ইস্টার্ন ব্যাংকের উদ্যোগে ‘নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন সামিট ২০২৫’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইস্টার্ন ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার আয়োজিত এই সামিটের মূল লক্ষ্য ছিল যোগ্য নারী উদ্যোক্তাদের চিহ্নিত করে তাদের অর্থায়নসহ অন্যান্য সহযোগিতা প্রদানের জন্য একটি কৌশলগত রোডম্যাপ প্রণয়ন।

সামিটে ইবিএল তাদের নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রোগ্রামের দ্বিতীয় ধাপ অদ্বিতার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। তিন মাসের এই কার্যক্রমের মাধ্যমে অনলাইন ও অফলাইনের নারী উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য তাদের ব্যবসায়িক দলিলপত্র তৈরি ও সংরক্ষণ, ই-কমার্স দক্ষতা বৃদ্ধি, পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং দেশি-বিদেশি বাজারে প্রবেশাধিকারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।

ইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী রেজা ইফতেখার বলেন, ‘আমাদের প্রতিশ্রুতি শুধু কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। নারী উদ্যোক্তাদের প্রকৃত চাহিদা—অর্থ প্রাপ্তির সুযোগ, প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি এবং কৌশলগত সহায়তা প্রদান আমাদের এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য। নারীদের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্যোক্তা পরিবেশ তৈরিতে অবদান রাখতে পেরে আমরা আনন্দিত।’

অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সিড ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট রুবিনা হুসাইন। উপস্থিত ছিলেন সিড ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মো.

মোস্তাফিজুর রহমান, ইবিএল অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওসমান এরশাদ ফয়েজ, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এম খোরশেদ আনোয়ার, হেড অব লায়াবিলিটি অ্যান্ড ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট শারমিন আতিক, হেড অব প্রায়োরিটি অ্যান্ড উইমেন ব্যাংকিং তানজেরী হক প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

ইরান যে তিন কারণে পারমাণবিক অস্ত্র বানাবে না

বিশ্বরাজনীতিতে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি একটি বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত ইস্যু। পশ্চিমা শক্তিগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল, বহু বছর ধরে অভিযোগ করে আসছে, ইরান নাকি গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চাইছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) বা যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আজ পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি, যা এ দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করে। অন্যদিকে ইরান শুরু থেকেই বলে আসছে যে তাদের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত।

প্রশ্ন হলো, যদি ইরান সত্যিই পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চাইত, তাহলে গত দুই দশকে তা তৈরি করেনি কেন? আর যদি তা না-ই চায়, তাহলে উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাচ্ছে কেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে হলে ইরানের ধর্মীয় অবস্থান, কৌশলগত চিন্তা, রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির দ্বিচারিতা একত্রে বিশ্লেষণ করতে হবে।

আরও পড়ুনইরান এবার বড় যুদ্ধের জন্য যেভাবে প্রস্তুত হবে০৬ জুলাই ২০২৫ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা ও নৈতিক অবস্থান

২০০৩ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি একটি ঐতিহাসিক ফতোয়া জারি করেন। সেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়, ‘পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি, মজুত কিংবা ব্যবহার ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম।’ এ সিদ্ধান্ত শুধুই ধর্মীয় নয়, বরং একটি নৈতিক অবস্থানও, যেখানে নিরীহ মানুষ হত্যাকে ইসলাম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। পারমাণবিক বোমা শুধু সামরিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করে না, বরং শহর, জনপদ ও লাখ লাখ নিরীহ মানুষের প্রাণ হরণ করে। ইসলামের যুদ্ধনীতিতে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

ইরান মনে করে, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার শুধু মানবতার বিরুদ্ধে নয়, পরিবেশ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিরুদ্ধে চরম অন্যায়। হিরোশিমা-নাগাসাকির দৃষ্টান্ত এ বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ দেয়।

কৌশলগত ও সামরিক বাস্তবতা

অনেকের ধারণা, পারমাণবিক অস্ত্র থাকলেই একটি দেশ নিরাপদ থাকে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। পাকিস্তান ১৯৯৮ সালে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলেও ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযানে অংশ নিতে বাধ্য হয়। উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্রধারী হওয়া সত্ত্বেও আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে। এমনকি রাশিয়া, যাদের বিশ্বের সর্বোচ্চ পারমাণবিক অস্ত্র মজুত রয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটোর সঙ্গে কৌশলগতভাবে চাপে পড়েছে। ইসরায়েলও অঘোষিত পারমাণবিক অস্ত্রধারী হওয়া সত্ত্বেও ইরানের ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ’-এ বড় ধরনের সামরিক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে।

এ বাস্তবতা ইরানকে বুঝিয়ে দিয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র নয়, কার্যকর প্রতিরোধক্ষমতা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। তাই তারা শক্তিশালী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, চালকবিহীন বিমান বা ড্রোন এবং কৌশলগত অস্ত্র নির্মাণে জোর দিয়েছে।

সামরিক মহড়া চলাকালে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের অজ্ঞাত স্থান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ১৯ জানুয়ারি ছবিটি প্রকাশ করে ইরান

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরান যে তিন কারণে পারমাণবিক অস্ত্র বানাবে না