দেশের ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদের দেওয়া একটি বক্তব্যের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী। তিনি বলেছেন, কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি ন্যক্কারজনক ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ দেশের হাজারো কওমি ও আলিয়া মাদ্রাসাগুলোর বিরুদ্ধে ‘বলাৎকারের’ অভিযোগ এনে মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থায় কালিমা লেপনের অপচেষ্টা করেছেন।

মুহিউদ্দীন রাব্বানী বলেন, ‘উপদেষ্টার এই বক্তব্য কেবল অযৌক্তিকই নয়, বরং ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলেই আমরা মনে করি।’

মাওলানা রাব্বানী বলেন, এ দেশের মাদ্রাসাগুলো মহান আল্লাহ তায়ালার ভয় ও রাসুলুল্লাহ (সা.

)-এর সুন্নাহ মোতাবেক চরিত্র গঠনের মহান লক্ষ্যে নিবেদিত। এসব প্রতিষ্ঠানে লাখ লাখ ছাত্র জীবনের মূল্যবান সময় ব্যয় করে ইলম ও আমলের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। বিচ্ছিন্ন কোনো দুঃখজনক ঘটনা থাকলেও তা দেশের পুরো ধর্মীয় শিক্ষাব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করার অজুহাত হতে পারে না। এটি চরম অন্যায় এবং ঘৃণিত মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ।

বিবৃতিতে মুহিউদ্দিন রাব্বানী বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করছি, শারমীন এস মুরশিদের এই বক্তব্যের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় ঢাকায় স্থাপন ও সমকামী দূত নিয়োগের মতো জাতীয়ভাবে অগ্রহণযোগ্য ও বিতর্কিত ইস্যু থেকে জনগণের দৃষ্টি সরাতে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে এ বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। এটি শুধু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়, বরং বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও দেশপ্রেমিক ঐক্যের বিরুদ্ধেও একটি গভীর ষড়যন্ত্র।’

বিবৃতিতে মুহিউদ্দিন রাব্বানী উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদকে এ বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান। এ ছাড়া ভবিষ্যতে কোনো সরকারি দায়িত্বশীল ব্যক্তি যেন ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পর্কে এমন দায়িত্বহীন, অসত্য ও উসকানিমূলক মন্তব্য না করেন, সে বিষয়ে কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ নিশ্চিত করা এবং ধর্মীয় শিক্ষার সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সংবিধানসম্মত সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

কারিগরি শিক্ষার্থীদের অবরোধের ঘোষণা সহিংস আন্দোলনের উসকানি: সংবাদ সম্মেলনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা

কারিগরি শিক্ষার্থীদের গাজীপুরে রেলপথ অবরোধের ঘোষণাকে ‘সহিংস আন্দোলনের উসকানি ও গভীর ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলছেন, আলোচনার টেবিল ছেড়ে অবরোধ কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। ‘প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন’ ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বুয়েট শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আলোচনায় বসে। দাবির যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারা প্রকৌশলী ও ডিপ্লোমাধারী—উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে ডাকে। সবার যুক্তিতর্ক সমানভাবে উপস্থাপনের সুযোগ করে দেয়, যাতে কারও প্রতি কোনোরূপ বৈষম্য না হয়।

লিখিত বক্তব্যে বুয়েট শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আলোচনার টেবিলে সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আজ গাজীপুরে রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে কারিগরি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। ডিপ্লোমাধারীদের পক্ষ থেকে যে প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরাই অবরোধ ডেকে সহিংস আন্দোলনের জন্য ক্রমাগত উসকানি দিয়ে যাচ্ছেন।

আলোচনার টেবিল ছেড়ে কেন জনদুর্ভোগ করে অবরোধের উসকানি দেওয়া হচ্ছে—এমন প্রশ্ন রাখেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।

আলোচনার টেবিল ছেড়ে অবরোধ কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না বলে উল্লেখ করা হয় লিখিত বক্তব্যে। এতে বলা হয়, এগুলো শুধুই বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারা ও গভীর ষড়যন্ত্র, যা প্রথাগত আন্দোলনকে ভিন্ন পথে নিয়ে যাচ্ছে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আলোচনার টেবিল ছেড়ে যাঁরা অবরোধ করে দেশে নৈরাজ্য তৈরির উসকানি দিচ্ছেন, তাঁদের আসল উদ্দেশ্য ও এজেন্ডা খতিয়ে দেখা দরকার।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য গায়ের জোর খাটিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অবরোধের প্রয়োজন নেই। যৌক্তিক দাবি জানালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে তা আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘স্বৈরাচারের পতন হলেও ষড়যন্ত্রের অবসান হয়নি’
  • কারিগরি শিক্ষার্থীদের অবরোধের ঘোষণা সহিংস আন্দোলনের উসকানি: সংবাদ সম্মেলনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা