নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নারী নিহতের ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পরও মামলা হয়নি। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত নিহত নারীর স্বজন বা পরিবারের সদস্যরা মামলা করতে থানায় আসেননি বলে জানিয়েছেন রায়পুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রবীর কুমার ঘোষ।

এর আগে গতকাল সোমবার ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের সায়েদাবাদ গ্রামে এই পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এক নারী নিহত, পাঁচজন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে আরও ২০ জন আহত হন। এ ছাড়া বাড়িঘরে গুলিবর্ষণ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

নিহত নারীর নাম মোমেনা বেগম (৪৫)। তিনি রায়পুরার শ্রীনগর ইউনিয়নের সায়েদাবাদ গ্রামের আকতার মিয়ার স্ত্রী। নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সন্ধ্যায় তাঁর লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এদিকে নারী নিহতের ঘটনায় গতকাল সোমবার দিনভর ওই এলাকায় অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, ডিবি ও পুলিশ। এ সময় সোহেল মিয়া নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাঁর কাছ থেকে ৫টি বন্দুক ও ৩৫টি গুলি উদ্ধার করা হয়। সম্প্রতি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে দলবলসহ হামলা চালিয়ে তাঁর চাচাতো ভাইয়ের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শান্তা ইসলামকে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি সোহেল। তাঁকে অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ দুপুরে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

রায়পুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রবীর কুমার ঘোষ বলেন, ‘পাল্টাপাল্টি হামলায় নারী নিহতের ঘটনায় এ পর্যন্ত কেউ মামলা করতে থানায় আসেননি। স্বজনদের মামলা করার জন্য বলেছি আমরা। তাঁরা জানিয়েছেন, থানায় আসবেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা আছে, এলাকার পরিস্থিতিও স্বাভাবিক।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা

অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।

ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।

সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।

স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
  • গ্রেপ্তারের পর পরিবারকে জানাতে ১২ ঘণ্টা কেন লাগবে
  • শাহজালাল বিমানবন্দরে একজন যাত্রীর সঙ্গে দুজনের বেশি প্রবেশ নিষিদ্ধ