সংযোগ শিল্প বা ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজভিত্তিক। অর্থাৎ এই খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো যন্ত্রাংশের জন্য একাধিক জোগানদাতা ও উৎপাদকের ওপর নির্ভর করে চলে। কিন্তু এনবিআরের নতুন প্রজ্ঞাপনে (এসআরও) এমন কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে, যেগুলো এসব শিল্পের জন্য বাস্তবায়ন করা কঠিন।

চিঠিতে বলা হয়, এনবিআরের প্রজ্ঞাপনে ই–বাইক নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে নিজস্ব কারখানায় ‘মেটাল হাউজিং’ বা চেসিসসহ বিভিন্ন ধাতব যন্ত্রাংশ তৈরির শর্ত দেওয়া হয়েছে। সে জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করতে হবে, যদিও এসব যন্ত্রাংশ উৎপাদনে বড় বিনিয়োগ ও আলাদা দক্ষতা দরকার।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘মেটাল হাউজিং’ বলতে সাধারণত ব্যাটারির একটি অংশ বোঝায়। কিন্তু এসআরওতে এমনভাবে বলা হয়েছে, যেন ই–বাইক প্রস্তুতকারকদের ব্যাটারিও তৈরি করতে হবে। সরকার ব্যাটারি উৎপাদনে আলাদা উৎসাহ দিচ্ছে। ই-বাইক প্রস্তুতকারকদের নিজস্ব ব্যাটারি বানাতে বাধ্য করা হলে ব্যাটারি শিল্পের অন্য উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তখন আর বাইক প্রস্তুতকারকেরা আলাদা করে কারও কাছ থেকে ব্যাটারি কিনবেন না।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, এনবিআরের শর্তে ই-বাইক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের কারখানায় প্লাস্টিক হাউজিং বা কেসিং তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (যেমন ইনজেকশন মোল্ডিং মেশিন, ড্রায়ার, গ্রাইন্ডার, পেইন্ট বুথ প্রভৃতি) বসাতে হবে। কিন্তু এই প্লাস্টিক হাউজিং বা কেসিং মূলত ব্যাটারির অংশ। অথচ ই-বাইক প্রস্তুতকারকদের এই ব্যাটারির অংশ তৈরি করতে বাধ্য করা হচ্ছে; বিষয়টি ব্যয়বহুল ও লাভজনক নয়, বরং তা ব্যাটারি–সংশ্লিষ্ট অন্য শিল্পের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এনবিআরের এসআরওতে ই-বাইক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে নিজস্ব কারখানায় মোটর উৎপাদন করতে বলা হয়েছে। বর্তমানে দেশে মোটর উৎপাদনে উৎসাহ দিতে আলাদা প্রণোদনা রয়েছে। ই-বাইক প্রস্তুতকারীদের যদি মোটর তৈরি করতে বাধ্য করা হয়, তাহলে মোটর শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

প্রজ্ঞাপনের আরেকটি ধারায় ই-বাইক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে নিজস্ব কারখানায় প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড (পিসিবি) তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনের শর্ত দেওয়া হয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলেছেন, পিসিবি সাধারণত মোবাইল ফোন বা এ ধরনের পণ্য উৎপাদন শিল্পে ব্যবহৃত হয়। ই-বাইক প্রস্তুতকারীদের জন্য পিসিবি উৎপাদন বাধ্যতামূলক করা যৌক্তিক নয়।

এনবিআরকে লেখা চিঠিতে বামা বলেছে, ওপরে উল্লেখিত শর্তগুলো শিথিল করা না হলে বৈদ্যুতিক মোটরসাইকেল উৎপাদনে নতুন উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হবেন এবং শিল্প খাতের বিকাশ ব্যাহত হবে। ফলে সড়ক পরিবহন বিধিমালা ২০২২ অনুযায়ী শর্তগুলো পর্যালোচনা করে বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। অন্যথায় সরকার পরিবেশবান্ধব যানবাহনের দিকে যে গুরুত্ব দিচ্ছে, সেই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এবিবি’র নতুন চেয়ারম্যান মাসরুর আরেফিন, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী
  • জবিতে পরিবহন সংকট নিরসনে ছাত্র অধিকারের ৩ দাবি
  • উদীচী নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রবাসী শুভাকাঙ্ক্ষীরা, মতপার্থক্য ভুলে আলোচনার আহ্বান
  • ‘পাথরের সাম্রাজ্যে’ অভিযান, ৮৭ পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন
  • যবিপ্রবিতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি
  • বৈদ্যুতিক মোটরসাইকেল উৎপাদনের শর্তে শিথিলতা চান ব্যবসায়ীরা
  • গোপালগঞ্জে উচ্ছেদ করা হলো ‘জ্ঞানের আলো পাঠাগার’