ফরিদপুরে হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদের বাড়িতে স্থানীয় বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীর চড়াও হওয়ার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় হা-মীম গ্রুপের ল্যান্ড কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাফিজুল খান ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় এজাহার জমা দেন।

এতে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফাসহ ১৬ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয়ের অন্তত ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন– জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শাহরিয়ার হোসেন, কোতোয়ালি থানা বিএনপির সাবেক সম্পাদক নাজমুল হাসান চৌধুরী, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম, মহানগর ছাত্রদলের সহসভাপতি ক্যাপ্টেন সোহাগ প্রমুখ।

থানার ডিউটি অফিসার আহাদউজ্জামান জানান, ওসি বাইরে আছেন। আসার পর তাঁকে বিষয়টি জানানো হবে।

এজাহারে রাফিজুল খান বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলীর অফিস কাম বাড়িতে আমি কর্মরত ছিলাম। প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার সোলাইমান হোসেন, সিকিউরিটি গার্ড মেহেদী হাসান, কেয়ারটেকার জালাল শেখ, পরিচ্ছন্নতাকর্মী আব্দুল হান্নান, গৃহপরিচারিকা মাজেদা বেগম, সিসিটিভি অপারেটর  সেলিম হোসেন ও সহকারী শাওন শেখ আমার সঙ্গে ছিলেন।

এজাহারে বলা হয়, একদল উগ্র সন্ত্রাসী হঠাৎ বাড়ির সিকিউরিটি গার্ড মেহেদী হাসানকে খুন-জখমের হুমকি দিয়ে এ.

কে. আজাদের বাড়িতে ঢুকে ত্রাস সৃষ্টি ও গালাগাল করতে থাকে। কক্ষ থেকে তিনি (রাফিজুল) উঠানে আসামাত্র গোলাম মোস্তফা হুমকি দেন– ‘তোর স্যার এ. কে. আজাদ যেন ফরিদপুর না আসেন। আসলে হত্যা করে লাশ পদ্মা নদীতে ভাসিয়ে দেব। তাঁর বাড়িঘর, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যা আছে, সব ভস্ম করে দেব’। জনমনে ত্রাস সৃষ্টি করে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

বিএনপি নেতা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘বাড়িটিতে আওয়ামী লীগের গোপন সভা হচ্ছে– তথ্য পেয়ে আমরা গিয়েছিলাম। আমরা কেউ কোনো হুমকি-ধমকি দিইনি। একটি ঢিলও ছোড়া হয়নি। যিনি  থানায় অভিযোগ করেছেন, তাকেই তা প্রমাণ করতে হবে।’

পুলিশ সুপার এম এ জলিল জানান, অভিযোগ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে এ. কে. আজাদের বাড়িতে স্থানীয় বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীর চড়াওসহ নানা জায়গায় ‘মব’ সৃষ্টি করে হত্যা-নিপীড়নের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল এবং জোট। পৃথক বিবৃতিতে এসব দল ও সংগঠনের নেতারা অবিলম্বে এসব বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ, জড়িতদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানান।

বিবৃতিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, যে যুক্তিতে এ. কে. আজাদের বাড়িতে বিএনপির নেতাকর্মীরা চড়াও হয়েছেন, তা উদ্ভট ও হাস্যকর। তাঁর বাড়িতে ‘আওয়ামী লীগের গোপন মিটিং’– এর ধুয়া তুলে চড়াও হওয়া সন্ত্রাসী তৎপরতা ছাড়া আর কিছু নয়।

তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনে একই অভিযোগ তুলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীর বাড়িতে হামলা করত। বিএনপির নেতাকর্মীদের পুলিশি ভূমিকায় আবির্ভূত হওয়ার কোনো অবকাশ নেই। অভিযুক্তদের দলীয় পরিচয় বিবেচনায় না নিয়ে গ্রেপ্তার, কঠোর ব্যবস্থা ও আইনানুগ বিচারের দাবি জানান সাইফুল হক।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, শুধু মব নয়, কোনো কোনো দল ও নেতার বক্তব্য-বিবৃতিতে মুক্তিযুদ্ধকে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান দিয়ে প্রতিস্থাপনের কথা বলা হচ্ছে, যা দেশকে বিভক্তির দিকে ঠেলে দেবে।

বিবৃতিতে সই করেছেন সিপিবি সভাপতি শাহ আলম, বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ন ত কর ম র আজ দ র ব ব এনপ র ব যবস আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ। 

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির। 

আরো পড়ুন:

শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪

ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন

পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান,  অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।

গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়। 

তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।

পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”

নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ