ফেসবুকে নানা কর্মকাণ্ডের জন্য আলোচিত–সমালোচিত ফারাজ করিম চৌধুরী ও তাঁর ছোট ভাই ফারহান করিম চৌধুরীর বাড়ির দরজায় এক সপ্তাহ ধরে ঝুলছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নোটিশ।

গত বুধবার দুদক প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক নাজমুল হাসানের সই করা নোটিশ চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামের বাড়ির দরজায় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি সোমবার জানাজানি হয়।

ফারাজ ও ফারহান সাবেক সংসদ সদস্য এ বিএম ফজলে করিম চৌধুরীর ছেলে। ফজলে করিম গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আটক রয়েছেন। তাঁর দুই ছেলে পলাতক। দুজনের বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানে হামলার অভিযোগে মামলা রয়েছে।

দুদক জানায়, ফারাজ ও ফারহানের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান করছে দুদক। ইতিমধ্যে দুদক বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে। সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য দুজনকে চিঠি দেওয়া হলেও তাঁরা সম্পদ বিবরণী দুদকে জমা দেননি।

দুদকের দেওয়া পৃথক দুই নোটিশে বলা হয়েছে, ২১ কর্মদিবসের মধ্যে নির্ধারিত ফরমে তাঁদের ও তাঁদের ওপর নির্ভরশীলদের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, দায়দেনা ও আয়ের উৎসের হিসাব জমা দিতে হবে। ব্যর্থ হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দুদকের অনুসন্ধানে ফারাজ ও ফারহানের নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে বলে দাবি দুদকের। এ বিষয়ে দুদকের পরিচালক মোহাম্মদ নাজমুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বাড়িতে কাউকে না পাওয়ায় তা দরজায় সাঁটানো হয়েছে।’

ফারাজ করিম একসময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে সরব ছিলেন। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থান ঘিরে অবস্থানের জন্য সমালোচনার মুখে পড়েন। এর পর থেকে ফারাজ করিম জনসমক্ষে আসেননি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ র জ কর ম ফ রহ ন

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন

তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের। 

দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত। 

আরো পড়ুন:

রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন

টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়

প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।

তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।

গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে। 

সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। 

ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে। 

২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ