ভারতের গুজরাটে এক আসামিকে ধরতে গেলে তিনি পাঁচতলা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন। সম্প্রতি রাজ্যের আহমেদাবাদের এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের অভিযানের সময় এক আসামি একটি ভবনের পাঁচতলার কার্নিশে দাঁড়িয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছেন।

ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, ‘শুটার’ নামে পরিচিত অভিষেক ওরফে সঞ্জয় সিং একটি ভবনের পাঁচতলায় কিনারায় দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে হামলা, দাঙ্গা ও অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। পুলিশের অপরাধ শাখার একটি দল তাঁকে বাসার ভেতরে আসার অনুরোধ করছিল।

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিষেককে গ্রেপ্তার করতে গত ৭ জুন পুলিশ ওই ভবনের একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি ভেতর থেকে দরজা আটকে দেন। রান্নাঘরের বারান্দা দিয়ে তিনি ভবনের কার্নিশে অবস্থান নেন।

পুলিশ বাসার দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকার পর অভিষেক নিজেই পুরো ঘটনার লাইভ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখাতে শুরু করেন। সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি হুমকি দিতে থাকেন, পুলিশ তাঁকে ধরার চেষ্টা করলে তিনি নিচে লাফ দেবেন।

পুলিশ তখন বাসার ভেতর থেকেই অভিষেককে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তিনি কার্নিশে দাঁড়িয়ে সেই মুহূর্তের ভিডিও করছিলেন।

ভিডিওতে শোনা যায়, অভিষেক এক পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্দেশ করে বলছেন, ‘আমি জানি, আমার কী হতে যাচ্ছে।’

তখন পুলিশ কর্মকর্তা উত্তর দেন, ‘কিছুই হবে না।’

এ সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আপনি ভিডিও করছেন, তাই না? আমরা কী করব বলুন? আমাদের ইউনিফর্ম কি ভালো লাগে না?’

তবু অভিষেক বারবার বলেন, ‘আমার জন্য খুব খারাপ কিছু হবে, আমি জানি।’

আসামি অভিষেক আরও অভিযোগ করেন, একজন কর্মকর্তা নাকি তাঁকে নখ তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।

অভিষেক বলেন, ‘আমার তো মরে যাওয়াই ভালো।’

প্রায় তিন ঘণ্টা বোঝানোর পর, পুলিশ ‘যথাযথ শক্তি প্রয়োগ করে’ অভিষেককে আটক করে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ভবন র

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে

একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।

এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।

আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।

সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ