বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) তথা উত্তরাঞ্চলের প্রতি হওয়া বাজেট বৈষম্যের অবসানসহ দুই দফা দাবিতে রংপুরের মর্ডান মোড়ে সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটক থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার মর্ডান মোড়ে গিয়ে শেষ হয় এবং সেখানে ঘণ্টাব্যাপী ব্লকেট কর্মসূচি পালন করে তারা। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও এই কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রতি বছর বাজেটে রংপুরসহ উত্তরাঞ্চল অবহেলিতই থেকে যাচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন থেকে শুরু করে শহীদ আবু সাঈদের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সবখানেই বাজেট বৈষম্য প্রকট। এবারের বাজেটেও এই চিত্রের ব্যতিক্রম হয়নি। তাই এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া হিসেবে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন তারা।

আরো পড়ুন:

ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার পাবিপ্রবি শিক্ষককে বহিষ্কার

চবি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

আন্দোলনের সমন্বয়কারী শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, “আমরা ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে দাবির বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আমরা আবু সাঈদের সহপাঠীরা উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার মর্ডার্ন ব্লকেড, অসহযোগ আন্দোলনসহ আরো কঠোর কর্মসূচি  ঘোষণা করব।”

তিনি বলেন, “৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের ক্লাস বর্জন কর্মসূচি চলবে।”

এ সময় অন্যদের মাঝে আরো বক্তব্য দেন, বেরোবির শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান আশিক, রহমত আলী, শামসুর রহমান সুমন প্রমুখ।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- উত্তরবঙ্গের বাজেট বৈষম্য নিরসন ও সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে একটি স্বতন্ত্র আঞ্চলিক কমিশন গঠন; বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসিত একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে হবে।

এদিকে, উত্তরবঙ্গের ছাদ জেলার প্রবেশদ্বার মর্ডান মোড় ব্লকের কর্মসূচির ফলে মহাসড়কের দু'ধারে দূরপাল্লার বাসসহ বিভিন্ন পরিবহনের তীব্র যান সৃষ্টি হয় ভোগান্তিতে পরে মানুষ। তবে দুপুর ১২টা থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধ কর্মসূচি জনসাধারণের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে দুপুর দেড়টার দিকে প্রত্যাহার করে নেন আন্দোলনকারীরা।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার মো.

নজির হোসেন জানান, শিক্ষার্থীরা মর্ডান মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করেছে। তবে জনদুর্ভোগ বিবেচনায় ১ ঘণ্টার মধ্যেই তারা আন্দোলনটি শেষ করেছে। এ আন্দোলনকে ঘিরে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মহানগর পুলিশ সর্বদা সচেষ্ট ছিল।

ঢাকা/আমিরুল/সাজ্জাদ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবর ধ ব গম র ক য অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিকোলাস মাদুরোর দিন ফুরিয়ে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর বিবিসির। 

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ করতে যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিবিএস নিউজের ৬০ মিনিটসকে বলেন, “আমার সন্দেহ রয়েছে। আমার মনে হয় না। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করছে।”

আরো পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে নৌযানগুলোতে মার্কিন হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যে ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য এই হামলা প্রয়োজনীয়।

ট্রাম্প এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান মাদক বন্ধ করার লক্ষ্যে নয়, বরং ট্রাম্প বিরোধী মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি ‘অনেক কিছু’ সম্পর্কে।

বিবিসির মার্কিন নিউজ পার্টনার সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন হামলায় কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছে।

সম্প্রতি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন হামলায় আপনি যেসব নৌযানে বিস্ফোরণ হতে দেখেন, তার প্রতিটিতে অন্তত ২৫ হাজার মাদকদ্রব্য ধ্বংস হয়। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সরবরাহের জন্য দায়ী।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থলপথে ভেনেজুয়েলায় হামলার পরিকল্পনা করছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প তা উড়িয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, “আমি এটা বলতে চাই না যে আমি এটা করব...আমি ভেনেজুয়েলার সাথে কী করব, আমি তা করব কিনা, তা আমি বলব না।”

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করার অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোর অভিযোগ, নৌযানগুলোতে হামলা চালানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ‘আধিপত্য বিস্তার’ করার চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প জানান, তার সরকার ‘সারা বিশ্ব থেকে’ সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে ‘আসতে’ দেবে না।

তিনি বলেন, “তারা কঙ্গো থেকে আসে, তারা সারা বিশ্ব থেকে আসে, তারা আসছে, কেবল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নয়। তবে বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা- খারাপ। তাদের গ্যাং আছে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট করে ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরাগুয়ার’ নাম উল্লেখ করেন। তিনি এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ গ্যাং’ হিসেবে অভিহিত করেন।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার পর থেকে, ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো এবং ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি মাদক পাচারকারী সংগঠন ও অপরাধী গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেনেজুয়েলার ট্রেন দে আরাগুয়া এবং কার্টেল অব দ্য সানস, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা পরিচালনা করে। তবে কারাকাস সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ