রাজশাহীতে টানা তিন দিন বৃষ্টি হচ্ছে। এতে চাষিরা গাছ থেকে আম পাড়তে পারছেন না। যাঁদের সুযোগ আছে, তাঁরা অল্প পরিমাণ আম নিয়ে বাজারে আসছেন, যা চাহিদার তুলনায় একেবারেই স্বল্প। ব্যবসায়ীরা বলছেন, জোগান কম হওয়ায় বাজারে বেড়ে গেছে আমের দাম।

রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের মোকাম পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজার। এই বাজারে আম ব্যবসায়ীদের ভিড়ে রাজশাহী–ঢাকা মহাসড়ক প্রায় অচল হয়ে থাকে। আগের দুই দিনের মতো আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই বৃষ্টির মধ্যে বাজারের রাজশাহী–ঢাকা মহাসড়কে কোনো আমের গাড়ি দেখা যায়নি। রাজশাহী চারঘাট সড়কের ওপর অল্প কিছু চাষি ও ব্যবসায়ী গাড়িতে আম নিয়ে এসেছিলেন।

ব্যবসায়ীরা আগের দুই দিনের চেয়ে আমের দাম হাঁকছেন মণে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা বেশি। আজ বৃহস্পতিবার পুঠিয়ার বড় ধাঁধাস গ্রাম থেকে ক্ষীরশাপাতি আম নিয়ে বানেশ্বর বাজারে এসেছেন চাষি শাজাহান আলী। তিনি এই আমের দাম হাঁকছেন ২ হাজার ৮০০ টাকা মণ। দাম শুনেই একজন ব্যাপারী চলে যাচ্ছেন দেখে তিনি দাম কমিয়ে ২ হাজার ৬০০ টাকায় নামালেন। দুই দিন আগে ক্ষীরশাপাতি আমের দাম ছিল ২ হাজার টাকার নিচে।

শাজাহান আলী আম্রপালিও এনেছেন। তিনি এই আমের দাম চাইছেন ২ হাজার ৪০০ টাকা মণ। দীঘলকান্দি গ্রাম থেকে ল্যাংড়া নিয়ে এসেছেন মাইনুল ইসলাম। গত দুই হাট আগে ল্যাংড়া আম বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা মণ। তিনি চেয়ে বসলেন ২ হাজার ৪০০ টাকা মণ।

রাজশাহীতে ক্ষীরশাপাতি আমের উৎপাদন বেশি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাজশাহী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী জেলায় এ মৌসুমে ক্ষীরশাপাতি চাষ হয়েছে ২ হাজার ৭৬৫ হেক্টর জমিতে। একই রকম চাহিদার আম ল্যাংড়া চাষ হয়েছে ১ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে। আম্রপালি চাষ হয়েছে ১ হাজার ৩৪১ হেক্টর জমিতে, বারি-৪ হয়েছে ১৭৪ হেক্টর, ব্যানানা ম্যাঙ্গো ১২ হেক্টর, গৌড়মতী ২৫ হেক্টর, রানিপসন্দ ৫০ হেক্টর ও কাটিমন ৯১ হেক্টর জমিতে।

আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার আর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ক্ষীরশাপাতি আম বাজারে শেষ হয়ে আসবে। রাজশাহীতে এই আমের উৎপাদন বেশি বলে এখনো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। ল্যাংড়া আম ক্ষীরশাপাতির চেয়ে কম উৎপাদিত হয়। ইতিমধ্যে গরমের কারণে আগেভাগেই বাজারে এসে গেছে ল্যাংড়া আম। এতে চাহিদার শীর্ষে থাকা আমগুলোর বাজার অল্প দিনেই শেষ হয়ে যাবে।

আমচাষিরা বলছেন, বৃষ্টি, ঈদের ছুটি ও ব্যাংক টানা ১০ দিন বন্ধ থাকার কারণে তাঁরা এবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের আমচাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, এই বৃষ্টির কারণে তাঁরা আম নামাতে পারছেন না। গাছ থেকে পাকা আম ঝরে পড়ে যাচ্ছে। তাঁরা চরম বিপাকে পড়েছেন। এখন হয়তো বানেশ্বর বাজারে আমের দাম একটু বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে রাজশাহীতে এখনো চাষিরা আমের দাম পাচ্ছেন না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম র দ ম ব যবস য়

এছাড়াও পড়ুন:

শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি

শরতের বিশেষ আয়োজনে পড়ুন ৭ কবির শরৎ বন্দনা

[কবিতা পড়তে কবি-নামের ওপর ক্লিক করুন]

• শিহাব সরকার

• আলফ্রেড খোকন

• শিবলী মোকতাদির

• পিয়াস মজিদ

• মালিহা জেরিন

• মেহেরুবা নিশা

• রিক্তা রিচি

সম্পর্কিত নিবন্ধ