বাংলাদেশ-পাকিস্তানের আসন্ন টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য টিকিটের মূল্য ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়োজিত সিরিজের টিকিট মিলবে অনলাইনে এবং স্টেডিয়ামের নির্ধারিত বুথে।

বিসিবির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রতিটি নিবন্ধিত অ্যাকাউন্ট থেকে সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কেনা যাবে। অনলাইনে বিক্রি না হওয়া টিকিট বিক্রি করা হবে স্টেডিয়ামের বাইরের বুথে। কোন কোন বুথে পাওয়া যাবে, সেটা বিসিবির ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে জানানো হবে বলে জানিয়েছে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

টিকিট কেনা যাবে এই সাইট থেকে। আগামী ১৫ জুলাই থেকে টিকিট পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন বিসিবি পরিচালক মাহবুব আনাম। দর্শকরা টিকিট প্রিন্ট করে আনার পাশাপাশি মোবাইলে দেখিয়েও ঢুকতে পারবেন বলেও জানিয়েছেন বিসিবির এই পরিচালক।

সর্বোচ্চ ৩৫০০ টাকা ও সর্বনিম্ন ৩০০ টাকায় মাঠে বসে খেলা দেখতে পারবেন ক্রিকেট সমর্থকরা। ইস্টার্ন গ্যালারির টিকিট পাওয়া যাবে ৩০০ টাকায়। শহীদ আবু সাঈদ স্ট্যান্ড এবং নর্দার্ন গ্যালারির টিকিটের দাম ৪০০ করে। ক্লাব হাউজের টিকিটের দাম ধরা হয়েছে ৮০০ টাকা। সর্বোচ্চ সাড়ে তিন হাজার টাকা দাম ইন্টারন্যাশনাল লাউঞ্জের টিকিট। এছাড়া গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের টিকিট পাওয়া যাবে আড়াই হাজার এবং ইন্টারন্যাশনাল গ্যালারির টিকিট মিলবে দেড় হাজার টাকায়। এদিকে, জুলাই আন্দোলনের সম্মানে ব্লক ৩৬ এর ১০০টি টিকিট জুলাই আন্দোলনে শহীদ এবং আহতদের ফান্ডে দেবে বিসিবি।

তবে আগের সিরিজের টিকিটের দামের তুলনায় এবার কিছুটা বেড়েছে। ২০২৪ সালের এপ্রিলে জিম্বাবুয়ের সাথে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সর্বনিম্ন ২০০ ও সর্বোচ্চ ১৫০০ টাকায় খেলা দেখতে পেরেছিলেন দর্শকরা।

আগামী ২০, ২২ ও ২৪ জুলাই সিরিজের তিনটি ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরফান হোসেন (২১) বিজিবির সিপাহি পদে চাকরি পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় আরফান হোসেনের বাবা মো. নুরুল ইসলামও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর

কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি 

এর আগে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৫ বিজিবি আয়োজিত সিপাহি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন আরফান হোসেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ‘‘বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। ফেলানীর ছোট ভাই বিজিবি নিয়োগ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। আমরা আশা করি, প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি একজন যোগ্য বিজিবি সদস্য হিসেবে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘সীমান্তে ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সীমান্তে অত্যন্ত সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।’’

আরফান হোসেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনটারী গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা নুর ইসলাম দিনমজুর ও মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। পরিবারের অন্য দুই ভাইয়ের মধ্যে জাহান উদ্দিন স্নাতক পড়ছেন এবং আক্কাস আলী পড়ছেন এইচএসসিতে। দুই বোন মালেকা খাতুন ও কাজলী আক্তারের বিয়ে হয়েছে।

আরফান হোসেন বলেন, ‘‘ফেলানী হত্যার পর সারা দেশের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকে ইচ্ছে ছিল; বিজিবিতে চাকরি করব। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।’’

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘‘ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে, দেশবাসী আর বিজিবি সব সময় আমাদের পাশে ছিল। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেয়েছে। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।’’

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। তার নিথর দেহ কাঁটাতারের বেড়ায় দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা ঝুলে ছিল। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে নিন্দার ঝড় উঠে।

ঢাকা/সৈকত/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ