দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা ট্রাম্পের, শুল্ক কমে ১৫ শতাংশ
Published: 31st, July 2025 GMT
দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামীকাল ১ আগস্ট কয়েক ডজন দেশের ওপর ট্রাম্পের আরোপ করা বাড়তি শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগেই দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে এ চুক্তির বিষয়টি জানানো হলো।
নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, একটি ‘সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ’ বাণিজ্য চুক্তির আওতায় দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক বলবৎ থাকবে। তবে মার্কিন রপ্তানি পণ্যে কোনো শুল্ক থাকবে না।
ট্রাম্প আরও জানান, দক্ষিণ কোরিয়া ৩৫ হাজার কোটি বা ৩৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এসব বিনিয়োগে যুক্তরাষ্ট্রের ‘মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ’ থাকবে। সেই সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া ১০ হাজার কোটি বা ১০০ বিলিয়ন ডলারের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ও অন্যান্য জ্বালানি পণ্য কিনবে।
এ ছাড়া পূর্ব এশিয়ার দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে নিজস্ব বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে ‘বড় অঙ্কের’ অর্থ লগ্নি করতে রাজি হয়েছে বলে জানান ট্রাম্প। অর্থাৎ দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রে কোনো প্রকল্প বা খাতে সরাসরি বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে, যার মূল লক্ষ্য হবে তাদের নিজেদের অর্থনৈতিক লাভ ও স্বার্থ নিশ্চিত করা। যদিও এ বিনিয়োগের পরিমাণ জানানো হয়নি। আগামী ‘দুই সপ্তাহের মধ্যে’ হোয়াইট হাউসে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ংয়ের সফর করার কথা রয়েছে। তখন এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের হঠাৎ সামরিক আইন জারির জেরে দক্ষিণ কোরিয়ায় কয়েক মাস রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা যায়। অস্থিরতা কাটিয়ে গত জুনে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন লি জে-মিয়ং। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে আরেকটি অনিশ্চয়তায় পড়তে হয় দেশটিকে।
আরও পড়ুনদক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানসহ বেশ কিছু দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প০৭ জুলাই ২০২৫এখন বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ং বলেছেন, এটা সব ধরনের ‘অনিশ্চয়তা দূর করবে’ এবং এটা নিশ্চিত করবে যে দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিযোগীদের তুলনায় সমান অথবা কম পরিমাণে শুল্ক দেবে।
১ আগস্টের আগে বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানো না গেলে দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন ট্রাম্প। এ ছাড়া দেশটির ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, যানবাহন ও পরিবহন যন্ত্রাংশের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের কথা ছিল।
আরও পড়ুনট্রাম্পের শুল্কের লক্ষ্য এশীয় দেশগুলো, কে জিতছে১৪ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনট্রাম্পের নতুন পাল্টা শুল্ক, নড়েচড়ে বসেছে সব দেশ০৯ জুলাই ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।