হাতিয়ায় ট্রলারসহ ১১ জনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ
Published: 24th, July 2025 GMT
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ঠেঙ্গারচরের কাছে মেঘনা নদীতে একটি মাছ ধরার ট্রলারসহ ১১ জেলেকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। তাদেরকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ট্রলার মালিকের ছোট ভাই।
গত মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে মালিক ও জেলেসহ ওই ট্রলারটি দখলে নেয় ডাকাতরা৷ তবে, ট্রলার মালিকের স্বজনদের কাছে সংবাদ পৌঁছায় গতকাল বুধবার রাতে। পরে মৎস্য ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বিষয়টি নৌ পুলিশকে জানানো হয়। নৌ পুলিশ বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত মেঘনার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েও অপহৃত জেলেদের উদ্ধার করতে পারেনি।
অপহরণের শিকার ট্রলারের মালিক নূর সোলেমানের ছোট ভাই মো.
মো. হানিফ মাঝি অভিযোগ করেন, ডাকাতরা তার ভাইসহ ১১ জনকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে ট্রলার ও জালসহ অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে। সেখান থেকে বুধবার হাতিয়ার টাংকির ঘাটের একজন আড়ৎদারকে ফোন করে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। এর পর ফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়। বুধবার সারা দিন অপেক্ষা করেও তার ভাইয়ের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। অপহৃতরা কোথায় আছেন, তা এখনো জানা যায়নি।
হাতিয়ার নলচিরা নৌ পুলিশের ইনচার্জ পরিদর্শক আশীষ চন্দ্র সাহা জানিয়েছেন, এক মৎস্য ব্যবসায়ীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার থেকে নৌ পুলিশের একাধিক দল বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু, এখন পর্যন্ত খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। জেলেদের উদ্ধারে সাগরে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।
ঢাকা/সুজন/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘কারফিউ ভেঙে নারীদের সমাবেশের স্মরণে শাহবাগে সমাবেশ, ৩ দফা দাবি
‘কারফিউ ভেঙে নারীদের সমাবেশ’–এর এক বছর পূর্তিতে প্রগতিশীল নারী সংগঠন, স্বতন্ত্র অধিকারকর্মী এবং নারী শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আজ সোমবার বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে স্মরণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখান থেকে তিন দফা দাবি জানানো হয়। সমাবেশের প্রতিপাদ্য ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রাম চলবেই।
গত বছরের ২৭ জুলাই কারফিউ ভেঙে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার নারীরা পল্টন মোড়ে ‘হামার বেটাক মারলু ক্যানে’ শীর্ষক একটি সমাবেশ করেছিলেন।
সমাবেশে নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনামলের অবসান ঘটলেও এখনো ফ্যাসিবাদী কাঠামোর অবসান হয়নি। বরং দিন দিন নব্য ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটছে। যেখানে পাহাড়–সমতলের একের পর এক নারী নিপীড়ন, ধর্ষণ ও মব সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছে। অন্যদিকে নিপীড়ককে আশ্রয় ও দায়মুক্তি দিচ্ছে রাষ্ট্র।
তথ্য আপা রাজস্বকরণ আন্দোলনের প্রতিনিধি রোমানা ইসলাম বলেন, তথ্য আপারা দুই মাস ধরে প্রেসক্লাবে তাঁদের চাকরি রাজস্বকরণের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করছেন, বসে আছেন। অথচ তাঁদের চাকরি নিশ্চিত করা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো দৃষ্টি নেই। তাঁদের ৭ বছর কর্মজীবনে বেতন থেকে কেটে নেওয়া ২০ কোটি টাকাও ফেরত দেওয়া হচ্ছে না।
হিল উইমেনস ফেডারেশনের সদস্য রুপসী চাকমা বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের পর কল্পনা চাকমার অপহরণ মামলার সুষ্ঠু বিচার হবে, তাই ভেবেছিল বাংলাদেশের নারী সমাজ। কিন্তু চিহ্নিত অপহরণকারী লেফটেন্যান্ট ফেরদৌস নিরাপদে ঘুরে বেড়ালেও কল্পনা চাকমার যে মামলাটি আওয়ামী সরকার খারিজ করেছে, তা একইভাবে বলবৎ আছে এবং মামলা পুনরায় শুরুর জন্য শুনানির তারিখ বারবার পেছাচ্ছে।
বম স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি লালরিথাং বম অভিযোগ করেন, আওয়ামী সরকার বম জাতির ওপর ‘কালেক্টিভ পানিশমেন্ট’–এর নামে যত্রতত্র থেকে নিরীহ বমদের আটক শুরু করেছিল। আজও কারাগারে বমরা আটকে আছে। তিনজন বম ব্যক্তিকে কারাগারে অত্যাচারের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে হত্যা করা হয়েছে।
আজ সমাবেশ থেকে তিন দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো, দুই মাস ধরে আন্দোলনরত তথ্য আপাদের চাকরি রাজস্বভুক্ত করতে হবে; নিম্ন আদালতে কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলা খারিজের আদেশ বাতিল করে পুনঃ তদন্ত ও চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌস গংদের বিচারের আওতায় আনা এবং পাহাড় ও সমতলে নারী ধর্ষণ, নিপীড়ন এবং মব সন্ত্রাসের বিচার করতে হবে এবং কারাগারে আটক সব বমকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
সমাবেশে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য মারজিয়া প্রভার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন শহীদ শেখ ফাহমিন জাফরের মা কাজী লুলু মাখামিন শিল্পী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক অর্ণি আনজুম প্রমুখ।
পাশাপাশি সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন অ্যাকটিভিস্ট ও কবি ফেরদৌস আরা রুমী, আইনজীবী সাদিয়া আরমান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সদস্য জাকিয়া শিশির, অ্যাকটিভিস্ট প্রাপ্তি তাপসী, চিকিৎসক সুরাইয়া ইয়াসমিনসহ আরও অনেকে।
সমাবেশে সূচনা ও সমাপনী সংগীত পরিবেশন করে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।