চীনে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এতে ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশটির রাজধানী বেইজিংসহ পুরো উত্তরাঞ্চল। চলমান বন্যায় বেইজিংয়ে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন। ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসির।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের উত্তরাঞ্চলে কয়েকদিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত এবং বন্যা পরিস্থিতি চলছে। বেইজিংয়ে প্রায় ১৩০টি গ্রাম বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং কয়েক ডজন রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। উদ্ধারকারী দল হেলিকপ্টার ব্যবহার করে লোকজনকে বের করে আনছে।

আরো পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টি-জোয়ারে সড়ক বিচ্ছিন্ন, মানুষের দুর্ভোগ

চীনে ভারী বৃষ্টিপাতে ৪ জনের মৃত্যু, ১১টি প্রদেশে বন্যার সতর্কতা জারি

চীনের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে, আগামী দুই দিন ধরে উত্তর চীনে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ১১টি প্রদেশ ও অঞ্চলে জরুরি সতর্কতা জারি করেছে। এর মধ্যে শানসি ও হুবেই প্রদেশের বন্যা পরিস্থিতিও ভয়াবহ।  

চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, বেইজিং সর্বোচ্চ স্তরের জরুরি সতর্কতা (রেড অ্যালার্ট) জারি করেছে।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সর্বাত্মক অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রচেষ্টা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। আর যেন প্রাণহানি না ঘটে সেজন্য সতর্ক থাকার কথা বলেছেন।

চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশন জরুরি ভিত্তিতে ৫০ মিলিয়ন ইউয়ান বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছে। এই তহবিল উত্তর চীনের দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট, সেতু, পানি সংরক্ষণ বাঁধ, স্কুল ও হাসপাতাল মেরামতের জন্য ব্যবহার করা হবে।

চীনের উত্তরাঞ্চল মুষলধারে বৃষ্টিপাতের কবলে পড়লেও, দেশটির মধ্য ও পূর্বাঞ্চলে তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মধ্য ও পূর্বাঞ্চলে আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সেখানকার জনগণকে তাপদাহের বিরুদ্ধে সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়েছে।

চীনের জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় চলতি মাসের শুরুতে জানায়, বছরের প্রথমার্ধে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চীনের ৫৪.

১১ বিলিয়ন ইউয়ান (৭.৫ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতি হয়েছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বন্যা ৯০ শতাংশেরও বেশি ক্ষতির জন্য দায়ী।

চলতি সপ্তাহের বন্যার আগে, দেশটিতে এ বছরে প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

বিরূপ আবহাওয়া চীনের বাসিন্দা ও দেশের অর্থনীতিকে ক্রমবর্ধমানভাবে হুমকির মুখে ফেলছে, বিশেষ করে চীনের ট্রিলিয়ন ডলারের কৃষি খাতকে।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সতর ক

এছাড়াও পড়ুন:

বিসিএলে বিদেশি দল, এনসিএলে বিদেশি ক্রিকেটার

দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান নিয়ে প্রশ্ন আজকের নয়। জাতীয় ক্রিকেট লিগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ যে মানের হয়, যেভাবে আয়োজন হয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে হরহামেশা। অতীতে সমালোচনার পর কিছুটা মান বেড়েছে। কিন্তু তারপরও ‘আপ টু মার্ক’ হয়নি।

বিশেষ করে ঘরোয়া ক্রিকেটে দিব‌্যি পারফর্ম করা ক্রিকেটাররা যখন জাতীয় দলে এসে ধুকতে থাকেন তখন তারতম‌্য প্রকটভাবে ফুটে উঠে। এজন‌্য ঘরোয়া ক্রিকেটের মান বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। জাতীয় ক্রিকেট লিগে বিদেশি ক্রিকেটারকে নিয়ে আসতে চায় বিসিবি। এছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে যুক্ত করতে চায় বিদেশি দল।

বিসিবির পরিচালক ও টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম‌্যান আকরাম খান রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

তিন সপ্তাহের জন্য আসছেন উড, মনোবিদ স্কট

সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার বেলায়েত হোসেন মারা গেছেন

বিসিএল শুরু থেকে ছিল ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক প্রতিযোগিতা। ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন, প্রাইম ব‌্যাংক সাউথ জোন, ইসলামী ব‌্যাংক ইষ্ট জোন ও বিসিবি নর্থ জোন নামে চারটি দল শুরুর কয়েক বছর বিসিএলে অংশ নিয়েছে। পেশাদারিত্বের ঘাটতি, পরিকল্পনার অভাব এবং বাণিজ‌্যিকভাবে লাভবান না হওয়ায় তিনটি ফ্রাঞ্চাইজি ধীরে ধীরে সরে যায়। পরবর্তীতে বিসিবি চারটি দলই নিজস্ব খরচে পরিচালনা করে বিসিএল চালু রাখে। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বীতার অভাব বোঝা যায়।

এজন‌্য বিসিবি সামনের আসরে বিদেশ থেকে একটি দল নিয়ে আসতে চায়। শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে। বিসিএল যেই সময়ে আয়োজন করতে চাচ্ছে সেই সময়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে ব‌্যস্ত থাকবেন। আফগানিস্তানকে চূড়ান্ত করার পথে হাঁটছে। বিসিবির পুরো খরচেই অতিথি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। বাকি তিনটি দল গঠন করবে বিসিবি।

আকরাম খান বলেছেন, ‘‘আমরা প্রথমবারের মতো বিসিএলে একটি বিদেশি দলকে পেতে যাচ্ছি। হয়তো তারা এ দল হিসেবে আসবে। নয়তো অন‌্য কোনো নামে। এক মাস এই টুর্নামেন্ট চলবে। ফেব্রুয়ারিতে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।’’

এদিকে জাতীয় ক্রিকেট লিগে বিদেশি ক্রিকেটার অন্তর্ভূক্ত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় তারা যুক্ত হবেন, কিভাবে আসবেন, পারিশ্রমিক কত হতে পারে সেসব নিয়ে এখনও কোনো উপায় খুঁজতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। তবে ভালোমানের বিদেশি খোঁজার প্রক্রিয়া চলছে।

তাদের পারিশ্রমিক চূড়ান্ত করা, পুরো আসরে অ‌্যাভেইলেভেল থাকবেন কিনা সেসব নিয়েও কাজ হচ্ছে। এজন‌্য আগেভাগে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান না আকরাম।

আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত দুই স্তরে জাতীয় ক্রিকেট লিগের খেলা অনুষ্ঠিত হবে। আট দলে একজন করে বিদেশি ক্রিকেটার রাখার ইচ্ছা বিসিবির। অতীতে বিদেশি ক্রিকেটার জাতীয় ক্রিকেট লিগে অংশ নিয়েছে। ইমরান ফরহাদ, আমির ওয়াসিমরা খেলেছেন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রথম শ্রেণির এই টুর্মামেন্টে।

মূলত প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি এবং মান বাড়াতে এই উদ‌্যোগ নিতে যাচ্ছে আয়োজকরা। যদিও একজন করে বিদেশি ক্রিকেটার খেলানোর নিয়ম প্লেয়িং কন্ডিশনে সব সময়ই ছিল, ছিল সর্বশেষ মৌসুমেও। বিভাগীয় দলগুলো আগ্রহ না থাকায় বিসিবিও জোর দেয়নি। তবে এবার বিসিবি বিদেশি ক্রিকেটারকে যুক্ত করবে। পাশাপাশি তাদের পারিশ্রমিক ও সুযোগ সুবিধার বিষয়টিও দেখভাল করবে।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ