নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিএনপির কার্যালয়ের ভাড়া চাওয়ায় দোকান মালিক জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া (৫৮) কে পিটিয়ে হত্যা করেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের সালমদী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনায় মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোতা মেম্বারসহ ১২ জন জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের ছেলে। অভিযুক্তরা বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমনের অনুসারী।

নিহত জাহাঙ্গীর হোসেন ওই এলাকার তালেব আলীর ছেলে। তিনি পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি ছিলেন। সালমদী বাজারে তার মুদি দোকান রয়েছে।  

নিহতের ছেলে রাসেল জানান, ৫ আগস্টের পর বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহমুদুর রহমান সুমনের অনুসারি মামুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোতা মেম্বার সালমদী বাজারে তার বাবার কাছ থেকে বছরে ৩০ হাজার টাকা ভাড়ায় ৩টি দোকান ভাড়া নেন।

এর একটি দোকানে বিএনপির কার্যালয় স্থাপন করেন। বাকি ২টি দোকানের ভাড়া পরিশোধ করলেও যে দোকানটিতে বিএনপির কার্যালয় করেছেন সেটির ভাড়া পরিশোধ করছিলেন না।

বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন ভাড়া চাইতে বিএনপি কার্যালয়ে তোতা মেম্বারের কাছে যান। ভাড়া চাইলে তোতা মেম্বার টালবাহানা শুরু করে। ঐ সময় উভয়ের মধ্যে বাগবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে তোতা মেম্বার জাহাঙ্গীরকে চড় দেয়। 

এখবর পেয়ে তোতা মেম্বারের ছেলে খোকন, রাসেল, ভাতিজা সাদ্দাম, আলমসহ আরও কয়েকজন তার বাবাকে বিএনপি কার্যালয়েব ভেতরেই এলোপাতাড়ি মারধর করে। গুরুতর আহতবস্থায় জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাতে মৃত ঘোষণা করেন। 

ঘটনার পর থেকে বিএনপি নেতা তোতা মেম্বার ও তার অনুসারিরা আত্মগোপনে চলে যান।

আড়াইহাজার থানার ওসি নাসির উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঐ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। নিহতের পরিবার থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: হত য ব এনপ ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের এআই প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার সুযোগ নিতে হবে

বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষায় এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) প্রযুক্তির বহুমাত্রিক ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান। এআইয়ের সর্বোত্তম ব্যবহারকে গুরুত্ব দিয়ে এআই–নির্ভর শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ তৈরিরও পরামর্শ দিচ্ছে তারা। আর তাই গবেষণা খাতে এআই ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরার পাশাপাশি এআইয়ের কারণে কী কী সংকট হতে পারে, তা তুলে ধরতে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের প্রয়াস ইনস্টিটিউট অব স্পেশাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (পাইজার) মিলনায়তনে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘এআই ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার নতুন সুযোগ’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) প্রয়াস ইনস্টিটিউট অব স্পেশাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (পাইজার)। সেমিনারে ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটিসহ বিভিন্ন এআই টুল বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণায় কীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা সেমিনারে অংশ নেন।

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের এমফিল গবেষক জাহিদ হোসাইন খান এআই ও গবেষণার নানান পরিপ্রেক্ষিত সম্পর্কিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘২০২০ সাল থেকেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বৈশ্বিক গবেষণা ও নতুন জ্ঞান অন্বেষণে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আর তাই বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের এআই প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া উচিত। এআই প্রযুক্তি দ্রুতগতিতে উন্নত হচ্ছে, ফলে অনেক বিশেষজ্ঞ নতুন ডিজিটাল বৈষম্য তৈরির আশঙ্কা করছেন। আমাদের দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এআই প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার সুযোগ নিতে হবে। এ জন্য এআই প্রযুক্তির ভালো ও মন্দ দিকগুলো নিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’

পাইজারের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নুর উল্লাহ বলেন, ‘পশ্চিমা দুনিয়ায় গবেষণার ব্যাপক বিস্তৃতি দেখা যায়। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের সামনে এআই নতুন সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। এআইকে ব্যবহার করে গবেষণার অসাধারণ সুযোগ তৈরি হচ্ছে, সেই বিষয়টিকে তুলে ধরতে আমরা এই সেমিনার আয়োজন করেছি। স্বাস্থ্য বা জনস্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের গবেষণায় আগ্রহী করে তুলতে কাজ করছি।’

পাইজারের অডিওলজি অ্যান্ড স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথলজি বিভাগের প্রধান ফাতিমা আলম বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন নতুন বাস্তবতা। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার জন্য এখন এআই ও এআই–নির্ভর প্রযুক্তির ব্যবহার সারা বিশ্বেই বাড়ছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের সামনে এআইকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড় করানো যাবে না। এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন নতুন গবেষণার সুযোগ তৈরি করতে হবে। বিশ্বের বড় বড় গবেষণাগার বর্তমানে এআই ব্যবহার করছে। আর তাই শিক্ষার্থী ও গবেষকদের পাশাপাশি শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এআই প্রযুক্তিমুখী হওয়া প্রয়োজন।
বর্তমানে চ্যাটজিপিটিসহ বিভিন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা ব্যবহার করছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ