ত্রাণ নিতে গিয়ে চোখে গুলি খেল ফিলিস্তিনি শিশুটি
Published: 4th, August 2025 GMT
আবদুল রহমান আবু জাজারের বয়স ১৫ বছর। ক্ষুধায় কাতর পরিবারের সদস্যদের জন্য খাবারের সন্ধানে বেরিয়েছিল শিশুটি। কিন্তু কপাল মন্দ। চোখে গুলি খেয়ে ফিরতে হয়েছে জাজারকে। ঘটনাটি ঘটেছে ফিলিস্তিনের গাজা নগরীতে। জাজারের বাঁ চোখে গুলি করেছেন ইসরায়েলি সেনারা।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত জিএইচএফ ত্রাণকেন্দ্রে গিয়ে চোখে গুলিবিদ্ধ জাজারের চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, নির্বিচার বোমা হামলার শিকার অবরুদ্ধ গাজার বাসিন্দারা অনাহারে রয়েছেন।
আরও পড়ুননিরস্ত্রীকরণে সম্মতির খবর নাকচ: হামাস বলল, দখলদারির মোকাবিলা জাতীয় ও আইনি অধিকার০৩ আগস্ট ২০২৫বাঁ চোখে সাদা রঙের ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা জাজার আল-জাজিরাকে জানায়, একবার গুলি লাগার পরও ইসরায়েলি সেনারা তাঁকে লক্ষ্য করে অনবরত গুলি ছুড়তে থাকেন। তখন জাজারের মনে হয়েছিল, ‘এই বুঝি শেষ। মৃত্যু সন্নিকটে।’
দিবাগত রাত প্রায় দুইটার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল বলে জানায় জাজার। সে বলে, ‘এবার প্রথম আমি ত্রাণ সরবরাহকেন্দ্রে গিয়েছিলাম। আমার ও ভাইবোনদের খাওয়ার মতো কিছু ছিল না। আমরা খাওয়ার জন্য কিছুই পাইনি। তাই সেখানে গিয়েছিলাম।’
অনেক ভিড়ের মধ্যে গাজা নগরীর আল-মুনতাজাহ পার্কের ওই কেন্দ্রে পৌঁছাতে জাজারের প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সময় লেগেছিল। জাজার বলে, ‘আমরা দৌড়াচ্ছিলাম। ঠিক তখন ওরা (ইসরায়েলি সেনারা) গুলি করা শুরু করে। আমি আরও তিনজনের সঙ্গে ছিলাম। তিনজন আহত হই।’
আরও পড়ুনসিডনির হারবার ব্রিজে ফিলিস্তিনের পক্ষে ইতিহাসের বৃহত্তম মিছিল, অংশ নেন বাংলাদেশিরাও১৫ ঘণ্টা আগেজাজার আরও বলে, ‘গুলি চালানোর পরপরই শরীরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার মতো কিছু অনুভব করলাম। এরপর আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি, জ্ঞান হারাই। জ্ঞান ফেরার পর আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞেস করেছি, আমি কোথায়?’
তখন আশপাশের লোকজন জাজারকে জানান, সে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। জাজার আরও বলে, ‘ওরা অনবরত গুলি ছুড়ছিল। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। দোয়া পড়ছিলাম।’
জাজারের চোখে অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছে। তবে প্রত্যাশার কথা জানিয়ে শিশুটি বলে, ‘আশা করি, আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসবে।’
আরও পড়ুনখেলাধুলায় ‘চ্যাম্পিয়ন’ ফিলিস্তিনি কিশোরকে মরতে হলো খাবারের অভাবে১৮ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'
সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'
আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।
থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।
জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।
অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন। আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।
মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।