পিয়াস মজিদ
রুদ্ধ
আমার ঘুম পাতলা
স্বপ্ন ঢুকতে না ঢুকতেই
ভেঙে যায় কচি নিদ্রা,
১০০ বছর হয়
কাফকার লাশের,
মনের বন থেকে
পাতা ঝরে
আয়তন বাড়ে
মেমোরির মাঠে,
চা-পাতা দিয়ে রাখি;
তবু এত সব
দৃশ্যখোর নিশ্বাসের
পচা গন্ধ মৌ মৌ
আরও ০১টা ভোর
২৯ জুলাই ২০২৪
রিশি কাব্য
মাথার মধ্যে দেশ,
বুকের মধ্যে প্রেমিকা
এই শহরে পাখিদের ঘুম ভাঙে গুলির শব্দে
এই শহরে ছাত্র পড়ে থাকে মগজভর্তি বারুদের গন্ধে
মস্তিষ্ক ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে শকুনের গুলি
রক্তের দাবানলে ভেসে যাচ্ছে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা
ফ্যাসিস্ট কারা? স্বৈরাচার কে?
শকুনের ভয়ে থাকে ঘরে কে?
মায়ের বুকের আর্তনাদ—
হামার বেটাকে মারলু কেন?
তৃষ্ণার্ত কালো র্যাব,
পানি লাগবে আর কারও?
শহর যখন নির্ঘুম মুগ্ধ, প্রিয়, সাঈদের রক্তে,
তখন বেওয়ারিশ লাশেদের দ্বন্দ্বে কোথাও কেউ নেই।
কাঁটাতার ফেলে আসা খাকি হায়েনার শব্দবোমায়
ঢেকে যাচ্ছে মুক্তির স্লোগান
টিয়ারশেলের ধোঁয়ায় নিখোঁজ হচ্ছে লাশ
প্লেনের শব্দের পিছু নিয়ে মাইল পাড়ি দেওয়া থেকে
হেলিকপ্টারের শব্দে আতঙ্ক লাগার সময়ে আজ
এই শহরে পাখিদের ঘুম ভাঙে গুলির শব্দে
এই শহর নেশায় বুঁদ বারুদের গন্ধে।
২৯ জুলাই ২০২৪
কাজী ওয়ালী উল্লাহ
মার্চ টু ঢাকা
এই অন্ধকারে যারা বের হয়ে পড়ছে
তাদের জামার ভেতর আজ লুকানো আলো
দীর্ঘ সফরের পর যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, নবীনগর, আমিনবাজারের
মোড়গুলোতে দাঁড়িয়ে
তারা কাপড় ঝাড়া দিবে
আর ঢাকায় সকাল হবে
এখনো যে মুহররম হয় নাই শেষ
এখনো যে জুলাই চলমান
এই তো তাদের মর্যাদা
তাদের অন্তরে প্রকাশ হয়ে আছে কারবালার গোপন বিজয়
তাদের হাতের বাঁশগুলো তিতুমীরের দুর্গ থেকে খুলে আনা
ঢাকার বুকে যে দুধ জমা হয়ে আছে
কাল তারা তা শিশুর মতো পান করবে
আর ঢাকাকে স্বাদ দিবে নতুন মাতৃত্বের
৪ আগস্ট ২০২৪
অলংকরণ: আরাফাত করিম
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই শহর
এছাড়াও পড়ুন:
সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের (সাদপন্থী) ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। পাশাপাশি তাঁরা সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে আগামী বছরের মার্চ মাসে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা করার কথাও বলেছেন। গত আয়োজনে ইজতেমা মাঠে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সাজা নিশ্চিতের দাবিও জানান তাঁরা।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। ‘হযরত ওলামায়ে কেরাম ও দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীবৃন্দের’ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
এর আগে গত রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তাবলিগের শুরায়ে নেজামের সাথী মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘কোরআন ও হাদিসের কথা যারা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে, তাদের ইসলামি দাওয়াতের এই ময়দানে জায়গা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রাসুল (সা.)-এর তরিকা, সুন্নাহ ও হাদিসের অনুসরণে যারা তাবলিগি কার্যক্রম পরিচালনা করে, কেবল তারাই ইজতেমা করার অধিকার রাখে।’
মুফতি আমানুল হক আরও বলেন, ‘সরকারের ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সাদপন্থীরা শেষবারের মতো টঙ্গী ময়দানে ইজতেমা করার অনুমতি পেয়েছিল। সেই প্রজ্ঞাপনে তাদের স্বাক্ষরও রয়েছে। সরকার তখনই বুঝেছিল—একই মাঠে দুই পক্ষের ইজতেমা আয়োজন দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’
২০২৪ সালের ডিসেম্বরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘গত বছরের ১৮ ডিসেম্বরের রাতে সাদপন্থীদের অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের বাংলাদেশি নেতা ওয়াসিফ সাহেবের চিঠিতে উল্লেখ ছিল, “যুগটা ব্যতিক্রমী, সবাই প্রস্তুতি নিয়ে আসবে”—এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই তারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ঘুমন্ত মুসল্লিদের ওপর টর্চলাইট নিয়ে হামলা চালানো হয়, যা একতরফা সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছিল।’ তিনি দাবি করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও প্রমাণিত হয়েছে, ‘এ হামলা একতরফাভাবে সাদপন্থীদের পক্ষ থেকেই হয়েছিল।’
মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী ও ইসলামবিরোধী মহলের প্ররোচনায় তাবলিগ জামাতে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীরা বেআইনি পথে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ ও কাকরাইল মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এমনকি তাঁরা সরকারকে বিব্রত করতে ‘যমুনা ভবন ঘেরাও’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিশৃঙ্খলাকারীদের কাকরাইল মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং শুরায়ে নেজামপন্থীদের কাকরাইলে দাওয়াত কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেয় বলে জানান মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারির ৬৩ নম্বর স্মারকে বলা হয়, সাদপন্থীরা শেষবারের মতো ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে টঙ্গীতে ইজতেমা করতে পারবে, এরপর আর নয়। তারা স্বাক্ষর দিয়ে সেই শর্ত মেনে নিয়েছিল।
শুরায়ে নেজামপন্থীরা বলেন, ‘আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করছি। আগামী বছরের মার্চে ইজতেমা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের কাছে ৪ দফা দাবি পেশ করেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। তাঁদের দাবিগুলো হলো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ইজতেমার তারিখ ঘোষণা, টঙ্গী ইজতেমা মাঠকে অস্থায়ীভাবে ‘কেপিআই’ হিসেবে ঘোষণা, বিদেশি মেহমানদের ভিসা সহজীকরণের পরিপত্র নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ ও গত বছরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মতিন উদ্দিন আনোয়ার, রুহুল আমিন এবং তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ে নেজাম) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।